আজ খবর ডেস্ক:
পুলিশি জেরায় উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। আপাতত সেসব যাচাই করছেন তদন্তকারী অফিসাররা। তাঁদের বক্তব্য প্রীতি (Priti Jana) ও তাঁর মায়ের (Rima Jana) বক্তব্য সত্যি হলে, মাত্র ২১ বছর বয়সী অয়নের (Ayan Mondal) আচরণ ছিল চমকে দেওয়ার মত।
প্রেমিকা ও তাঁর মায়ের সঙ্গে শারীরিক ঘনিষ্ঠতার ছবি ও ভিডিও মোবাইল বন্দি করতেন অয়ন। তা দেখিয়ে ব্ল্যাকমেলও করতেন দু’জনকে। যাতে তাঁরা শারীরিক সম্পর্কে আপত্তি না করতে পারে।
দশমীর রাতে অয়নের সঙ্গে প্রীতি এবং তাঁর মা বচসায় জড়িয়ে পড়ে। পরিণতি, অয়নের মৃত্যু। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অয়নের মোবাইলে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের কোনও ছবি বা ভিডিও রয়েছে কিনা, তার খোঁজ চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় মেয়ের প্রেমিকের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে কোনও কথাই বলছে না কিশোরীর মা। তবে অয়নের ছবি, ভিডিও মোবাইল বন্দি করা মোটেও পছন্দ ছিল না কিশোরী ও তাঁর মায়ের।
মনে করা হচ্ছে, সেই বিষয়ে আলোচনার জন্য দশমীর রাতে কিশোরী ফোন করে অয়নকে বাড়িতে ডেকে পাঠায়। কিন্তু বাড়িতে পৌঁছে অয়ন দেখে কিশোরী নয়, তাঁর মা অপেক্ষা করছে অয়নের জন্য। শুরু হয় ঝগড়াঝাটি। আর সেই ঝগড়াঝাটির মাঝেই খুন হয় অয়ন।
পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, পরিকল্পনা করেই খুন করা হয়েছে অয়নকে। পুলিশ সূত্রে খবর, দশমীর দিন একাই বাড়িতে ছিল অয়নের বান্ধবীর মা। সেই সময় ওই ‘আপত্তিজনক’ ছবি ও ভিডিও নিয়ে বচসা শুরু হয়।
এই বচসার মাঝেই বাড়িতে আসে অয়নের বান্ধবী, বাবা ও ভাই। তারপরই অয়নকে ওই বাড়ির দোতলার একটি ঘরে খুন করা হয়। তারপর নিপুণ হাতে রক্তের শেষবিন্দুটুকুও মুছে ফেলা হয়, যাতে কোনও ছাপ থেকে না যায়।
ইতিমধ্যেই বান্ধবী ও তার মায়ের সঙ্গে অয়নের সম্পর্কের বিষয়টি সামনে এসেছে। অয়নের বন্ধুবান্ধব থেকে বান্ধবীর বন্ধুরা—সকলেই প্রায় বলছেন বান্ধবী এবং তার মায়ের সঙ্গে অয়নের সম্পর্ক ছিল। রুমার স্বামী, ছেলেও জানত বিষয়টি।
খুনের পর অয়নের দেহ লোপাটের পরিকল্পনা করে বান্ধবীর বাবা। পুলিশের দাবি, ‘দুই বন্ধুকে ডেকে পাশের নির্মীয়মাণ বহুতল থেকে ত্রিপল দিয়ে মোড়া হয় দেহ। তারপর মিনিডোরে করে হরিদেবপুর (Haridevpur Murder) থেকে মগরাহাটে (Magrahat) নিয়ে যাওয়া হয় মৃতদেহ। মৃতদেহ লোপাটের আগে অয়নের মোবাইল সুইচড অফ করে ফেলে দেওয়া হয় বিষ্ণুপুরের নেপালগঞ্জে জলাশয়ে।
পুলিশের অনুমান এই খুনের পেছনে ছিল ত্রিকোণ সম্পর্কের সমীকরণ। এবং পরিকল্পনা মাফিক অয়নকে খুন করা হয়, তারপর তার দেহ লোপাট করা হয়। যে গাড়িটি করে দেহ লোপাটের কাজ করা হয়, সেই গাড়ির চালক পুলিশকে জানিয়েছে যে, বাড়ি পরিবর্তন করা হবে বলে কিছু জিনিস তার গাড়িতে তোলা হয়। তার মধ্যে ত্রিপল মোড়া একটা জিনিস ওঠানো হয়। এবং তা নিয়ে গিয়ে ফেলে দেওয়া হয় মগরাহাটে।
সবমিলিয়ে এখন ও পর্যন্ত মোট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তবে পুলিশের অনুমান, গোটা পরিকল্পনার “মাস্টারমাইন্ড” ওই কিশোরীর মা।