আজ খবর ডেস্ক:
তিনি কালীঘাট মিলন সঙ্ঘের (Kalighat Milan Sangha) দুর্গাপুজোর (Durga Puja 2022) অন্যতম উদ্যোক্তা। তার থেকেও বড় কথা, তিনি কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় (Kartick Banerjee), ওরফে বিবেক বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ছোট ভাই।
সেই কার্তিক এবার বিস্ফোরক অভিযোগ আনলেন মুখ্যমন্ত্রীর “পুজো অনুদান” নিয়ে। যা ঘিরে এই উৎসব অবহেও রীতিমত সরগরম রাজ্য রাজনীতি।

কার্তিকের অভিযোগ, রাজ্যে পুজোর নামে আসলে নেতা – মন্ত্রী ও কর্পোরেটদের আঁতাত চলে। সম্প্রতি “বিবেক ভাষা” নামে একটি পত্রিকার শারদীয়া সংখ্যায় তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে লিখেছেন, “এভাবে চলতে থাকলে অনেক ছোট পুজো বন্ধ হয়ে যাবে।”
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কর্পোরেট যেমন শুধুমাত্র মন্ত্রীদের পুজোয় অনুদান দিচ্ছে তেমনই তাঁর দলের সরকারও তো পুরস্কার দিচ্ছে শুধুমাত্র সেই পুজোগুলিকেই।


মুখ্যমন্ত্রীর ভাই ‘সার্বজনীন দুর্গোৎসবের ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে লিখেছেন, “ক্ষমতাশালী কিছু লোক যদি সবই কুক্ষিগত করে রাখে, তাহলে সর্বজনীন দুর্গাপুজোর কি হবে? এর প্রতিবাদ হওয়া উচিত। কিছু নেতা বা কিছু শক্তিশালী মানুষ, পুরোটাই নিজেদের মধ্যে কুক্ষিগত করে রাখছে। সবাইকে বলব, আপনারা সজাগ হোন, নয়তো সর্বক্ষেত্রে সর্বগ্রাসী ভূমিকা নেবে এরা।”

নাম না করলেও রাজ্যের প্রায় সকলেই জানেন, ঠিক কোন কোন পুজোর কথা বলতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর ভাই। বস্তুত এই পুজো গুলোর অধিকাংশই দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন তৃণমূল নেতা মন্ত্রী বিধায়কদের পুজো। এর মধ্যে দু-একটি ব্যতিক্রম, যেগুলো অন্য এলাকার পুজো যেমন শ্রীভূমি স্পোর্টিং, টালা প্রত্যয় অথবা খিদিরপুর ২৫ পল্লী। প্রত্যেক বছর এই পুজোগুলোর উদ্বোধন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই।


কার্তিকের অভিযোগ, “যে কর্পোরেট সংস্থাগুলি টাকা দেয়, তারা ওই ১৫-২০টি পুজো বা কোন মন্ত্রী নেতা বা শক্তিশালী লোকজনদের বারবার দিচ্ছে। প্রতি বছর তারা সব টাকাটাই সাইফন করে তুলে নিচ্ছে। ফলে ছোট ছোট ক্লাবগুলো বঞ্চিত হচ্ছে”।
এই প্রতিবেদন নিয়ে সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, “রাজ্যে প্রায় ৪৫ হাজার পুজো হয়। কয়েক বছর আগেও এটা উৎসবের চেহারা পেত। কিন্তু এখন খরচের ভারে পাড়ার পুজোগুলো ছোট হয়ে যাচ্ছে। নেতা – মন্ত্রীদের ১৫ – ১৬টি পুজোয় সব আটকে আছে। তারাই কর্পোরেটদের সমস্ত টাকা পাচ্ছে।”

কার্তিকবাবুর বক্তব্য প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে বিজেপির (BJP) রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “উনি নিজে ৫০টা কমিটি আর অ্যাসোসিয়েশনের মাথায় বসে রয়েছেন। হকি স্টিক কোনও দিন চোখে দেখেছেন কি না সন্দেহ, অথচ হকি অ্যাসোসিয়েশনের মাথাতেও উনি। উনি আবার ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার কথা কী বলছেন? পুরোটাই লুটেপুটে খাওয়ার বন্দোবস্তো।”


প্রায় একই রকম বক্তব্য সিপিএম (CPIM) নেতাদেরও। বুকস্টলে জনসংযোগের ফাঁকে একাধিক বাম ছাত্র যুব নেতার বক্তব্য, কার্তিকের এই কথা অর্থহীন। কারণ, রাজ্যে পুজো দখলের চল শুরু হয়েছে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকেই। বাম জমানায় বিভিন্ন পুজোয় এলাকার নেতা – মন্ত্রীদের প্রভাব থাকলেও তৃণমূলের মন্ত্রীদের মত এই দাপট ছিল না। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কলকাতার অন্যতম বিখ্যাত পুজো সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যারে না কি এবার রাজ্য সরকারি পুজো পুরস্কারের বিচারকরা যাননি। কারণ, ওই পুজোর প্রধান উদ্যোক্তা বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *