আজ খবর ডেস্ক:
গতবছরও পুজোর সময় নাকতলার মণ্ডপে তিনি ছিলেন মূল আকর্ষণ। নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘের (Naktala Udayan Sangha) পুজোয় খুঁটিনাটি নির্দেশ দিতে ব্যস্ত ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। তখন তিনি রাজ্যের “প্রভাবশালী” মন্ত্রী।


প্রায় ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে এবার পুজোতে একেবারে অন্য রকম অভিজ্ঞতা হল পার্থর। এসএসসি দুর্নীতি কাণ্ডে (SSC Scam) গ্রেপ্তার হয়ে এখন তিনি জেলে, সিবিআই (CBI) হেফাজতে। তাই প্রেসিডেন্সি জেলে বসেই কাটছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এই বছরের পুজো। আবেদন করেও মেলেনি জামিন। এমনকী, তাঁর পুজো নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘ এবার কোনও পুরস্কারও পায়নি।

প্রেসিডেন্সি জেলের যে ওয়ার্ডে পার্থ রয়েছেন, তার ঠিক পিছনেই ক্লাবঘরে দুর্গাপুজো হচ্ছে। ষষ্ঠীতে সেখানে এসেই পুজো উদ্বোধন করে যান কারা কর্তারা। সেই অুষ্ঠানে থাকতে চেয়েছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী। তবে সেই আর্জি মানা হয়নি। কারণ হিসেবে জানা গিয়েছে, পার্থর উপর ক্ষুব্ধ সংশোধনাগারে অন্যান্য বন্দিরা। তাঁকে দেখলেই অন্য বন্দিরা কটূক্তি করেন।
এদিকে আদালতেরও নির্দেশ রয়েছে, পার্থকে তাঁর ওয়ার্ড থেকে বের করলে অন্য বন্দিদের লকআপে (Lock Up) ভরতে হবে। তাই পার্থকে পুজোর অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার অনুমতি দিতে পারেনি কারা কর্তৃপক্ষ।

অন্যদিকে, আলিপুর মহিলা সংশোধনাগারের পুজোকে ঘিরে বেশ উজ্জীবিত আরেক অভিযুক্ত, পার্থর বান্ধবী অপির্তা মুখোপাধ্যায় (Arpita Mukherjee)। গত বছরও নাকতলার পুজোয় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ছায়াসঙ্গী ছিলেন অর্পিতা।
জানা গিয়েছে, দিন তিনেক আগে এক আইনজীবী এবং এক আত্মীয় চারটি নতুন শাড়ি আর কিছু পোশাক দিয়ে গিয়েছেন অর্পিতাকে। ওই শাড়ি পরেই পুজোর আয়োজনে মেতেছেন অর্পিতা। ষষ্ঠীর দুপুরে নতুন শাড়ি পরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরে সহ-বন্দিদের সঙ্গে পুজোর আয়োজনে হাত লাগান তিনি।


সপ্তমীতেও নতুন শাড়ি পরে পুজোর আয়োজনে ছিলেন অর্পিতা। অষ্টমীতে নতুন শাড়ি পরে অঞ্জলী দিয়েছেন, পাত পেড়ে খাচ্ছেন রোজ। প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষ সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত খাসির মাংস থেকে পোলাও,কাতলা মাছ,দই মিষ্টি পায়েসের ব্যবস্থা রেখেছেন আবাসিকদের জন্য। জেলের মধ্যেই এক টুকরো গ্রাম বাংলা বানিয়েছেন বন্দীরা।

তবে মুড বেজায় খারাপ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। জেল সূত্রে খবর, কয়েকজন কয়েদির অনুরোধে ষষ্ঠীর সন্ধায় ঢাক বাজিয়েছেন তিনি। টানা প্রায় দশ মিনিট ঢাক বাজিয়েছেন পার্থ। এমনকী বেশ কিছুক্ষণ মণ্ডপেও ছিলেন তিনি। ঢাক বাজিয়ে, প্রতিমা প্রণাম সেরে সেলে চলে আসেন তিনি।
জানা গিয়েছে, ষষ্ঠীতে জেলে দুর্গাপুজোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তবে জেল-কর্তৃপক্ষ তাঁর সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। এদিকে সপ্তমীতেও হাজতে মন খারাপ করেই দিন কাটান পার্থ। জানা যায়, রোজ রাতে জলদি খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ছেন তিনি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *