আজ খবর ডেস্ক:
পুলিশের নির্দেশ মেনে শনিবার কার্নিভালের (Durga Puja Carnival) দিন অবস্থান বিক্ষোভে বসেননি আন্দোলনকারীরা। রেড রোডে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার জন্য শহরের বেশ কিছু রাস্তায় পুলিশের বিশেষ নিয়ন্ত্রণ ছিল। সেই কারণে মেয়ো রোডে অবস্থান বিক্ষোভ শনিবারের জন্য বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল ময়দান থানা। বিক্ষোভকারীদের একাংশ পুলিশের নির্দেশ মানতে রাজি হলেও আর এক অংশ হয়নি।


রবিবার, লক্ষ্মীপুজোর দিন আবারও ধর্ণায় বসেছিলেন চাকরিপ্রার্থীরা। মাঝে কেটে গিয়েছে দেড় বছরেরও বেশি সময়। ধর্মতলায় গান্ধী মূর্তির পাদদেশে ধর্ণা দিচ্ছেন অসংখ্য চাকরী প্রার্থী (SSC Protest)। তাঁদের দাবি, যতদিন না নিয়োগ পত্র হাতে পাবেন ততদিন এই মঞ্চ থেকে নড়বেন না তাঁরা।

এদিন কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোতে আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীরা সামিল হলেন এক অভিনব প্রতিবাদে। কোনও চাকরিপ্রার্থী মা লক্ষ্মী সেজে চাকরি (Job) ভিক্ষা করলেন। কোথাও সাদা পাতার ওপর পুজো হল। দুর্গাপুজোর অষ্টমীর দিন ধর্ণা মঞ্চে বসেই অঞ্জলি দিয়েছিলেন এই চাকরি প্রার্থীরা। লক্ষীপুজোর দিনও প্রায় একই ছবি দেখল কলকাতা।
দুর্গাপুজোও কেটেছে আন্দোলনে, লক্ষ্মীপুজোও কাটল একই মঞ্চে। মাতঙ্গিনী হাজারার মূর্তির নিচে চলতে থাকা অবস্থান আজ ৫৭৪ দিন পার করল।


প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে প্রাইমারি টেট (TET) উত্তীর্ণরা মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশে অবস্থান করছেন। এক আন্দোলনকারীকে সাজানো হয়েছিল লক্ষ্মী রূপে। তাঁর হাতে ছিল পদ্মফুল ও ধানের ছড়া। কারোর কারোর হাতে ধরা ছিল প্ল্যাকার্ড।
সঙ্গে আরও এক চাকরি প্রার্থী সাজলেন পুরোহিত। পিছনে পোস্টার হাতে বসে অন্যান্য চাকরিপ্রার্থীরা। যাতে লেখা, “এসো মা লক্ষ্মী বসো আমাদের ধর্ণামঞ্চে।”

বস্তুত, কলকাতার এই ছবি দিনভর রাজনৈতিক চর্চার কেন্দ্রে রইল। সকালে একাধিক বামপন্থী দলের নেতৃত্ব সেখানে গিয়েছিলেন। বিকেলে সস্ত্রীক ধর্ণা মঞ্চে দেখা মিলল অভিনেতা কৌশিক সেনের (Kaushik Sen)। সঙ্গে ছিলেন পুত্র রিদ্ধি সেন (Riddhi Sen) ও তাঁর বান্ধবী সুরঙ্গনা বন্দ্যোপাধ্যায়। চাকরিপ্রার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দেন তাঁরা। আন্দোলনকারীদের জন্য নিয়ে গিয়েছিলেন মিষ্টি।


এদিন ধর্ণা মঞ্চ থেকে কার্যত রাজ্য সরকারকে বিঁধলেন অভিনেতা। কেন নিয়োগ হচ্ছে না সেই প্রশ্নও তোলেন। বলেন, “আমরা পরিবারগতভাবেই ঠিক করেছিলাম গতকালের কার্নিভালে যোগদান করব না। আজকে এখানে আসব সেটা আগেই ঠিক করেছিলাম। আমাদের বক্তব্য রাজনীতি তার জায়গায় থাকুক। তৃণমূল কতটা দুর্নীতিগ্রস্ত, আগের জমানা ভাল ছিল না খারাপ ছিল, বিজেপি যে রাজ্যগুলিতে শাসন করে সেখানে দুর্নীতি আরও বেশি হয় কী না, আমার জানার দরকার নেই। আমার মতে, যাঁরা যোগ্য মানুষ তাঁরা যোগ্য নম্বর নিয়ে বসে আছে। তাঁরা নিয়োগটা পাক। তৃণমূলের সরকারে থাকা উচিত কী উচিত না এখন আমাদের তর্কটা সেদিকে চলে যাচ্ছে। এটা রাজনৈতিক দলগুলির ওপর ছেড়ে দিই। আমরা যাঁরা রাজনীতি করিনা তাঁরা বরং এদের দ্রুত নিয়োগের দাবি তুলি। সরকার যে যুক্তিগুলি দেখাচ্ছে সেগুলি ধোপে টিকছে না। সরকার চাইলে নিয়োগ করতে পারে। সেটার দাবিতেই আমরা এসেছি।”


এই প্রসঙ্গে ফেসবুকে (Facebook) একটি দীর্ঘ পোস্ট করেছেন কৌশিক পুত্র অভিনেতা ঋদ্ধি সেন ও।
“যতবার আমি নিজেকে দেখেছি , থেকেছি নিজের ঘোরে..
ততবার এক আঁচড় পড়েছে পাঁচশো চুয়াত্তরে…
মেখেছি আলো ,মাখিয়েছি পথে..”।

দুর্গাপুজোয় যখন কলকাতা-সহ গোটা রাজ্য আলো ঝলমলে হয়ে উঠেছিল, তখনও ধর্মতলায় গান্ধীমূর্তির (Gandhi Statue) এলাকা ছিল নিকষ কালো অন্ধকারে ঢাকা। চাকরির দাবিতে আন্দোলন শত চেষ্টাতেও থামাতে পারেনি সরকার। রবিবার লক্ষ্মীপুজোর (Laxmi Puja) দিনেও সেই আন্দোলনে ছেদ পড়ল না।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *