আজ খবর ডেস্ক:
বৃহস্পতিবারই উত্তরবঙ্গ সফর সেরে কলকাতায় ফিরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বলেছিলেন, “আমি আন্দোলনকারীদের ভালবাসি। আমি তো চাই কারও চাকরি যেন না যায়।”
তার কিছু পরেই টেট (Primary TET Protest) চাকরিপ্রার্থীদের ধর্না নিয়ে রায় দেয় কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। চিত্রনাট্য তৈরিই ছিল।
রাত বাড়তেই সেই মোতাবেক কাজে নামে বিধাননগর কমিশনারেট (Bidhannagar Commissionerate)।

৮৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলতে থাকা অনশনরত চাকরিপ্রার্থীদের ধর্নামঞ্চ ভাঙতে ঠিক ১৫ মিনিট সময় নেয় বিধাননগর পুলিশ। পুলিশেরই একাংশ রসিকতা করে নিজেদের মধ্যে যাকে বলছেন, “১৫ মিনিটের সার্জিকাল স্ট্রাইক”!


প্রশাসন থেকে তাঁদের ওপর এই বিক্ষোভ অবস্থান তোলার চাপ বাড়ছিল। আবার আম জনতার একাংশের সহানুভূতি ও মিলছিল বিক্ষোভকারীদের। তাই কোর্টের থেকে ১৪৪ ধারা বজায় রাখা এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার নির্দেশ মিলতেই মাঠে নামতে তৈরি হয় পুলিশ।
রাত তখন সাড়ে ১২টা। কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় করুণাময়ী চত্বর (Saltlake Karunamoyee)। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি বাধে চাকরিপ্রার্থীদের। তারপর তাঁদের ধর্নামঞ্চ থেকে সরিয়ে দেয় বিশাল পুলিশবাহিনী।
চলতি সপ্তাহের সোমবার থেকে লাগাতার ধর্নায় বসেছিলেন ২০১৪ টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীরা ৷ বৃহস্পতিবার রাতে সল্টলেকের এপিসি ভবনের সামনে থেকে তাঁদের চ্যাংদোলা করে সরাল প্রশাসন।

বস্তুত, বৃহস্পতিবার সন্ধে থেকেই থমথমে পরিস্থিতি যেন ছিল আগাম ঝড়ের ইঙ্গিত। ভেতরে ভেতরে ব্যবস্থা নিচ্ছিল করুণাময়ীর সামনে থাকা বিশাল পুলিশ বাহিনী। গভীর রাতে “অ্যাকশনে” নামে তারা।


অনুরোধ, হুঁশিয়ারির পর মধ্য রাতে পুলিশ আন্দোলনকারীদের একের পর এক বাসে এবং অ্যাম্বুল্যান্সে তুলতে থাকে পুলিশ। এক রাতেই ১০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। কেউ অজ্ঞান হয়ে যান আচমকা পুলিশি হানায়।
ঘটনাস্থলে ছিল RAF এবং পুলিশের বিশাল বাহিনী।
কারোর মাথায় চোট, কারোর নাকের হাড় ভেঙেছে। কেউ আবার কোমরে লাঠির বাড়ি খেয়েছেন। প্রায় সবাইকেই নিয়ে যাওয়া হয় বিধাননগর স্টেট জেনারেল হসপিটালে। ৩টি বাসে চাপিয়ে বাকিদের রাত ১টার পরে নিয়ে আসা হয় নিউটাউন থানায় (NewTown PS)।

ওই অবস্থাতেই গতকাল রাতে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে, আন্দোলনকারীদের তরফে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের (Chief Justice Prakash Srivastava) বেঞ্চে একটি পিটিশন দাখিল করে মামলা করার আর্জি জানান চাকরিপ্রার্থীরা। সেই মামলা করার অনুমতিও দিয়েছে আদালত। অমিত মজুমদার, শুভঙ্কর ঘোষ এবং শান্তনু দেবনাথ নামের তিন প্রার্থী মামলা করেছেন। আজ অর্থাৎ শুক্রবার ওই মামলার শুনানি হওয়ার কথা।


সূত্রের খবর, প্রশাসনের তরফে গোটা ঘটনার কৃতিত্ব দেওয়া হচ্ছে বিধাননগর সিটি পুলিশ কমিশনার গৌরব শর্মাকে। কোর টিমকে সঙ্গে নিয়ে তিনিই নাকি গোটা অভিযানের নীল নকশা তৈরি করেছিলেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *