আজ খবর ডেস্ক:
Brazilian president লুলা দা সিলভা (Lula da Silva) গত রবিবার ব্রাজিলের নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। হাড্ডাহাড্ডি ভোটের লড়াইয়ে বর্তমান রাষ্ট্রপতি জাইর বলসোনারোকে (Jair Bolsonaro) পরাজিত করেন লুলা।

দা সিলভা ৫০.৯ শতাংশ ভোট পেয়েছেন এবং বলসোনারো ৪৯.১ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। তিন দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে এটি ছিল দেশের সবচেয়ে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা।

আগামী ১লা জানুয়ারী, ২০২৩ এ দা সিলভার অভিষেক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তিনি সর্বশেষ 2003-2010 সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

সাও পাওলো শহরের কেন্দ্রস্থলে একটি হোটেলে এক বক্তৃতায় তিনি বলেন, আজ একমাত্র বিজয়ী ব্রাজিলের জনগণ।

“এটা আমার বা ওয়ার্কার্স পার্টির বিজয় নয়, যে দলগুলো আমাকে প্রচারে সমর্থন করেছিল তাদেরও জয় নয়। এটি একটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের বিজয় যা রাজনৈতিক দল, ব্যক্তিগত স্বার্থ এবং মতাদর্শের ঊর্ধ্বে থেকে গঠিত যাতে গণতন্ত্র বিজয়ী হয়েছে।”

লুলা রাষ্ট্র-চালিত অর্থনৈতিক বৃদ্ধি এবং সামাজিক নীতিগুলিতে ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যা ২০০৩ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত কার্যকর ছিল, যখন তিনি পূর্বে রাষ্ট্রপতি ছিলেন। তিনি আমাজন রেইনফরেস্টের ধ্বংসের বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং বিশ্ব জলবায়ু আলোচনায় ব্রাজিলকে এক গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসাবে তুলে ধরার আশ্বাস দিয়েছেন।

Brazilian president এখন জেনে নেওয়া যাক কে এই লুলা দা সিলভা।

লুলা দারিদ্র্যের মধ্যে বড় হয়েছেন। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় পেরনামবুকো রাজ্যের নিরক্ষর কৃষকদের পরিবারে জন্মগ্রহণকারী আট সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন সপ্তম। যখন তিনি সাত বছর বয়সী, তার পরিবার সাও পাওলোর শিল্প কেন্দ্রস্থলে চলে আসে

লুলা ১৪ বছর বয়সে ধাতব কর্মী হওয়ার আগে জুতো পালিশ এবং চিনাবাদাম বিক্রির কাজও করেছিলেন। ১৯৬০ এর দশকে, তিনি কর্মক্ষেত্রে এক দুর্ঘটনায় একটি আঙুল হারিয়েছিলেন। ট্রেড ইউনিয়নের প্রধান হওয়ার জন্য তিনি রাজনৈতক ভাবে দ্রুত উন্নতি করেন এবং ১৯৭০-এর দশকে তৎকালীন সামরিক স্বৈরাচারকে চ্যালেঞ্জ করে এক বড় ধর্মঘটের নেতৃত্ব দেন। ১৯৮০ সালে, তিনি ওয়ার্কার্স পার্টির সহ-প্রতিষ্ঠা করেন। নয় বছর পরে সেই পার্টির রাষ্ট্রপতির প্রার্থী হিসাবে তিনি ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন।

লুলা ২০০২ সালে ব্রাজিলের প্রথম শ্রমজীবী-শ্রেণীর রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন। কিন্তু ২০১০ সালে দুই মেয়াদের পরে তিনি পদত্যাগ করেন। তারপরও তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন। তার পরে তার ওয়ার্কার্স পার্টি (পিটি) দুর্নীতি কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ে এবং ব্রাজিলকে মন্দার মধ্যে ঠেলে দেয়।

দুর্নীতির অভিযোগে ২০১৮ সালে লুলাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল এবং সেই বছরের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বাধা দেওয়া হয়েছিল। সেবার জেইর বলসোনারো জয়ী হয়েছিলেন। লুলার ৫৮০-দিনের কারাবাস ২০১৯ সালের শেষের দিকে শেষ হয়েছিল।

পাঁচ সন্তানের দুবারের বিপত্নীক পিতা, লুলা গলার ক্যান্সার থেকে বেঁচে উঠেছিলেন। ২০১৭ সালে তার চার দশকের স্ত্রী মারিসা লেটিসিয়া রোকোকে স্ট্রোকে তিনি হারিয়েছিলেন। এর পর লুলা বলেছেন যে তিনি আবার প্রেম করছেন। গত মে মাসে রোজাঞ্জেলা “জানজা” দা সিলভাকে তিনি বিয়ে করেন। জানজা একজন সমাজবিজ্ঞানী এবং পিটি কর্মী।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *