আজ খবর ডেস্ক:
মাত্র একবারের কোটিপতি নয়, লটারিতে (Lottery) বার বার লক্ষ লক্ষ টাকা জিতেছেন অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)৷ অনুব্রতর লটারি রহস্যের কিনারা করতে গিয়ে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে আনলো সিবিআই (CBI)। আমজনতা যেখানে লটারিতে ভাগ্য ফেরাতে গিয়ে কখনও কখনও সর্বস্বান্ত হয়ে যান, সেখানে অনুব্রতর এত চওড়া কপালের পিছনে গভীর রহস্যই দেখছেন সিবিআই কর্তারা৷
লটারি জয়ের রহস্যভেদ করতে আসানসোল জেলে গিয়েও অনুব্রত মণ্ডলকে জেরা করেছেন সিবিআই আধিকারিকরা৷ যদিও জিজ্ঞাসাবাদে অনুব্রত Anubrata Mondal সহযোগিতা করেননি বলেই অভিযোগ সিবিআইয়ের। লটারি রহস্যভেদে তাই আরও বেশি করে তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহেই এখন জোর দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা৷

CBI সূত্রে জানা যাচ্ছে, একবার নয়, দু’বার লটারির টাকা ঢুকেছে কেষ্ট কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের (Sukanya Mondal) অ্যাকাউন্টে। যার পরিমাণ মোট ৫১ লাখ টাকা।
এখানেই শেষ নয়, মোট তিনটি লটারির টাকার হদিশ পেয়েছে বলে দাবি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। বারবার একই পরিবারের সদস্যরা কী ভাবে লটারি পাচ্ছেন? এই লটারির বিপুল পরিমাণ অর্থের সঙ্গে কোনওভাবে গোরুপাচার (Cattle Smuggling Case) মামলার যোগ আছে কিনা, তাই খতিয়ে দেখছে সিবিআই।

ফের নতুন করে লটারি ও গরু পাচার কাণ্ডের যোগসাজশ নিয়ে ভাবতে হচ্ছে তদন্তকারীদের।
বস্তুত, লটারি জয়ের নামে অনুব্রত আসলে গরু পাচারের কালো টাকা সাদা করেছেন। এমনটাই সন্দেহ সিবিআই আধিকারিকদের৷ অনুব্রতর একাধিকবার লটারি জয়ের তথ্য হাতে আসার পর সিবিআই কর্তাদের সেই সন্দেহ আরও দৃঢ় হয়েছে৷
বোলপুরের সমস্ত লটারির দোকানে তল্লাশি, জিজ্ঞাসাবাদ চালায় সিবিআই। তাদের কাছে আগেই খবর ছিল এই এলাকায় লটারির টাকা জিতে কালো টাকা সাদা করানো হয়। অনুব্রতের জেতা লটারির টিকিট বিক্রেতাকে ডেকে পাঠায় সিবিআই৷ তবে তাঁর দাবি, ওই টিকিট তিনি অনুব্রত মণ্ডলকে বিক্রি করেননি৷

প্রসঙ্গত, গত বছর ডিসেম্বরে অনুব্রত লটারিতে ১ কোটি টাকা জেতেন৷ গরু পাচারের তদন্তে অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করার পর সম্প্রতি অনুব্রতর লটারি জয় নিয়েও খোঁজ খবর করতে শুরু করে সিবিআই৷ সেই তদন্তেই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে৷ লটারির টিকিটের নম্বরের সূত্র ধরে বীরভূমের একাধিক লটারি টিকিট বিক্রেতার খোঁজ পায় সিবিআই৷

ডিয়ার লটারিতে (Dear Lottery) জেতা ১ কোটি টাকা আদৌ তা জেতা নাকি কালো টাকা সাদা করার চেষ্টা?
সিবিআই সূত্রে খবর, অন্তত আরও তিনটি লটারি খেলায় বাম্পার পুরস্কার জিতেছিলেন অনুব্রত ও তাঁর মেয়ে। অনুব্রতর Anubrata Mondal মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আরও দুটি লটারির টাকা ট্রান্সফার হয়েছে।
২০১৯ সালে অনুব্রত আরও একটি লটারিতে ১০ লক্ষ টাকা পেয়েছিলেন। সেই টাকার হিসাবও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাওয়া যাচ্ছে।

লটারির মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করবার খেলা বহুদিনের। কারণ লটারিতে জিতলে মোটা টাকা কর দিতে হয়। লটারির টিকিট সহজে হস্তান্তরযোগ্য, অর্থাৎ যাঁর কাছে সেই টিকিট থাকে তিনি পুরস্কারের টাকা পান। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েই বেআইনি লেনদেন হয়।
অনুব্রত ও তাঁর মেয়ে চার-চারটি লটারি জেতার ঘটনা নিয়ে তাই সিবিআইয়ের সন্দেহ বাড়ছে। তাঁরা খতিয়ে দেখছে, এ ভাবে অনুব্রতর স্ত্রী বা তাঁদের নিকট আত্মীয় বা পরিচারক-পরিচারিকার নামে কোনও লটারির টাকা ঢুকেছিল কিনা।

সিবিআই আধিকারিকদের অনুমান, অন্য কারও জেতা লটারির টিকিট নগদ টাকায় কিনে নিয়ে অনুব্রত বা সুকন্যার নামে ভাঙানো হয়েছে৷ এ ভাবেই গরু পাচার বা বেআইনি সূত্রে পাওয়া টাকা নগদে লটারির টিকিট জয়ীকে দিয়ে তাঁর কাছ থেকে লটারি বাঁধা টিকিটটি নিয়ে নেওয়া হত৷ সেই টিকিট লটারি সংস্থায় জমা দিয়ে টাকা তুলে নেওয়া হত অনুব্রত বা সুকন্যা মণ্ডলের নামে৷

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *