আজ খবর ডেস্ক:
Mamata-Mukul ফের রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় হচ্ছেন মুকুল রায় (Mukul Roy)? রাজ্য রাজনীতি এই মুহূর্তে আবর্তিত হচ্ছে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনকে (Panchayat Election) কেন্দ্র করে। রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, তাহলে কি পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূলে (TMC) নতুন সমীকরণ?
বস্তুত, নদিয়ার প্রশাসনিক বৈঠকে (Administrative Meeting in Nadia) মুকুল রায়ের ডাক পাওয়াকে ঘিরে জল্পনা পারদ চড়ছে। রানাঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) প্রশাসনিক বৈঠক রয়েছে। সেই বৈঠকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে মুকুল রায়কে। পাশাপাশি, দলীয় বৈঠকেও ডাক পেয়েছেন তিনি।

তিন দিনের জেলা সফরে মঙ্গল এবং বুধবার কৃষ্ণনগরে থাকবেন মমতা। বুধবার কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজের মাঠে দলীয় কর্মিসভা রয়েছে তাঁর। বৃহস্পতিবার তাঁর যাওয়ার কথা রানাঘাটে। সেখানেই রয়েছে প্রশাসনিক বৈঠক। নদিয়ায় রাস উৎসবেও যোগ দিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর যাবতীয় কর্মসূচি রয়েছে কৃষ্ণনগরে। শান্তিপুর বা নবদ্বীপে তাঁর যাওয়ার কোনও কর্মসূচির কথা জানানো হয়নি।
Mamata-Mukul এদিকে কৃষ্ণনগরে পৌঁছেই দলীয় নেতাদের নিয়ে বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূল সূত্রে খবর, বৈঠকে পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে জেলায় দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। মঙ্গলবারের বৈঠকে ছিলেন কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক মুকুল রায়। যা নিয়ে বিকেলের পর থেকেই সর্বত্র আলোচনা চলছে। কারণ, বিধানসভার স্পিকারের দাবি অনুযায়ী, মুকুল এখনও বিজেপিরই বিধায়ক। বিজেপির বিধায়ক হিসেবেই মুকুল রায়কে রাজ্য বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (PAC) চেয়ারম্যান করা হয়েছিল। যা পরে মুকুল নিজেই ছেড়ে দেন।

মঙ্গলবার দুপুর ২টো নাগাদ কৃষ্ণনগর দ্বিজেন্দ্রলাল রায় স্টেডিয়ামের হেলিপ্যাডে নামেন মমতা। সেখান থেকে তিনি পৌঁছন কৃষ্ণনগর সার্কিট হাউসে। দুপুর আড়াইটে নাগাদ সেখানে পৌঁছন কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভার বিধায়ক মুকুল রায়। সার্কিট হাউসেই দলের নদীয়া জেলার শীর্ষ নেতৃত্বকে নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন মমতা। সেখানে ছিলেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র, রাজ্যের মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস, দলের কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি কল্লোল খাঁ, নদিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি রিক্তা কুন্ডু-সহ অনেকেই। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ওই বৈঠকে ছিলে মুকুলও।
এই প্রসঙ্গে মনে করিয়ে দেওয়া যেতে পারে, একুশের বিধানসভা নির্বাচন পরবর্তী সময়ে তৃণমূল ভবনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) উপস্থিতিতে সপুত্র বিজেপি (BJP) ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন মুকুল রায়। তৃণমূলে আসা ইস্তক সেভাবে সক্রিয় হতে দেখা যায়নি মুকুলকে। মাঝেমধ্যে অসংলগ্ন কথা বলে তৃণমূলকে অস্বস্তিতেই ফেলেছিলেন একদা দলের “চানক্য” মুকুল।

তৃণমূলের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে কেন মুকুল ছিলেন, তা নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার বলেন, ‘‘এরা তো বহুরূপী। ভোটে জেতার জন্য বিজেপি। সুবিধা ভোগ করার জন্য তৃণমূল। সাহস থাকলে উনি এক বার বলুন যে, তিনি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।’’
সাম্প্রতিক রাষ্ট্রপতি নির্বাচনেও মুকুল ভোট দিয়েছেন তৃণমূলের প্রার্থীকে। Mamata-Mukul
প্রথমে কালীঘাটের বাড়িতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর সঙ্গে রুদ্ধ দ্বার বৈঠক। তারপর গত মাসে ভাইফোঁটার দিনেও মুকুলকে দেখা গিয়েছে মমতার বাড়িতে। মমতা তাঁকে ফোঁটাও দিয়েছিলেন। এদিন আবার মমতা মুকুল মুখোমুখি। ফলে একদিকে যেমন প্রশ্ন উঠেছে দলে ফের মুকুলের সক্রিয় হয়ে ওঠা নিয়ে অন্যদিকে আরেকটি বিষয় কাঁটার মত অস্বস্তি বাড়াচ্ছে শাসকদলের অন্দরে।


বিজেপিতে থাকাকালীন এই মুকুল রায়ের বিরুদ্ধেই কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস খুনে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে। সিআইডি চার্জশিটে নামও ছিল মুকুল রায়ের।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *