আজ খবর ডেস্ক:
SSC scam tmc vs cpm উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ (Interim Stay Order) দিয়েছেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। কর্মশিক্ষায় অতিরিক্ত ৭৫০ জনের নিয়োগে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। কীভাবে ওয়েটিং লিস্ট তৈরি হয়েছে, তা জানতে চেয়েছে আদালত। আর এর পরেই দেখা গিয়েছে বিক্ষোভকারী চাকরি প্রার্থীদের একাংশ সরাসরি সিপিআইএম (CPIM) সদর দপ্তর আলিমুদ্দিন ঘেরাওয়ের হুমকি দিয়েছেন। এমনকী তাঁদের অভিযোগ, বাম ঘনিষ্ঠ আইনজীবীদের মামলা করার কারণেই চাকরি পাচ্ছেন না তাঁরা।

এরই মধ্যে সামনে এসেছে আগামী ২১শে নভেম্বরের একটি কর্মসূচি। যেখানে উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)। ঠিক কী অনুষ্ঠানের কথা বলা হচ্ছে, দেখে নেওয়া যাক।

বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমকে আমন্ত্রণ জানিয়ে বলা হয়েছে, “সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থিত ‘পশ্চিম বঙ্গ শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চ” ২১শে নভেম্বর ২০২২ তারিখে রানি রাসমণি রোডে একটি শিক্ষক সম্মেলন ডেকেছে। শিক্ষক, অশিক্ষক কর্মচারী এবং শিক্ষার সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে এই সম্মেলন ডাকা হয়েছে। সম্মেলনে বক্তব্য রাখবেন শিক্ষামন্ত্রী অধ্যাপক ব্রাত্য বসু।”


মঈদুল ইসলাম যিনি একসময় শাসক বিরোধী শিবিরের শিক্ষক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তিনি এই আমন্ত্রণ পাঠিয়েছেন। বর্তমানে তিনি পশ্চিম বঙ্গ শিশু ঐক্য মুক্তমঞ্চের সাধারণ সম্পাদক।
রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, একটানা গত কয়েক মাস যাবত চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের রাশ সরাসরি না হলেও কার্যত ছিল বামেদের হাতে। কখনও গান্ধী মূর্তির পাদদেশ, কখনও মেয়ো রোডে দেখা গিয়েছে বিমান বসু (Biman Basu) মহম্মদ সেলিমদের (Md. Selim)। আবার পুজোর সময় গেরুয়া শিবিরের তরফে যেমন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) গিয়েছিলেন, ঠিক তেমনই দিন কয়েক আগে বিজেপির (BJP) উত্তর কলকাতা যুব মোর্চার পক্ষ থেকে পাত পেড়ে মাছ ভাত খাওয়ানো হয়েছিল চাকরিপ্রার্থীদের।

এদিন এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে aajkhobor.com কে মঈদুল ইসলাম বলেন, “চাকরি প্রার্থীদের ভুল বুঝিয়ে বিপথে চালনা করছিল বিরোধীরা। নিজেদের রাজনৈতিক সুবিধার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছিল চাকরি প্রার্থীদের। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন সকলের চাকরি হবে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও দেখা করেছেন চাকরি প্রার্থীদের একাংশের সঙ্গে। শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে কিছু দুর্নীতি হয়েছে এ কথা ঠিক। এই নিয়ে ব্যবস্থা নিয়েছে রাজ্য সরকার। চাকরি প্রার্থীরাও বুঝতে পারছেন, ক্ষমতায় থাকার কারণে তৃণমূলই পারবে চাকরি দিতে। বিরোধীরা তা পারবে না।

মঈদুল ইসলাম


SLST মঞ্চ থেকে মহ. শহিদুল্লাহ এবং শারীর শিক্ষা-কর্মশিক্ষা চাকরি প্রার্থীদের তরফে রাজু দাসকে ২১ তারিখের সমাবেশে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। শিক্ষা সার্বিক পরিকাঠামো উন্নয়ন চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকদের বেতন কাঠামো এবং চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগের বিষয় নিয়েই একুশ তারিখের কর্মসূচি।” SSC tmc vs cpm
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১৪ই অক্টোবর শারীর শিক্ষা এবং কর্মশিক্ষায় অতিরিক্ত শূন্য পদ তৈরি করে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করে স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC)। ৩রা নভেম্বর স্কুল সার্ভিস কমিশন নোটিশ দিয়ে জানায়, ১০ এবং ১১ই নভেম্বর ওয়েটিং লিস্টে থাকা প্রার্থীদের কাউন্সেলিং হবে।


কিন্তু ওয়েটিং লিস্টে নিজের নাম দেখতে না পেয়ে মামলা করেন সোমা রায় নামের এক পরীক্ষার্থী। সোমা রায় অভিযোগ করেন, কমিশন ৩রা নভেম্বর যে ওয়েটিং লিস্ট প্রকাশ করেছে তফশিলি জাতিভুক্ত হওয়ার পরেও তাঁর নাম নেই। পরীক্ষা ও পার্সোনালিটি টেস্টে তিনি ৭২ পেয়ে চাকরি না পেলেও ৫৬ পেয়ে অন্য ব্যক্তি চাকরি পেয়েছেন। অ্যাকাডেমিক স্কোরে ২২-এর পরিবর্তে তাঁকে ১৮ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সোমা রায়। লিখিত পরীক্ষায় তাঁর নম্বর ৫৪। অ্যাকাডেমিক স্কোর ২২ যুক্ত হওয়ার পরে তাঁর প্রাপ্ত নম্বর হওয়ার কথা ৭৬। কিন্তু তাঁকে ৭২ দেওয়া হয়েছে। সেখানে যোগ করা হয়নি পার্সোনালিটি টেস্টের নম্বও।

সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, ভোট আসলে বড় বালাই। শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য জুড়ে তোলপাড় চলছে। এই অবস্থায় যদি চাকরি প্রার্থীদের মধ্যে বিভাজন করা যায় তাহলে কিছুটা হলেও মুখ রক্ষা হতে পারে শাসক শিবিরের। প্রশ্ন উঠেছে তাহলে কি সেই কারণেই এতদিন চুপ থাকার পর আসরে নামছেন রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী?

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *