আজ খবর ডেস্ক:
Anirban Bhattacharya সম্প্রতি নাট্যকর্মী, অভিনেতা অমিত সাহাকে (Amit Saha) মারধরের ঘটনায় উত্তাল বাংলার থিয়েটার ও সিনে জগত। সমাজ মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন অনেকেই। অনেকেই অমিতের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
এবার প্রকাশ্যে রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন নাট্যকার, অভিনেতা তথা পরিচালক অনির্বাণ ভট্টাচার্য (Anirban Bhattacharya)। সমাজমাধ্যমে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে অনির্বাণ বললেন, “ভোট রাজনীতিতে কাজে আসে না, এমন শিল্পীদের মেরে ঠান্ডা করে দেওয়া হচ্ছে!”
প্রসঙ্গত, গত ২৩শে ডিসেম্বর বেলেঘাটায় তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) পার্টি অফিসে নাট্যোৎসব করার আবেদন জমা দিতে গিয়েছিলেন অভিনেতা তথা ‘বিদূষক নাট্যমণ্ডলী’র নাট্য পরিচালক অমিত সাহা। অভিযোগ, তখনই অমিতকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বার করে দেওয়া হয়।
এরপর গতকাল অর্থাৎ ২৮শে ডিসেম্বর একটি প্রতিবাদী সভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন অনেকেই।
অনির্বাণ ভট্টাচার্য সেখানে ছিলেন না পূর্ব নির্ধারিত শুটিং শিডিউল থাকায়। Anirban Bhattacharya
এবার শাসকদলের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভপ্রকাশ করলেন সমাজমাধ্যমেই। তিনি খোলা চিঠিতে লিখেছেন, “আমি প্রতিবাদ করছি, আরও অনেকের সঙ্গে, এটা জেনেই, যে এই প্রতিবাদ ব্যর্থ হবে। যার গায়ে হাত উঠেছে, তাঁর গায়ে আবার হাত উঠতে পারে শীঘ্রই, এবং যিনি হাত তুলেছেন, তিনি তার সাহসে বলীয়ান হয়ে বাংলা মায়ের সুযোগ্য সন্তানের অনেকগুলো সার্টিফিকেট ঘরে বাঁধিয়ে রাখবেন।”
তাঁর কথায়, “আমি আজ বেলেঘাটাতেই শুটিং করছি, কিন্তু খুবই টাইট শিডিউল থাকায় সভাতে উপস্থিত থাকতে পারছি না। কিন্তু আমি এই সভায় উপস্থিত থাকতে চেয়েছিলাম, কারণ গায়ে হাত উঠেছে। নিশ্চয়ই আগেও উঠেছে, অভিনেতার গায়ে, নাট্যকর্মীর গায়ে। সুদূর বা অদূর ইতিহাসে। কিন্তু সাম্প্রতিককালে আমার জানার মধ্যে এই প্রথম হাত উঠেছে।”
‘লুটেরা’, ‘বাকিটা ব্যক্তিগত’, ‘ভটভটি’-সহ বহু ছবিতে চেনা মুখ অমিত। পাশাপাশি নিজের নাট্যদল চালান দীর্ঘদিন ধরেই। গত ২৪ ও ২৫ ডিসেম্বর একটি নাট্যমেলার আয়োজন করেছিলেন বেলেঘাটার একটি মাঠে। কিন্তু তার আগেই কিছু রাজনৈতিক নেতা তাঁকে মারধর করে নাট্যোৎসব বন্ধ করে দেন বলে অভিযোগ।
সেই ঘটনা জানাজানি হতেই সমাজমাধ্যমে রীতিমতো হইচই পড়ে যায়। ২৮ ডিসেম্বর বেলেঘাটার রাসমেলা মাঠে আয়োজিত সভাতেও গিয়েছিলেন অভিনয় জগতের অনেকেই।
সকলকে আহ্বান জানিয়ে অনির্বাণ লিখেছেন, “আসুন, প্রতিটি অঞ্চলের পার্টি অফিসে আমরা আবেদনপত্র জমা দিই আমাদের নাটক অভিনয়ের দিন ও স্থান সমেত, আমাদের যেন এসে বেদম মার দেওয়া হয়, যেন বুঝিয়ে দেওয়া হয় হাড়ে হাড়ে যে ভোটকেন্দ্রিক গণতন্ত্রে অমিতাভ বচ্চন বা শাহরুখ খান না হলে বেশি লাফাতে নেই।”
সেই সঙ্গে, নিজের নাটকের শোতেও এসে মেরে যাওয়ার খোলা চ্যালেঞ্জ জানিয়ে অভিনেতা লেখেন, “অখ্যাত, বিখ্যাত, নামী, অনামী সব অভিনেতা চলুন একযোগে মার খাওয়ার আবেদন জানাই। আমি অনির্বাণ। আমার এর পরের অভিনয় ১৫ জানুয়ারি রবীন্দ্র সদন মঞ্চে। এসে মেরে যান।’’
অনির্বাণের এই প্রতিবাদের পরেই পাল্টা শাসকদলের পক্ষ থেকে বাম আমলে “উইংকল টুইংকল” বা “পশু খামার” এর মত নাটকের অভিনয় বন্ধ করে দেওয়ার কথা তোলা হচ্ছে। তবে সে সময় ও অভিনেতাদের ও গায়ে এভাবে হাত তোলা হয়নি, প্রতিবাদে এমনটাই বলছেন অধিকাংশ নাট্যকর্মী ও অভিনেতারা।