আজ খবর ডেস্ক:
Amartya Sen on Mamata Banerjee বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা রয়েছে; নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের (Amartya Sen) এখানে মন্তব্য ঘিরে আপাতত তুমুল চর্চা চলছে রাজ্যে।
কারণ, এতদিন পর্যন্ত ঘোষিত বামপন্থী না হলেও কিঞ্চিৎ তৃণমূল বিরোধী হিসেবে একটি পরিচিতি তৈরি হয়েছে প্রখ্যাত এই অর্থনীতিবিদের। গতবছরের শেষ পর্বে রাজ্য সরকারের দেওয়া বঙ্গ সম্মান পুরস্কার পর্যন্ত গ্রহণ করেননি তিনি। যদিও তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল থেকে জানানো হয়েছিল শারীরিক অসুস্থতা থাকায় কলকাতায় এসে এই পুরস্কার গ্রহণে অপারগ অধ্যাপক সেন। Amartya Sen on Mamata Banerjee
বাংলা দখলের লক্ষ্যে একুশের ভোটে এ রাজ্যে সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে ছিল বিজেপি। কিন্তু শেষ হাসি হেসেছিল তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সামনে “টার্গেট ২৪”।


সংবাদসংস্থা পিটিআইকে (PTI) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, “এই নয় যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যোগ্যতা নেই। অবশ্যই তাঁর যোগ্যতা রয়েছে দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার। কিন্তু বিজেপির (BJP) বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভকে তিনি কতটা টানতে পারবেন সেটাই সবচেয়ে বড় বিষয়। এখনও সেটা দেখা যাচ্ছে না। তাঁকে বিজেপির দেশ বিভাজনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেতৃত্বে থাকতে হবে।”

প্রসঙ্গত, গত বছর একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২৪এর লোকসভা নির্বাচন নিয়ে বলেছিলেন, “কোন অঙ্কে, কীভাবে আমি বলব না। তবে চব্বিশে দিল্লিতে বিজেপি থাকবে না, থাকবে না, থাকবে না।” তারপর অবশ্য আঞ্চলিক শক্তির কথা তুলে ধরেছিলেন তৃণমূলনেত্রী।
অমর্ত্য সেনও তাঁর সাম্প্রতিকতম এই সাক্ষাৎকারে চব্বিশের নির্বাচনে আঞ্চলিক শক্তির গুরুত্বের কথা বলেছেন। এ ব্যাপারে তামিলনাড়ুর ডিএমকে (DMK), শরদ পাওয়ারের এনসিপি (NCP), তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রশেখর রাওয়ের দল (TRS), বিহারের নীতিশ কুমারের জেডিইউ (JDU), উত্তরপ্রদেশে অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি (SP) এমনকী, তৃণমূল কংগ্রেসের কথাও উল্লেখ করেছেন।

খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ অবশ্য বিজেপিকে আক্রমণ করেছেন, ‘ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করার’ অভিযোগ তুলে তিনি বলেছেন,
“বিজেপি (BJP) ভারতকে শুধু হিন্দু ভারত এবং হিন্দিভাষী ভারত হিসাবে এমনভাবে সংকুচিত করেছে যে আজ দেশে বিজেপির বিকল্প না থাকলে এটি দুঃখজনক হবে”।
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের মতে, বিজেপি যেভাবে নিজেকে বিরাট শক্তিধর হিসেবে দেখায় সেটা একটা দিক। কিন্তু তিনি মনে করেন বিজেপির দুর্বলতাও প্রচুর। সমস্ত দল যদি একসঙ্গে লড়াই করতে পারে তাহলে ২০২৪এ বিজেপিকে রুখে দেওয়া সম্ভব।

বস্তুত, অমর্ত্যর মতে এখানেই আঞ্চলিক দলগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে।
অন্যদিকে, কংগ্রেস (Congress) “দুর্বল হয়েছে” বলেও অমর্ত্য সেন স্বীকার করেছেন, শুধুমাত্র পুরনো দলই সর্বভারতীয় দৃষ্টিভঙ্গি দিতে পারে।
অমর্ত্য সেনের মন্তব্য এমন এক সময়ে এসেছে যখন পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের ১৫ মাসেরও কম বাকি। এই বছর, বিজেপি-শাসিত কর্ণাটক ও মধ্যপ্রদেশ এবং কংগ্রেস শাসিত ছত্তিশগড় ও রাজস্থান সহ নয়টি রাজ্যে বিধানসভা ভোট হবে।


তাৎপর্যপূর্ণভাবে কংগ্রেসের বিষয়ে দু’টি মতামত জানিয়েছেন অমর্ত্য সেন।
১) কংগ্রেস যেভাবে দুর্বল হয়েছে সেই পরিস্থিতিতে তাদের ওপর মানুষ কতটা আস্থা রাখতে পারবে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন তিনি।
আবার এও জানিয়েছেন,
২) বিজেপি যখন অখন্ড ভারতের সামগ্রিক ধারণাটাই ভেঙে খান খান করে দিচ্ছে তখন কংগ্রেস ছাড়া অন্য কোনও রাজনৈতিক দলের পক্ষে জাতীয় স্তরে দিশা দেখানো মুশকিল।
যেটা কংগ্রেস পারবে সেটা অন্য কোনও আঞ্চলিক দলের পক্ষে সম্ভব নয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *