আজ খবর ডেস্ক:
Bagbazar Student Death শীতের সময়, ফুরফুরে মেজাজে গঙ্গাবক্ষে বন্ধুদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে সেলফি (Selfie) তুলছিলেন। বিপত্তি ঘটল সেখানেই। সেলফি তুলতে গিয়ে গঙ্গাবক্ষে তলিয়ে গেলেন কলেজের প্রথম বর্ষের এক ছাত্র। Bagbazar Student Death
মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে বাগবাজার (Bagbazar) গঙ্গার ঘাটে। এখনও পর্যন্ত ওই ছাত্রের কোনও খোঁজ মেলেনি। নিখোঁজ ছাত্রের নাম শেখ সৈয়দ (১৮)। সৈয়দ টালা শ্রী চন্দ্রলেনের বাসিন্দা, পড়তেন মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজের প্রথম বর্ষে। যদিও নিখোঁজ ছাত্রের পরিবারের অভিযোগ, বন্ধুরা তাঁকে ঠেলে গঙ্গায় ফেলে দিয়েছেন। সেদিন সৈয়দের সঙ্গে গঙ্গাঘাটে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে নর্থ পোর্ট থানার পুলিশ।
জোয়ারের সময় গঙ্গার ঘাটে সেলফি তুলতে গিয়েই এই দুর্ঘটনা বলে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের সন্দেহ। কিন্তু
পরিবারের সদস্যদের দাবি, ৫-৬ জন বন্ধু তাঁকে বাড়ি থেকে কলেজে যাবে বলে ফোনে ডেকে নিয়ে যান। একটি মেয়ে সৈয়দকে ফোন করে ডাকেন বলে দাবি পরিবারের।
সেই সঙ্গে সৈয়দের পরিবার জানাচ্ছে, বিকেল প্রায় ৪.৩০টে নাগাদ সৈয়দের ওই বন্ধুরাই ফোন করে জানান, বাগবাজার গঙ্গার লক গেটে তাঁরা সবাই গিয়েছিলেন। সেখানে সৈয়দ সেলফি তুলতে গেলে গঙ্গায় পড়ে যান। পরিবারের এক সদস্য বলেন, “ছেলেটা এতবার ফোন করছিল, যে খেতেও দিচ্ছিল না। আমাদের বলেছিল কলেজে যাচ্ছে। কিন্তু শুক্রবার কলেজও বন্ধ ছিল, পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি। যে জায়গায় সেলফি তোলার কথা বলা হচ্ছে, সেটি অত্যন্ত ভয়ঙ্কর একটি জায়গা। সেখানে দাঁড়িয়ে অন্তত সৈয়দ ছবি তুলতে যাবে না। কারণ ও অত্যন্ত ভীতু ছেলে। বন্ধুরাই এর সঙ্গে জড়িত।”
শুক্রবার বিকেলে বন্ধুদের সঙ্গে বাগবাজার পাম্পিং স্টেশনের কাছে গঙ্গার ঘাটে ঘুরতে গিয়েছিলেন সৈয়দ। সকলে মিলে সেখানে সেলফি তুলতে শুরু করে। বন্ধুরা নিরাপদ দূরত্বে দাঁড়িয়ে ছবি তুললেও সৈয়দ লকগেটের কাছে নদীর ধারে রাখা স্ল্যাবের ওপর উঠে ছবি তুলতে শুরু করে বলে পুলিশকে জানিয়েছে ওই কিশোরের বন্ধুরা। একটা থেকে আর একটা স্ল্যাবে সে লাফিয়ে গিয়ে সেলফি তুলছিল বলে জানিয়েছে বন্ধুরা।
সেই সময় গঙ্গায় জোয়ার আসার ফলে জলস্তর বাড়তে শুরু করে। স্ল্যাবগুলি ডুবে যায় তাতে। তখন চেষ্টা করেও আর পাড়ে উঠে আসতে পারেনি সৈয়দ। গঙ্গায় তলিয়ে যায় সে।
এদিকে ছেলে বাড়িতে না ফেরায় নর্থ পোর্ট থানায় ডায়েরি করে সৈয়দের পরিবারের লোকজন। পরে পরিবারের সদস্যরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন। ডুবুরি নামিয়ে তল্লাশি চালানো হয়।
শেখ সৈয়দের পরিবারের লোকেদের বক্তব্য, বন্ধুরাই ওকে ফেলে দিয়েছেন গঙ্গায়। সৈয়দ সাঁতার জানতেন না বলে ও দাবি পরিবারের। বিপর্যয় মোকাবিলা দলও (DMG) সৈয়দের খোঁজ করতে শুরু করে। কিন্ত ঘটনার ৪৩ ঘণ্টা কেটে গেলেও এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি ওই ছাত্রের।
বাড়ির ছেলে প্রায় দেড়দিন নিখোঁজ থাকায় ভেঙে পড়েছে সৈয়দের পরিবার। সৈয়দকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা। ইচ্ছাকৃতভাবেই ছেলেকে গঙ্গায় ঠেলে ফেলে দেওয়া হয়ে থাকতে পারে, দাবি তাঁদের। বন্ধুদের বিরুদ্ধে নর্থ পোর্ট থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে নর্থ পোর্ট থানা।