আজ খবর ডেস্ক:
সমবায় নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সিপিএমের (CPIM) জয়। গত কয়েক দিন ধরে বারবার রাজ্যের সমবায় নির্বাচন (Co-operative Election) প্রসঙ্গ সামনে এসেছে। সামনে এসেছে, বাম-বিজেপির “গোপন আঁতাত” হয়েছে কী না সেই প্রশ্ন! যেমন তেহট্টে প্রার্থীই দিতে পারেনি তৃণমূল-বিজেপি (TMC-BJP)। বাংলার রাজনৈতিক মহলে এবার তাই জোরালো প্রশ্ন, কেন প্রার্থী দিতে পারল না তৃণমূল আর বিজেপি?
মনোনয়ন (Nomination) জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ২৫শে ডিসেম্বর। রবিবার নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ৪৯ আসন বিশিষ্ট এই সমবায় সমিতির নির্বাচনে সিপিআইএম সবকটি আসনে প্রার্থী দিলেও বিরোধীরা কেউ-ই প্রার্থী দেয়নি। ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন সিপিআইএম প্রার্থীরা। রবিবারই সমস্ত প্রার্থীদের জয়ী ঘোষণা করে হাতে শংসাপত্র প্রদান করা হয়। পাশাপাশি বিজয় উৎসব পালন করেন বিজয়ীরা।
রাজ্য জুড়ে শাসক দলের দাপট। পূর্ব মেদিনীপুর সহ কিছু জায়গায় যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির ও। সেই নিরিখে যথেষ্ট পিছিয়ে রয়েছে সিপিআইএম। তারপরেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তেহট্টের চাঁদেরঘাট সমবায় সমিতির ৪৯টি আসনের সবকটিতে জয়ী হল সিপিআইএম।
তেহট্ট-১ ব্লকের চাঁদেরঘাট সমবায় সমিতিতে ৪৯ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতল সিপিএম। তৃণমূল কংগ্রেস বা বিজেপি কারও প্রার্থী ছিল না। আর এই প্রার্থী দিতে না পারাই প্রশ্ন তুলেছে রাজনৈতিক মহলে। কারণ এতদিন পর্যন্ত নির্বাচনে বিরোধী দলের প্রার্থী দিতে না পারায় তাদের সাংগঠনিক অক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। পাল্টা পঞ্চায়েত সহ স্থানীয় নির্বাচনে শাসক দলের “দাদাগিরি”, বিরোধীদের মনোনয়ন দাখিলে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে বাম-বিজেপি-কংগ্রেস। তেহট্টে তাহলে বিষয়টি ঠিক কী দাঁড়ালো? Co-operative Elections
বস্তুত, ১৯২৬ সালে তৈরি হয় তেহট্ট ১ ব্লকের চাঁদেরঘাট সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি লিমিটেড। সিপিএমের দাবি প্রায় ৫০ বছর ধরে এখানে বামেরা জয়লাভ করে আসছে। গত বছরের ১০ই ডিসেম্বর সমবায় নির্বাচনের দিন ঘোষণা করা হয়। মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল ২৫শে ডিসেম্বর। রবিবার অর্থাৎ ১৫ই জানুয়ারি ছিল নির্বাচনের দিন। কিন্তু ৪৯ আসনের এই সমবায় সমিতির নির্বাচনে সিপিএম সব কটিতে প্রার্থী দিলেও বিরোধীরা দেয়নি। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কার্যত জয়ী হলেন সিপিএম প্রার্থীরা।
তৃণমূল কংগ্রেসের তেহট্ট-১ ব্লক সভাপতি বিশ্বরূপ রায় বলেন, এ বিষয়ে তাঁর নির্দিষ্ট কোনও বক্তব্য় নেই। কিন্তু এরপরেই সিপিএমকে খোঁচা দিতে বিজেপিকে টেনে আনেন। তিনি। বলেন, তৃণমূল যেমন প্রার্থী দেয়নি তেমন আরেকটা পক্ষও প্রার্থী দেয়নি। বাম ও রাম কি এক হয়ে গেল? ওখানে পঞ্চায়েতে রাম পক্ষের ৬টি আসন রয়েছে। তারপরেও প্রার্থী দিল না। তবে তৃণমূল কেন প্রার্থী দিল না তা নিয়ে মন্তব্য এড়িয়েই গিয়েছেন তিনি।
এ নিয়ে শাসকদলের বড় নেতারাও যেমন চুপ, ঠিক তেমনই প্রতিক্রিয়া আসেনি রাজ্যের গেরুয়া শিবির থেকেও।
অথচ গত কয়েক মাসে বারবার আলিমুদ্দিন থেকে রাজ্যে সর্বত্র বার্তা দেওয়া হয়েছিল, “বাম-রাম” জোটের অপবাদ যেন তাদের শুনতে না হয়। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দলের নিচু তলার কর্মীদের সতর্ক করা হয়েছে বলেও খবর। তারপরেও তেহট্টের ঘটনা এবং তৃণমূল ও বিজেপির প্রার্থী দিতে না পারা বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক প্রশ্ন তুলে দিয়ে গেল।