আজ খবর ডেস্ক:
Food for Iron মাথা ঘোরা, শরীর দুর্বল লাগা, অথবা হাত-পা ঠান্ডা হয়ে থাকা। আসল সমস্যা হল, রক্তে আয়রনের পরিমাণ কম থাকা। আয়রন (Iron) আমাদের শরীরকে ভিতর থেকে সুস্থ রাখে, শক্তিশালী রাখে। রক্তে হিমোগ্লোবিনের (Haemoglobin) মাত্রা কমে গেলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। ক্লান্তি আসে। আয়রনের ঘাটতি হওয়া মানেই অ্যানিমিয়া (Anemia) অবধারিত। শরীরে আয়রন, ভিটামিন বি এবং ফোলিক অ্যাসিডের ঘাটতি হলেই এই সমস্যা বেশি দেখা যায়।


হিমোগ্লোবিন হল লোহিত রক্তকণিকায় অবস্থিত একপ্রকার প্রোটিন যার মধ্যে আয়রন এবং ট্রান্সপোর্টস অক্সিজেন বর্তমান। দেহের সমস্ত কোষে অক্সিজেন পৌঁছে দেওয়ার গুরুদায়িত্ব থাকে হিমোগ্লোবিনের হাতে। শরীরে আয়রনের অভাব হলে তখনও হিমোগ্লোবিন উৎপাদন ব্যাহত হয়। পরিসংখ্যান বলছে, ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি। Food for Iron

হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কম হলে কিডনির (Kidney Problem) সমস্যা আসে।
সব বয়সের মানুষের জন্য যথেষ্ট পরিমানে আয়রনযুক্ত খাবার খাওয়া খুবই জরুরি। আয়রন একধরণের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা (Immunity) বৃদ্ধি করে। শরীরে লোহিত রক্ত কণিকা তৈরি করতে , হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে, পেশী টিস্যুতে অক্সিজেন সঞ্চয় করতে , শিশুদের সুস্থ মস্তিষ্কের বৃদ্ধি এবং সম্পূর্ণ বিকাশের জন্য আয়রন খুব বড় ভূমিকা পালন করে থাকে।
শরীরে আয়রনের ঘাটতি থাকলে শরীর খুব দুর্বল লাগে , মাথা ব্যাথা করে ,রক্তচাপ কমে যায় , মাথা ঘোরে , বুকে ব্যথা করে শ্বাস নিতে সমস্যা হয় , হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যায়। হিমোগ্লোবিন শরীরের এমন একটি প্রধান উপাদান যা ফুসফুস (Lung) থেকে শরীরের অন্যান্য অংশে অক্সিজেন বহন করে। তাই আপনার রোজকার ডায়েটে অবশ্যই এই খাবারগুলো তখতে ভুলবেন না।

১) পালং শাক :
পালং শাকে প্রচুর পরিমানে আয়রন আছে। কম ক্যালোরিযুক্ত এই পুষ্টিকর সবজিতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমানে ভিটামিন সি যা আমাদের শরীরকে আয়রন শোষণ করতে সাহায্য করে। এর মধ্যে মজুত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চোখকে ভালো রাখে , চুলের বৃদ্ধিকে উন্নত করে এবং ইনফ্লামেশন কম করে। বিভিন্ন ধরণের খাবার যেমন পাস্তা, স্যালাড এবং অন্যান্য রান্নাতে পালং শাকের ব্যবহার বাড়ান।

২) লেগিউমস :
লেগিউমস যেমন মটরশুটি ,মসুর ডাল, ছোলা ,সয়াবিন এই ধরণের সবজি, বিশেষত ডালে প্রচুর পরিমানে আয়রন, ফোলেট, ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাসিয়াম থাকে। মটরশুঁটিতে থাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, যা শরীরে আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে। শরীরে আয়রন পাওয়ার জন্য ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার যেমন টমেটো বা সাইট্রাস ফল খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

৩) মাছ :
আপনি যদি আমিষাশী হয়ে থাকেন , তাহলে শরীরে আয়রনের পরিমান বাড়াতে অবশ্যই মাছ (Fish) কাদ্যতালিকায় যোগ করুন। মাছে রয়েছে প্রচুর পরিমানে আয়রন যা আপনার চোখের , চুলের , এবং শরীরে আয়রনের সমস্যা দূর করে। মাছে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীরের বৃদ্ধি ও বিকাশে সাহায্য করে।

৪) কুমড়ো বীজ :
স্বাদে এবং গুণে কুমড়োর বীজ খুবই উপকারী। ভাজা কিংবা কাঁচা যেকোনও ভাবে এগুলো খাওয়া যেতে পারে। ভিটামিন কে, জিঙ্ক এবং ম্যাঙ্গানিজ সমৃদ্ধ এই কুমড়োর বীজ আপনার রান্নায় কিংবা স্যুপে ব্যবহার করুন যা আপনার শরীরে আয়রনের পরিমান বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।

৫) ব্রকোলি :
ব্রকোলি সব বয়সের মানুষের জন্য খুবই উপকারী একটি খাবার যাতে আছে প্রচুর পরিমানে আয়রন , ভিটামিন সি ,ফোলেট, ফাইবার এবং ভিটামিন কে। বাচ্চাদের ব্রকোলির স্যুপ বানিয়ে খাওয়াতে পারেন। তাছাড়া যে কোন মিক্সড সবজি, নুডুলস , পাস্তা কিংবা অন্যান্য খাবারেও ব্রকোলি যোগ করতে পারেন যা স্বাদে এবং গুনে শরীরের জন্য অতুলনীয়।

৬) বীট:
শরীরে লোহিত রক্ত কণিকার পরিমাণ বাড়াতে বীটের জুড়ি মেলা ভার। যাদের সুগার রয়েছে তাঁরা বিট এড়িয়ে চলতে পারলেই ভাল, যেহেতু বীটের মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণ শর্করা। বিটের থেকেও বেশি আয়রন রয়েছে বিটের পাতায়। তাই এই পাতা খেতে পারলেই কিন্তু সবচেয়ে বেশি লাভ।

৭) জাম:
একমাত্র গরমের সময়ই জাম পাওয়া যায়। সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে জামের জুড়ি মেলা ভার। এমনকী জামের বীজও গুঁড়ো করে খেলে সুগার থাকে নিয়ন্ত্রণে। জাম খেলে রক্তও বাড়ে। সবচেয়ে ভাল যদি আমলা আর জামের জুস একসঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে বাড়বে শরীরে রক্তের পরিমাণ।

৮) পেস্তা:
রোজ সকালে তিন থেকে চারটে পেস্তা খেতে পারলে খুবই ভাল। পেস্তা খেলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে। এই ফলের মধ্যে রয়েছে ৩০ রকম ভিটামিন। আছে প্রচুর পরিমাণে আয়রনও।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *