আজ খবর ডেস্ক:
Parenting Tips বাবা-মা হওয়া মুখের কথা নয়। সহজ তো একেবারেই নয়। বহু ক্ষেত্রেই নিজের শখ-আহ্লাদ এমনকী, কেরিয়ার (Career) বিসর্জন দিতে হয় বাচ্চা মানুষ করার জন্য (Parenting Tips)।
শুধু শিশুর শরীরের দিকেই নয়, নজর রাখতে হয় তার মানসিক বিকাশের দিকেও।
একটু একটু করে বড় হয়ে ওঠার একটা পর্যায়ে শিশুদের যে সমস্যাগুলি অভিভাবকদের ভাবায়, তার অন্যতম হল সন্তানের মিথ্যা কথা বলার প্রবণতা। মনোবিদদের (Child Psychiatrist) মতে, বকুনি খাওয়ার ভয়ে মিথ্যা বলা দিয়েই এই অভ্যাস শুরু হয়। পরে এটাই বড়সড় আকার ধারণ করে। শুধু তা-ই নয়, কথায় কথায় মিথ্যা বলার এই স্বভাব শিশুর জীবনেও নানা ক্ষতি করে। ফলে গোড়াতেই সাবধান হওয়া দরকার বাবা-মায়ের।
মনে রাখতে হবে, প্রয়োজনে বা অনভিপ্রেত পরিস্থিতির মোকাবিলায় মিথ্যে কথা বলা এক জিনিস। কিন্তু তা যদি অভ্যাসে পরিণত হয়, সেখান থেকে বেরিয়ে আসা সত্যিই মুশকিল। একই বিষয় শিশুদের ক্ষেত্রে আরেকটু জটিল হয়ে দাঁড়ায়। কারণ, শিশুরা ঘটনার গুরুত্ব বোঝে না। কারোর মুখে শোনা কোনও কথা অথবা টিভি বা মোবাইলে দেখা দৃশ্য নিজের মতো করে বানিয়ে নিয়ে কিছু বললে তা থেকে তুলকালাম পরিস্থিতিও তৈরি হতে পারে।
অনেক সময় বড়দের নজর নিজের দিকে টানতে (Attention Seeker) মিথ্যে বলে। কখনও কল্পনার আশ্রয় নিয়ে মিথ্যে বলে। মনে রাখতে হবে, শাসন বা মারধর না করেও এই স্বভাব রুখে দেওয়া যায়।
১) শিশুকে প্রথম থেকেই গল্পের ছলে মনীষীদের জীবনী, ঈশপের গল্প, নীতিকথা শেখান। বড় মানুষরা কেউ মিথ্যা পছন্দ করতেন না অথবা মিথ্যা বিষয়টা খুব একটা গ্রহণযোগ্য নয়— সে ধারণা ছোট থেকেই তাদের মনের মধ্যে ঢুকিয়ে দিন।
২) শিশুদের সামনে যতটা সম্ভব মিথ্যে এড়িয়ে চলুন। ওরা কিন্তু অভিভাবকদের থেকেই সবচেয়ে বেশি শেখে।
৩) মিথ্যা বলা কতটা খারাপ কিংবা বাড়ির সবাই মিথ্যে বলাকে কতটা অপছন্দ করেন— সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা শিশুকে দিন। মিথ্যে বললে বকাবকি না করে ওর সঙ্গে খানিক ক্ষণ কথা বলা বন্ধ করে দিন, দেখুন তাতে সমস্যা কমে কী না।
৪) সন্তান কোন বন্ধুর সঙ্গে মিশছে, সে দিকে লক্ষ রাখুন। তার চারপাশের বন্ধুরা কেমন, কোন আর্থসামাজিক পরিবেশ থেকে উঠে এসেছে; সে বিষয়ে সতর্ক থাকুন। তাদের মধ্যে কারও মিথ্যা বলার প্রবণতা থাকলে তা যেন আপনার শিশুকে প্রভাবিত না করে, সেটা খেয়াল রাখুন।
৫) কোনটা মিথ্যে আর কোনটা কল্পনা, তা আগে নিজেরা বুঝুন। কোনও কোনও কল্পনা শিশু বয়সের জন্যই নির্ধারিত। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে তা কেটেও যায়। কাজেই ছোটখাটো কল্পনাকে মিথ্যা ভেবে অযথা দুশ্চিন্তা করবেন না। শাসনের বাড়াবাড়ি নয়, দরকারে মনোবিদের পরামর্শ নেওয়াই ভাল।