আজ খবর ডেস্ক:
বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস! অতীতে অসংখ্য মামলা হয়েছে এই বিষয়ে, পথে নেমেছেন নারীবাদীরা (Feminist)। এই ইস্যুতে সম্প্রতি দেশের শীর্ষ আদালত (Supreme Court of India) তাক লাগানো পর্যবেক্ষণ জানাল। নিম্ন আদালত ও দিল্লি হাইকোর্ট (Delhi High Court) ঘুরে একটি মামলা এসেছিল সুপ্রিম কোর্টে।
সেই মামলায় সুপ্রিম পর্যবেক্ষণ, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পরে তা পূরণ না হলে তাকে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি বলা যাবে না। সেক্ষেত্রে কোন পরিস্থিতিতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সেটাও ভেবে দেখা উচিত।

বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের (Pre Marital Sex/ Rape) মামলায় অভিযুক্তকে মুক্তি দিতে গিয়েই এমন যুক্তি দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের (supreme court) বিচারপতি অজয় রাস্তোগি এবং বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদীর ডিভিশন বেঞ্চ।
বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণা ও ধর্ষণ সংক্রান্ত একটি মামলায় অভিযোগকারী মহিলা জানান, তাঁকে ঠকিয়ে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে ১০ বছরের সাজা দেওয়া হয়। পরে ওই মামলা সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আসে। দুই বিচারপতির বেঞ্চ মামলাটি পর্যবেক্ষণ করে রায় দেয়, ওই ব্যক্তিকে ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা ঠিক হয়নি। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পরে তা পূরণ না হলে সেটাকেও মিথ্যা প্রতিশ্রুতি বলা যাবে না।

বেঞ্চ বলছে, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে মহিলার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের পর হয়ত পুরুষটির পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি বদলে গেছে। সে কারণে তাঁর পক্ষে ওই মহিলার সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করা সম্ভব হয়নি। তার অর্থ এটা নয় যে পুরুষটি মহিলার সঙ্গে প্রতারণা করেছে বা আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভেঙেছে।

এই মামলার ক্ষেত্রে অভিযোগকারিনী নিজে বিবাহিত ও তিন সন্তানের মা। তারপরেও তিনি একজনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান ও একসঙ্গে থাকাও শুরু করেন। পরে জানতে পারেন সেই ব্যক্তিও বিবাহিত এবং তিনি ওই মহিলাকে বিয়ে করতে পারছেন না।

বেঞ্চের মত, বিনা সম্মতিতে কিংবা জোর করে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হলে তাকে ধর্ষণ বলা হয়। কিন্তু প্রাপ্তবয়স্ক দু’জন মানুষ নিজেদের ইচ্ছায় যৌন সম্পর্ক স্থাপন করলে তাকে কোনও ভাবে ধর্ষণ বলা যায় না। প্রতারণা বা মিথ্যা কোনও পরিচয় দিয়ে এই সম্পর্ক করলে সেটা অন্য কথা।
এই মামলার অভিযুক্ত একজন বিবাহিত পুরুষ যিনি ওই মহিলার বাড়ির কাছাকাছিই থাকেন। অভিযোগকারিনীর দাবি, ওই ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক তৈরি হয় এবং তাঁরা একসঙ্গে থাকা শুরু করেন। দুই বাড়িতেই ব্যাপারটা জানাজানি হলে মহিলার স্বামী তাঁকে ছেড়ে দেন।

বিবাহবিচ্ছেদের পরে অভিযোগকারিনী ওই ব্যক্তির বাড়িতে যান এবং জানতে পারেন সেই ব্যক্তিও বিবাহিত ও তাঁর একটি সন্তান রয়েছে। যদিও তাঁরা অন্য জায়গায় একসঙ্গে থাকা শুরু করেন। অভিযোগকারিনীর দাবি, এখন সেই ব্যক্তি তাঁকে বিয়ে করতে নারাজ। সেই কারণেই মিথ্যা প্রতিশ্রুতির অভিযোগ আনেন তিনি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *