আজ খবর ডেস্ক:
Raniganj Coal Mine অবৈধ এবং অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কয়লা (Coal) উত্তোলন হচ্ছে। তার জন্য রানিগঞ্জ (Raniganj), আসানসোল (Asansol) কয়লাখনি অঞ্চলে বারবার ধস দেখা যায়। এই সব এলাকা ধসপ্রবণ বলে ইতিমধ্যেই চিহ্নিত হয়েছিল। কেবলমাত্র রেললাইনের পার্শ্ববর্তী এলাকা এবং রানিগঞ্জ কয়লা খনির কিছু অংশ বাদ দিলে প্রায় সমস্ত এলাকাই ধসপ্রবণ।

আজ থেকে ১৪-১৫ বছর আগে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের ওপর ধস নামে। এমনকী, নিমচাতে এখনও আগুন রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এখন একটি বেসরকারি সংস্থা মিথেন (Methane) উত্তোলন করছে। যার ফলে ওই মিথেন গ্যাস থেকে আগুন লাগার যে সম্ভাবনা ছিল তা অনেকটাই কমে গিয়েছে।
কিন্তু বিপদের এখানেই শেষ নয়। বস্তুত রানীগঞ্জ কয়লা খনি সংলগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকা যে কোনও দিন বসে যেতে পারে। Raniganj Coal Mine

উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠের (Joshimath, Uttarakhand) মত অবস্থা হতে পারে রানিগঞ্জের। প্রায় ২০ হাজার মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
সম্প্রতি সাংবাদিকদের সঙ্গে উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলার সময় মমতা তুলে ধরেন রানিগঞ্জে ধসের প্রসঙ্গ। মমতার আশঙ্কা, জোশীমঠের মত পরিণতি হতে পারে পশ্চিম বর্ধমানের কয়লাখনি অঞ্চল রানিগঞ্জের। নতুন করে বাড়ি তৈরি করে না দিলে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে বলেও আশঙ্কা তাঁর। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগও তুলেছেন তিনি।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘অত্যন্ত বিপজ্জনক পরিস্থিতি জোশীমঠে। আগে বন্দোবস্ত করলে এই দিন দেখতে হত না। একই অবস্থা রানিগঞ্জে। গত ১০ বছর ধরে এটা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আমরা লড়াই করছি। যে টাকা দেওয়ার কথা ছিল, কিছুই দেয়নি। ধস নামলে ২০ হাজার মানুষ মরে যেতে পারে যদি আমরা ঘর না বানিয়ে দিই। আজ পর্যন্ত টাকা দিল না। আমাদের যা ছিল তা দিয়েই বানিয়েছিল। কিন্তু আরও টাকা লাগবে। অন্তত ৩০ হাজার মানুষ প্রভাবিত হতে পারেন।’’

সম্প্রতি জোশীমঠে ধস এবং ফাটলের জেরে তৈরি হয়েছে ভয়াবহ পরিস্থিতি। সেখানে ভেঙে ফেলতে হয়েছে একাধিক বাড়ি এবং হোটেল। পাহাড়ি ওই এলাকার মত ধসের দৃশ্য বার বার দেখা গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গে রানিগঞ্জেও। মাটির ফাটল থেকে অনেক বার বেরোতে দেখা গিয়েছে ধোঁয়া এবং আগুন। আবার কোথাও কোথাও ধসও নেমেছে।
যদিও, বিশেষজ্ঞদের মতে জোশীমঠের তুলনায় রানিগঞ্জের পরিস্থিতির ভয়াবহতা দৃশ্যত অনেকটাই কম। রানিগঞ্জ ধসপ্রবণ এলাকা মানলেও, জোশীমঠের সঙ্গে তুলনা টানতে নারাজ স্থানীয় বাসিন্দারাও।

আবার এই বাসিন্দাদের একাংশ বলছেন, গত কয়েক বছরে বেআইনি ভাবে প্রচুর কয়লা তোলা হয়েছে। তাঁদের দাবি, শহরটাকে বাঁচাতে হবে।
আসানসোলের প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ তথা
আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান বংশগোপাল চৌধুরীরও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের পক্ষে সওয়াল করেছেন। কেন্দ্রকে বিঁধে বংশগোপালের বক্তব্য, ‘‘শিল্পাঞ্চলে ধস নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার কোনও দিনই মাথা ঘামায়নি। কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের উচিত এই এলাকার ভূতাত্ত্বিক রিপোর্ট অনুযায়ী ধস রুখতে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় তা ঠিক করা।”

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *