আজ খবর ডেস্ক- করোনা আবহে, ডিজিটাল ভারতের অন্যতম সহায় অ্যাপ নির্ভর পরিষেবা। সে গাড়ি হোক অথবা ঘরের দরজায় খাবার বা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পৌঁছে দেওয়া।
দিন কয়েক আগেই, এই শহরের খাবার পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া “ডেলিভারি বয়”দের একাংশকে নিজেদের সংগঠনে যুক্ত করে সিপিএম পরিচালিত ট্রেড ইউনিয়ন সিটু। এর আগে শহরের একাধিক এলাকায় দাবি আদায়ের জন্য বিক্ষোভ কর্মসূচি এবং জমায়েত করেছিলেন তাঁরা। গতকাল দিনভর ডিভাইস(device) বন্ধ রেখে প্রতিবাদ জানালেন সুইগির কর্মীরা।
তাঁদের বক্তব্য, খাবার অর্ডার করার ২০-২৫ মিনিটের মধ্যে বাড়িতে খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন ওঁরা।
এই লকডাউনের মধ্যেও রাস্তায় আছেন ডেলিভারি ওয়ার্কাররা। #SWIGGY #ZOMATO #Amazon, #Flipkart, #Domimo’s সহ বহু কোম্পানির পোশাক পরে খাবার ও অন্যান্য জিনিস বহন করে আপনার দরজায় পৌঁছে দিচ্ছেন এই কর্মীরা।
প্রতিটি খাবার ওর্ডার ডেলিভারি দিলে এই কর্মীরা পান ৫কিমি পর্যন্ত ১৫ বা ২০টাকা। আর তার বেশি হলে ৫ টাকা প্রতি কিমি।
১০ ঘন্টা অনলাইন থাকলে ও ন্যূনতম ৬ টা ডেলিভারি করতে পারলে একটা ইনসেন্টিভ পান।
এই কর্মীদের অভিযোগ, এত দিন:
১৪ টা অর্ডার ডেলিভারি দিলে মিলত ৭২৫ টাকা
১৮ টা অর্ডার ডেলিভারিতে ৯৫০টাকা এবং ২৪ টা অর্ডার ডেলিভারিতে ১৩৫০টাকা দেওয়া হত কোম্পানির তরফে।
কিন্তু এখন কোম্পানি যেটা করতে চাইছে:
১৫ টা অর্ডার ডেলিভারিতে ৭৫০টাকা, ২০ টা অর্ডার ডেলিভারিতে ১০০০টাকা এবং
২৫ টা অর্ডার ডেলিভারিতে ১৪০০টাকা দেবে।
কিন্তু এই ইনসেন্টিভ কেবল মাত্র শনি রবিবার। অন্যান্য দিন কোনও ইনসেন্টিভ থাকবে না।
ফলে অন্য দিন ২০ টা ডেলিভারিতে ৫০০-৬০০ টাকা জুটবে।
জ্বালানি তেলের দাম যা তাতে ১০-১২ ঘন্টা রাস্তায় থেকেও ৩০০ টাকা রোজগার করা সম্ভব নয়।
একই সঙ্গে তাঁদের অভিযোগ, রাস্তায় পুলিশের হয়রানির মুখে পড়তে হয় তাঁদের। আবার ডেলিভারি পৌঁছতে দেরি হলে কাস্টমারদের থেকে ধমক, এমনকি শারীরিক নিগ্রহের মুখেও পড়তে হয়।
এই ভয়ানক সংক্রমণের সময় পেটের টানে রাস্তায় থাকতে হচ্ছে।
কোম্পানির সঙ্গে কোনও ভাবেই কথা বলা যাচ্ছে না।
কারণ এই সব বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান এঁদের কর্মী বলে মনে করে না। পোশাকি নাম ডেলিভারি পার্টনার(delivery partner)।
যেহেতু এই কোম্পানিগুলো এঁদের কর্মী মনে করে না তাই পিএফ(PF), ই এস আই(ESI), গ্রাচুইটি(gratuity) কিছুই নেই। নেই ছুটির দিন।
কোনো উপায় না পেয়ে বুধবার সুইগির কর্মীরা প্রতিবাদ করে ডিভাইস অফ রেখেছিলেন।
কোনও ডেলিভারি করেননি। সল্টলেকের রাস্তায় বসে ছিলেন। ফলে সাধারণ মানুষের অসুবিধা হয়েছে। কিন্তু এই কর্মীরা জানাচ্ছেন, নিতান্তই নিরুপায় হয়েই এই সিন্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছিলেন তাঁরা।
GIG workers union ( CITU) এর পক্ষ থেকে এই আন্দোলন কে সমর্থন করা হয়েছে। সিটুর পক্ষ থেকে ইন্দ্রজিৎ ঘোষ জানিয়েছেন, আগামীদিনেও এই ডেলিভারি কর্মীদের পাশে থাকবে শ্রমিক সংগঠন সিটু। সমস্যার নিরসন না হলে পরবর্তী সময়ে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।