আজ খবর ডেস্ক: পুরনো বাংলা একটি ছবির সংলাপ ছিল, “মা হওয়া কী মুখের কথা”!
সত্যিই যেন তাই। প্রথমে কম বেশি ৯মাস গর্ভে ধারণ। আর তারপরে সন্তান প্রসবের এই মুহূর্ত।
এতদিন প্রসব যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকা অন্তঃসত্ত্বারা প্রসবের সময় বাড়ির কাউকেই পাশে পেতেন না। শুধুই হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স। গ্রামীণ স্বাস্থ্য কেন্দ্র হোক বা শহরের ঝাঁ চকচকে হাসপাতাল, বাড়ির কোনও সদস্যেরই প্রসবকালীন সময়ে প্রবেশাধিকার ছিল না। এবার খুলতে চলেছে এক নতুন দিগন্ত। বছরের শুরুতেই নয়া উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকার। যার নাম দেওয়া হয়য়েছে “প্রসব সাথী”। ইতিমধ্যেই রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে এই বিশেষ নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।


শহর কলকাতায় এখন আর খুব বেশি স্বাভাবিক প্রসব(normal delivery) হয় না। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, একটু মফস্বল বা গ্রামের দিকে বিশেষত প্রথম প্রসবের সময় অন্তঃস্বত্তাকে হাঁটানো এবং অন্যান্য বিশেষ পজিশনে রাখা প্রয়োজন হয়।
এই কঠিন সময়ে অন্তঃস্বত্তার কাছে তাঁর মা বা কাছের কেউ থাকলে প্রসূতিকে তাঁরা মানসিকভাবে সাহস যোগাতে পারবেন। সেই কথা মাথায় রেখেই এই নয়া উদ্যোগ রাজ্য সরকারের।

রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের এই উদ্যোগের ফলে, এবার প্রসবের সময় মা, মাতৃ সমতুল্য কেউ বা স্বামী সরকারি হাসপাতালে অন্তঃস্বত্তার সঙ্গে উপস্থিত থাকতে পারবেন।
সরকারি হাসপাতালের পাশাপশি জেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র, মাতৃসদনগুলোতেও এই মর্মে নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে।
তবে, কেবলমাত্র ‘স্বাভাবিক প্রসব’-এর ক্ষেত্রেই এই সুবিধা পাওয়া যাবে।
সিজারের ক্ষেত্রে এই সুবিধা থাকবে না বলেই স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।


সাধারভাবে সরকারি হাসপাতালের লেবার রুমে পুরুষদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। তবে “প্রসব সাথী” উদ্যোগের ফলে প্রসবের সময় অন্তঃস্বত্তার স্বামীও লেবার রুমে(labour room) থাকতে পারবেন। সেক্ষেত্রে অন্যান্য প্রসূতিদের গোপনীয়তা বজায় রাখার বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিশেষ ভাবে যত্ন নিতে হবে। সতর্ক থাকতে হবে কোনও ধরণের সংক্রমণের বিষয়েও।

চিকিৎসকমহলের একাংশ রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগকে যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলেই মনে করছে। জানা গিয়েছে, এই সমস্ত “প্রসব সাথী”রা যাতে লেবার রুমে ঢুকতে পারেন তার জন্য তাদের বিশেষ কার্ড বা ব্যাজ দেওয়া হবে।
পাশাপাশি, যে সমস্ত হাসপাতালে বেডের সংখ্যা কম রয়েছে সেই সব হাসপাতালগুলোতে বেড বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, কোভিড পরিস্থিতি চলার কারণে “প্রসব সাথী”দের মাস্ক এবং অন্যান্য কোভিড বিধি মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


সন্তান ধারণের দায় এবং দায়িত্ব যে বাবা এবং মা দুজনেরই, রাজ্য সরকারের তরফে তা যেন আরও একবার মনে করিয়ে দেওয়া হল। বলছেন, নারী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত সমাজকর্মীরা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *