আজ খবর ডেস্ক- একজন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। অপরজন সাংবিধানিক প্রধান। প্রথামাফিক একে অপরের সঙ্গে সৌজন্যের মোড়কে আবদ্ধ থাকায় বাঞ্ছনীয়।
কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জগদীপ ধনখড়ের সম্পর্ক “অম্লমধুর” কিনা, তা তাঁরাই বলতে পারবেন।
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হিসেবে কার্যভার গ্রহণ করার পর থেকেই নিরন্তর একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপাল। এবার সমাজ মাধ্যমে রাজ্যপালকে “ব্লক” করলেন মুখ্যমন্ত্রী। নিজেই জানালেন সাংবাদিকদের।
মমতা বলেন, “উনি যা ইচ্ছে তাই করছেন। যা মনে করছেন তাই করছেন। আমি আজ সকালে বাধ্য হলাম ওঁকে টুইটার( twitter) অ্যাকাউন্টে ব্লক করে দিয়েছি”।

মমতা এদিন রাজ্যপাল প্রসঙ্গে কার্যত রেগে গিয়ে বলেন, ” উনি প্রতিদিন একটা করে টুইট (tweet) করে আমাকে, আমার সরকার কে, আমার সরকারের অফিসারদের গালাগালি দেন। উনি আমাদের মনে করেন বন্ডেড লেবার(bonded labour)”।
মমতা এদিন ভরা সাংবাদিক সম্মেলনে দাবি করেন, রাজ্যপাল সবাইকে ভয় দেখাবার কাজ করে যাচ্ছেন। সবাইকে “থ্রেট” করছেন। মমতা বলেন, “কী মনে করছেন উনি নিজেকে? আমি গত এক দেড় বছর ধরে কেন্দ্রকে বলে যাচ্ছি, চিঠি লিখেছি তবু এখনও অনেকগুলো ফাইল ক্লিয়ার করেননি। পলিসি ডিসিশন তো উনি ঠিক করবেন না। এটা সরকারের সিদ্ধান্ত।” মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, রাজ্যপাল বারবার বিভিন্ন সরকারি সিদ্ধান্তের ক্লারিফিকেশন চাইছেন।

রাজনৈতিক মহলের মতে, সম্প্রতিক হাওড়া বালি পুরসভা পৃথকীকরণের বিলে সই করেননি রাজ্যপাল। ফলে হাওড়া পুরভোট আটকে আছে। অথচ প্রকাশ্যে রাজ্যপাল বলছেন, তাঁর কাছে কোনও ফাইল আটকে নেই। এই প্রসঙ্গ তুলেই রাজ্যপালকে কটাক্ষ করেছেন মমতা।
বিস্ফোরক ভাবে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রকে ৪ বার চিঠি দিয়েছে রাজ্য সরকার। এই রাজ্যপালকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য। অথচ কর্ণপাত করেনি কেন্দ্র। আবার এদিনই দিল্লিতে লোকসভার বাজেট সেশন চলাকালীন বর্ষীয়াণ সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দের(ramnath kovind) কাছে রাজ্যপালের নামে রীতিমত নালিশ জানান।

মমতা এদিন আরও ভয়ানক অভিযোগ তোলেন রাজ্যপালের বিরুদ্ধে। রাজভোবন কে পেগাসাসের(Pegasus) কেন্দ্র দাবি করে মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত সকলের ফোন ট্যাপ করা হচ্ছে রাজ্যভবন থেকে।
তবে শুধু মমতাই নন, গোটা তৃণমূল কংগ্রেস দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে, রাজ্যপাল আদতে বিজেপির প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন।
মুখ্যমন্ত্রী বনাম রাজ্যপাল এই নজিরবিহীন সংঘাত এখন কোন দিকে গড়ায়, সেদিকেই নজর সবার।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *