আজ খবর ডেস্ক- বাজারে গেলেই পকেটে যেন ছ্যাঁকা লাগছে। গত কয়েক মাসে চড়চড় করে বেড়েছে মুরগির মাংসের দাম। শুরু হয়েছিল শে অক্টোবর থেকে। ডিসেম্বরে বিয়ের মাস পড়তেই কেজিপ্রতি ২০০র গণ্ডি পেরিয়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম।
দেশি মুরগি আরও মহার্ঘ। আর সব থেকে বড় কথা শহরাঞ্চলের যেখানে সেখানে দেশি মুরগি তেমনভাবে বিক্রিও হয় না। এই পরিস্থিতিতে মাথায় হাত রাজ্যবাসীর। কারণ মাছে ভাতে বাঙালি অন্তত সপ্তাহান্তে ছুটির দুপুরে একটু মুরগির মাংস দিয়ে ভাত খেতে পছন্দ করে।
এমনিতেই গত কয়েক মাসে পাঁঠার মাংসের দাম মধ্যবিত্তের নাগালের অনেকটাই বাইরে। খোলাবাজারে কেজি প্রতি পাঁঠার মাংস কম বেশি ৭৫০ টাকায় বিকোচ্ছে। অগত্যা ভরসা মুরগি। শহরের খোলাবাজারে এই মুরগির মাংস কমবেশি ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গিলে মেটে সহ কেজিপ্রতি মুরগির মাংসের দাম কমবেশি ১৭০ টাকা। পাইকারি বাজারে গোটা মুরগির দাম কেজি প্রতি কম বেশি ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা। এমনকি সরকারি ন্যায্যমূল্যের দোকানেও
কেজিপ্রতি মুরগির মাংসের দাম প্রায় ২০০ টাকা।
দূর্গা পুজোর পর থেকেই প্রথমে একটু একটু করে বাড়তে থাকে ডিমের দাম। খোলাবাজারে কমবেশি ৯টাকা জোড়ায় ডিম বিকিয়েছে। ব্যবসায়ীদের একাংশ তখন বলেছিলেন, সামনে ক্রিসমাস এবং ইংরেজি নতুন বছর থাকায় কেক বানানো হচ্ছে। আর কেকের জন্য ডিম অত্যাবশ্যকীয় উপাদান। সেই কারণেই বাড়ছে ডিমের দাম।
এই পরিস্থিতিতে মুরগির মাংসের দাম এত বাড়ছে কেন? প্রশ্ন সাধারণ মানুষের মধ্যে। বিশেষত বিয়ের মরসুম চলছে। বিয়ে বাড়িতে আমন্ত্রিতদের পাতে মাংস তো দিতেই হবে।
সরকারি সূত্রে জানানো হচ্ছে, করণার কারণে রাজ্যের হ্যাচারি(hatchery) শিল্প মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের গ্রামে গ্রামে কার্যত কুটির শিল্পের মত হাঁস মুরগি পালন করা হয়। বাড়ির মহিলাদের এই কাজ করার জন্য বিশেষ প্রকল্প ঘোষণা করেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু করোনার কারণে সেই কুটির শিল্প অনেকটাই কমে গেছে। একটু বড় আকারে যারা “পোল্ট্রি” চালাতেন, তাঁদের মধ্যেও অনেকেই সেই কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন।
চাহিদা রয়েছে অথচ যোগান নেই। অর্থনীতির সার্বিক নিয়ম মেনেই তাই দাম বাড়ছে মুরগির মাংসের। ভরসা করতে হচ্ছে অন্ধ্রপ্রদেশ সহ অন্যান্য রাজ্য থেকে আমদানির ওপর। ফলে রোড ট্যাক্সের কারণেই দাম অনেকটা বেড়ে যাচ্ছে।
তার ওপরে রয়েছে পেট্রোল-ডিজেলের অতিরিক্ত দাম। খামখেয়ালি আবহাওয়ার কারণে অসময় বর্ষা হওয়ায় ঠিকমত চাষ হয়নি। ফলে সবজির দামও অনেকটাই বেড়েছে। অগত্যা, আপাতত মাথায় হাত দিয়ে হা হুতাশ করা ছাড়া উপায় নেই মধ্যবিত্ত বাঙালির।