আজ খবর ডেস্ক- সরকারি পদে কর্মী নিয়োগ নিয়ে আরেকবার কলকাতা হাই কোর্টে ধাক্কা খেল রাজ্য। অতীতে একাধিক বার স্কুল সার্ভিস কমিশনের(SSC) শিক্ষক নিয়োগে গরমিলের অভিযোগ উঠেছে রাজ্যের বিরুদ্ধে।
নবম থেকে দ্বাদশ ( SLST) নিয়োগ নিয়ে ও কোর্টে ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছে শিক্ষা দপ্তরকে। আর এবার চতুর্থ শ্রেণির (group d) কর্মী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট।
বুধবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চের নির্দেশ, নিয়ম না মেনে যে ৫৭৩ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে তাঁদের বরখাস্ত করতে হবে। ওই নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে বলে পর্যবেক্ষণ আদালতের।
একই সঙ্গে হাইকোর্ট জানিয়েছে, এত দিন পর্যন্ত ওই কর্মীদের যা বেতন দেওয়া হয়েছে তা পুনরুদ্ধার করতে হবে। সেই কাজ সম্পাদনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলা স্কুল পর্যবেক্ষকদের। পাশাপাশি, এই ঘটনার তদন্তে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ যে কমিটি গঠন করেছিল সেই কমিটিকেও পাঁচ দিনের মধ্যে প্রাথমিক রিপোর্ট দিতে বলেছে একক বেঞ্চ। তবে রাজ্য প্রশাসন সবথেকে চিন্তায় পড়েছে কর্মীদের দেওয়া বেতন কী ভাবে ফিরিয়ে নেওয়া হবে!
গ্রুপ-ডি পদে নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জিতকুমার বাগের নেতৃত্বে তৈরি কমিটি ওই তদন্ত করছে। তাদের আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারির তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট পেশের নির্দেশ আদালতের
শুরুতে মামলাকারীদের অভিযোগ ছিল, দুর্নীতি করে ২৫ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে গ্রুপ ডি কর্মী হিসেবে। এবং এঁরা প্রত্যেকেই নাকি শাসক দলের ঘনিষ্ঠ। বস্তুত, বিরোধীদের অভিযোগ, ঠিক যে ভাবে সিভিক পুলিশ ( civic police) নিয়োগের ক্ষেত্রে বেছে বেছে তৃণমূল ঘনিষ্ঠ কর্মীদের নিয়োগ করা হয়েছে, স্কুলে গ্রুপ ডি পদেও তাই হয়েছে।
এমনকি, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে ওই কর্মীদের বেতন বন্ধেরও নির্দেশ দেয় আদালত। পরবর্তী সময়ে আরও ৫০০-রও বেশি পদে অস্বচ্ছ নিয়োগের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই কর্মীদের বেতন বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়।
মামলাকারী পক্ষের আইনজীবী সুদীপ্ত সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘আদালতের পর্যবেক্ষণ, এ ক্ষেত্রে আকাশছোঁয়া দুর্নীতি হয়েছে। জনগণের টাকা থেকে এ রকম দুর্নীতি হতে পারে না। তাই বেতন ফিরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।’’
পুরিভোটের প্রার্থী তালিকা নিয়ে এই ডামাডোলের মধ্যে হাইকোর্টের এই নির্দেশ শাসক দলের কপালে যে চিন্তার ভাঁজ ফেলবে সে বিষয়ে কার্যত নিশ্চিত ওয়াকিবহাল মহল।