আজ খবর ডেস্ক- শাসক-বিরোধী তরজায় সকাল থেকে সরগরম রাজ্য। বঙ্গের ৪ পুরসভার ভোট চলছে। উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়ি আর দক্ষিণে আসানসোল, চন্দননগর, বিধাননগর।
তবে এর মধ্যে সব থেকে বেশি গন্ডগোলের অভিযোগ এখনও পর্যন্ত এসেছে বিধাননগর থেকে। দুই মহিলা প্রার্থীর হাতাহাতি থেকে ভুয়ো ভোটার আটক ঘিরে নজরে কলকাতা লাগোয়া এই পুরসভা।
রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রে পাওয়া তথ্য বলছে, সকাল ১১ টা পর্যন্ত ভোটের হার কম বেশি ৩০শতাংশ।
আসানসোল ৩০.৪২শতাংশ
বিধাননগর ২৯.৮১ শতাংশ
চন্দননগর ২৫.৬৯ শতাংশ
শিলিগুড়ি ২৮.০৭ শতাংশ
এবার এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, সকাল থেকে কোথায় কোথায় কী কী ঘটনা ঘটল:
১)বিধাননগরের ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থীর অভিযোগ, দলীয় প্রতীক নিয়ে বুথে ঘুরছেন তৃণমূল প্রার্থী। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে বচসা বেধে যায়।
পরে মারামারিতে জড়িয়ে পড়লেন ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি ও তৃণমূল প্রার্থী। বিজেপি প্রার্থীর অভিযোগ, তৃণমূল বহিরাগতদের দিয়ে ভোট লুঠ করার চেষ্টা করছে। বিজেপি প্রার্থীর আরও অভিযোগ, দলীয় প্রতীক নিয়ে বুথে ঘুরছেন তৃণমূল প্রার্থী। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে বচসা বেধে যায়। সেই ছবি ধরা পড়েছে ক্যামেরায়। দেখা গেছে দু’জনই একে অপরের দিকে তেড়ে যাচ্ছেন। সেই সময় আরও কয়েকজন এসে দু’জনকে আলাদ করার চেষ্টা করেন। শুরু হয় ধস্তাধস্তি। ঘটনাটি ঘটে বিধাননগর পুরসভার ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের ১১ নম্বর বুথে।
দুই মহিলা প্রার্থীর হাতাহাতির দৃশ্য দেখার পর ঘটনার রিপোর্ট তলব করে রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
২) আসানসোল পুরনিগমের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থী আদর্শ শর্মার মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ তৃণমূল প্রার্থী শ্যাম সরেনের বিরুদ্ধে। যদিও তৃণমূল প্রার্থী সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
৩)সশস্ত্র রক্ষী নিয়ে কী করে বুথের কাছে বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি? তৃণমূলের অভিযোগের ভিত্তিতে জিতেন্দ্রকে নোটিস দিল পুলিশ। জিতেন্দ্রর দাবি, নিরাপত্তা রক্ষীদের আগেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি একাই ঢুকতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ছাপ্পা ধরে ফেলার ভয়ে তৃণমূল তাঁকে আটকে দিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে আসানসোল পুরনিগমের ধাদকা এলাকায়।
৪) এদিকে চন্দননগরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে জোর করে পুলিশ দিয়ে সিপিএম প্রার্থীর বাড়ির সিসিটিভি বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ। চন্দননগরের নিচুপট্টি এলাকার বাসিন্দা সিপিএম প্রার্থী রেখা তিওয়ারির বাড়ির সিসিটিভি সকালে বন্ধ করার নির্দেশ দেন এলাকার তৃণমূল কর্মীরা। সিপিএম প্রার্থী সেই নির্দেশ অগ্রাহ্য করলে বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে জোর করে সিসিটিভি বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ভোটের জন্য বাড়ির সিসিটিভি কেন বন্ধ করতে হবে, বুঝতে পারছেন না রেখা।
৫)আসানসোলের বার্নপুরে সিপিএমের ক্যাম্প অফিস ভাঙচুর। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। সিপিএম প্রার্থী বহিরাগতদের নিয়ে ঘুরছেন, পাল্টা অভিযোগ তৃণমূলের।
৬) আসানসোলের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থীকে হেনস্থার অভিযোগ। পাল্টা জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে ঘিরে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান তৃণমূলের। জিতেন্দ্রর অভিযোগ, তাঁর স্ত্রীকে হেনস্থা করা হয়েছে। জিতেন্দ্রর স্ত্রী চৈতালি ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে লড়াই করছেন।
৭) শিলিগুড়িতে বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের সঙ্গে পুলিশের বচসা
শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের সঙ্গে পুলিশের বচসা বাধে। তাঁকে বুথে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেন শঙ্কর। পাল্টা তৃণমূলের তরফে, শঙ্করের বিরুদ্ধে ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ করেছে তৃণমূল।
তবে এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত, পুরভোটের হাওয়া বলছে মূল লড়াই চলছে তৃণমূল ও বিজেপি মধ্যে। বিক্ষিপ্তভাবে কোথাও কোথাও লড়াইয়ের মাঠে বাম প্রার্থীদের দেখা গেলেও এখনও পর্যন্ত সেভাবে বামেদের তরফে কোনও অভিযোগ জানানো হয়নি।
যদিও একাধিক এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, বাম ও বিজেপি একজোট হয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছে।