আজ খবর ডেস্ক- ফের গৃহযুদ্ধ তৃণমূল কংগ্রেসে। এতদিন অশান্তি চলছিল ১০৮ টি পুরভোটের প্রার্থী তালিকা নিয়ে। কার্যত শেষ পর্যন্ত যা পৌঁছল তৃণমূল বনাম আই প্যাকের মধ্যে।
এমনকি বিতর্ক এই জায়গাতেও পৌঁছেছে, যেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের একাংশের দাবি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর মধ্যে “চরতা তিক্ততা” তৈরি হয়েছে। এদিনই, বিকেলে কালীঘাটে দলীয় বৈঠক ডেকেছেন খোদ্দামুল নেত্রী। পরিস্থিতি এমন ঘোরালো যে সেই বৈঠকে আদৌ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত থাকবেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এর মধ্যেই এই মুহূর্তে সবথেকে বড় খবর, মাস কয়েক আগে বিজেপি থেকে তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে আসা মুকুল রায় কে গ্রেপ্তারের আর্জি জানালেন প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ এবং বর্তমান দলের অন্যতম মুখপাত্র কুনাল ঘোষ।
সারদা ও নারদা মামলায় মুকুল রায় কে গ্রেফতারের দাবি জানালো তৃণমূলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ।
সিবিআই(CBI) ও ইডি(ED) কে লিখিত আবেদন জানাবেন বলে জানালেন কুণাল নিজেই। পরিস্থিতি এখানেই থেমে নেই। মুকুল রায় কে “সেয়ানা পাগল” বললেন কুনাল ঘোষ। কেন হঠাৎ নিজের দলের নেতা কে এহেন নজিরবিহীন আক্রমণ করলেন কুনাল ঘোষ? এই নিয়ে রীতিমতো চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। মুকুল কে “সেয়ানা পাগল” বলেই থেমে থাকলেন না কুনাল। আরও বললেন, মুকুল রায় দলে ফেরার পর থেকেই দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা ও কোন্দল বৃদ্ধি পেয়েছে।
CBI & ED should arrest BJP leader Mukul Roy in Saradha and Narada case. I have already sent them letter praying joint interrogation with him. He is an influential conspirator. He has used different parties only for his personal protection. Mukul Roy should not be spared.
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) February 11, 2022
শনিবার সকাল থেকেই এমনিতেই সরগরম রাজ্য রাজনীতি। কারণ ৪ পুরসভার ভোট চলছে। এর মধ্যেই কালীঘাটে নিজের বাসভবনে বিকেলে আবার দলের বৈঠক ডেকেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল অর্থাৎ শুক্রবারই, মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ নিয়ে চূড়ান্ত শুনানি ছিল। রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় সেখানে জানিয়ে দেন, বিজেপিতেই আছেন মুকুল। ফলে তাঁর বিধায়ক পদ খারিজ করা যাবে না।
প্রসঙ্গত, খাতায়-কলমে কৃষ্ণনগর উত্তরের বিজেপি বিধায়ক থাকলেও ২০২১ বিধানসভা নির্বাচন শেষ হওয়ার পরেই গত জুন মাসে স-পুত্র তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান মুকুল। তারপরেও কীভাবে তাঁকে রাজ্য বিধানসভায় পাবলিক একাউন্ট কমিটির চেয়ারম্যান করা হল, তানিয়ে আদালতে মামলা করে বিজেপি।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বিধানসভার অধ্যক্ষের কাছে বিষয়টি নিয়ে শুনানির আবেদন জানিয়েছিলেন।
কিন্তু হঠাৎ এই পরিস্থিতিতে কুনাল ঘোষের সাম্প্রতিক বক্তব্য রাজ্য রাজনীতি পারদ কয়েক দফা চড়িয়ে দিল। একদিকে যখন তৃণমূল কংগ্রেসের অন ধরে প্রবল মতানৈক্য চলছে, ঠিক সেই সময় কুণাল ঘোষের এহেন বক্তব্য কি অন্যকিছুর ইঙ্গিতবাহী? উঠেছে প্রশ্ন।
কারণ গতকালই তৃণমূল নেত্রী বনাম তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দ্বন্দ্বের জেরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলের যাবতীয় সাংগঠনিক পদ থেকে পদত্যাগ করতে পারেন বলে খবর হয়েছিল। অন্যদিকে বিশেষ সূত্রের খবর, তৃণমূল অন্দরে কুণাল ঘোষ এই মুহূর্তে “অভিষেক ঘনিষ্ঠ” বলে পরিচিত। আবার অতীতে সারদা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে এক বছরেরও বেশি কারাবাস করতে হয়েছিল কুণালকে।