আজ খবর ডেস্ক:

বিবাহিত? তবু ফের প্রেম এসেছে জীবনে? এ যেন রবি ঠাকুরের সেই গান। “প্রেমের জোয়ারে ভাসাব দোহারে, বাঁধন খুলে দাও…”। কিন্তু, “ভুলিব ভাবনা, পিছনে চাব না, পাল তুলে দাও..” বললেই কি পাল তোলা যায়? পরিবার, সমাজ এই সব কিছুর পিছুটান এড়ানো সহজ নয়। তাই, পরকীয়া অতি বিষম!
একঘেয়ে দাম্পত্যই পরকীয়ার আঁতুড়ঘর। বলছে আধুনিক গবেষণা। আর মনোবিদদের মত, সম্পর্ক পুরনো হলে তাতে একঘেয়েমি আসবেই। জীবনের একটা পর্বে পৌঁছে আমরা সবাই হয়ত আরেকবার জ্বলে উঠতে চাই। পরিবেশ ও পরিস্থিতির কারণে যে ফ্যান্টাসি এতদিন মনের কোণে ঘাড় গুঁজে পড়েছিল, শেষবারের মত তা পাখা মেলতে চায়। তখনই জীবনে আসে পরকীয়া।
পরকীয়ার কোনও বয়েস নেই। নেই লিঙ্গভেদ। সামাজিক বা অর্থনৈতিক বাঁধা ও মানে না। অবাক হওয়ার কী আছে? পরকীয়া তো প্রেমেরই আরেক ধরণ। প্রেম আবার কবে, কোথায় এসব শর্ত মেনে আসে? সংসার যদি টলটলে দীঘি হয়, পরকীয়া তবে পাহাড়ি ঝর্ণা। সোজা বুকে এসে ধাক্কা মারে। তাতে টালমাটাল হয়ে পড়ে চারপাশের সবকিছু।


কেন বাড়ছে পরকীয়া? আপনার জীবনেও কি এসেছে এই “নিশির ডাক”? সব ভেঙে গুড়িয়ে বেরিয়ে পড়ার আগে একবার মিলিয়ে দেখে নিন ঠিক এরকমটাই কি হচ্ছে আপনার সঙ্গে?

অল্প বয়সের বিয়ে। দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা দাম্পত্যে পরস্পরকে দেওয়ার মত নতুন কিছু আর থেকে না। ফুরিয়ে যায় শরীরের উত্তেজনা। তখন সংসার মানে নিছক অভ্যেস। রোজ সকালে উঠে দাঁত মাজার মত অভ্যেসে যৌনতা আসে। তাতে বিরক্তি বাড়ে। এমনটাই মত ম্যারেজ কাউন্সেলরদের। তাই তাঁরা বলছেন, সম্পর্কে কিছু স্পাইস বাঁচিয়ে রাখতে। স্বামী-স্ত্রী নয়, থাকতে হবে বন্ধুর মত। সময় পেলেই একে অপরের কথা শুনুন। বিশেষ সময় কাটান।

প্রকৃতিগত ভাবেই পুরুষ বহুগামী। যদিও সমাজ বদলের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বদলেছে এর সংজ্ঞা। পেশার প্রয়োজনে মেলামেশা বাড়ছে। অফিসে মহিলা সহকর্মীদের সঙ্গে কাটছে বেশি সময়। গবেষণা বলছে, আমাদের দেশে অর্থাৎ ভারতে ৯০শতাংশ পরকীয়া সম্পর্ক তৈরি হচ্ছে অফিসে। অনেক ক্ষেত্রেই পুরুষ বস কে তুষ্ট রাখতে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছেন অধস্তন মহিলা সহকর্মী। উল্টোটাও ঘটছে বইকি।

কোন বয়সে এই পরকীয়ার মাত্রা বাড়ে? সমাজ বিজ্ঞানীরা বলছেন, মূলত ৩০ থেকে ৪৮ বছর বয়সী পুরুষ এবং মহিলা পরকীয়া সম্পর্কে বেশি জড়ান। এখানেই উঠে আসছে সেই অবদমিত ফ্যান্টাসি আর যৌনতার প্রসঙ্গ। শরীরী চাহিদা ফুরিয়ে আসর আগে আরেকবার জ্বলে ওঠে। আগেকার দিনে হামেশাই শোনা যেত ” বেশি বয়েসের সন্তান” এই শব্দবন্ধ। মহিলাদের ও মেনোপজের আগে শারীরিক চাহিদা বাড়ে। যদিও পুরোটাই হরমোনের কারসাজি, তবু তাকেই অনেকে প্রেম ভাবেন।

একাকীত্ব বহু ক্ষেত্রেই পরকীয়ার কারণ হয়। লম্বা সময় বাড়ির বাইরে কাটান স্বামী বা স্ত্রী, অথবা দুজনেই। মানসিক ভাবে কাউকে পাশে চাই। অনেকসময় এক বা দুই বছরের জন্য অফিস বিদেশ পাঠাচ্ছে। কেরিয়ারে উন্নতির হাতছানি। এদিকে লং ডিসটান্স সম্পর্ক। জড়িয়ে পড়ছেন নতুন সম্পর্কে।
মনোবিদ বলছেন, সব সম্পর্কের নাম হয় না। তেমন কোনও সম্পর্কে আপনি থাকতেই পারেন। কিন্তু মানুষ তো আসলে সামাজিক জীব। বিশেষ সম্পর্কে যাওয়ার আগে অবশ্যই ভাবুন, এর থেকে আপনি কী চান? কতটা চান? বারবার একাধিক সম্পর্কে জড়ালে মনের সঙ্গে সঙ্গে তা শরীরকে ও ভাঙতে থাকে। হতাশা গ্রাস করতে পারে আপনাকে। তাই সেটাই করুন যা আপনাকে ভাল রাখবে। খুশি রাখবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *