আজ খবর ডেস্ক- Anubrata Mondal এ যেন সেই বিখ্যাত বাংলা কবিতার লাইন! “কেউ কথা রাখে না, কেউ কথা রাখে নি”।
ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, দাপুটে তৃণমূল নেতা, বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডল হাসপাতালের কেবিনে শুয়ে এখন এই কথাই বলছেন।
শারীরিক কিছু অসুস্থতার থেকেও নাকি তাঁর বুকে শেলসম বিঁধছে অন্য যন্ত্রণা। কথাবার্তাও নাকি অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছেন এখন। তিনি ক্ষুব্ধ। তিনি অভিমানাহত। কারণ, কলকাতার হাসপাতালে এসে ভর্তি হওয়ার পর দলের কোনও নামজাদা নেতা দেখতে যান নি তাঁকে। Anubrata Mondal

গত ৬ই এপ্রিল নিজাম প্যালেসের(Nizam Palace) দিকে রওনা হয়েও শেষ পর্যন্ত এসে থামে এসএসকেএমের(SSKM) গেটে। সেই থেকে উডবার্ন(Woodburn) ওয়ার্ডের দ্বিতলের একটি কেবিন অনুব্রত মণ্ডলের আপাত ঠিকানা।
৫ই এপ্রিল রাতে বোলপুর থেকে কলকাতায় আসেন অনুব্রত। ৬তারিখ সিবিআইয়ের (CBI) ডাকে নিজাম প্যালেসে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা একাধিকবার হাসপাতলে গিয়েছেন এবং সংগ্রহ করেছেন অনুব্রত মণ্ডলের চিকিৎসাসংক্রান্ত যাবতীয় ফাইলপত্র। অন্যদিকে হাসপাতলে ভর্তি হওয়ার পরেই নিজের আইনজীবী মারফত কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে অনুব্রত জানিয়ে দিয়েছিলেন, চাইলে হাসপাতালে বসে জেরাতেও রাজি আছেন তিনি। যদিও এখনও পর্যন্ত সেই পথে হাঁটেননি গোয়েন্দারা।

অনুব্রত মন্ডলের ব্যক্তিগত দেহরক্ষীরা সর্বক্ষণ পাহারায় রয়েছেন তাঁর কেবিনের বাইরে। সেখান থেকেই খবর, বীরভূমের ২ বিধায়ক ছাড়া তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে আর কোন নেতা বা মন্ত্রী দেখতে আসেননি অনুব্রত কে। এঁদের একজন, জেলার নেতা তথা রাজ্যের এমএসএমই(MSME) ও বস্ত্র মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা এবং অপরজন, অনুব্রত’র কার্যত ছায়াসঙ্গী নতুন বিধায়ক রানা সিনহা।
যদিও রানা সিনহা aajkhobor.com কে ফোনে জানিয়েছেন, ৫ ও ৬ তারিখ কলকাতায় থাকলেও তারপরে আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনের প্রচারের জন্য তিনি আসানসোলে চলে গিয়েছিলেন। এখন নিজের জেলা বীরভূমে রয়েছেন।

আর ঠিক এই কারণেই হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে ফুঁসছেন বীরভূমের দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডল। ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি নাকি কিঞ্চিৎ দুঃখ এবং ক্ষোভ ও প্রকাশ করেছেন। তৃণমূল নেত্রী’ প্রিয় শিষ্য “কেষ্ট”কে দলের জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য করলেও কেন এখনো পর্যন্ত কেউ তাকে সশরীরে হাসপাতালে এসে দেখে গেলেন না!
অন্যদিকে অনুব্রত মণ্ডল হাসপাতলে ভর্তি হবার পরেই দলের অন্যতম মুখপাত্র কুণাল ঘোষের বক্তব্য ছিল, “চার চার বার সিবিআই ডাকার পরেও অনুব্রত কেন হাজিরা এড়িয়েছে সেই উত্তর অনুব্রতই দিতে পারবেন”। রাজনৈতিক মহল কুনাল ঘোষের এই বক্তব্যের মধ্যে অন্য তাৎপর্য খুঁজে পাচ্ছে। এই মহলের ব্যাখ্যা, জেলা সভাপতি এবং জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য হওয়া সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার ডাকে হাজিরা দেবেন কিনা সেটা সম্পূর্ণ অনুব্রত মন্ডলের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। এতে দলের আলাদা করে কোনও “নির্দেশ” নেই।
অনুব্রত মণ্ডল সম্পর্কে তাহলে কি দলের তরফে “দায়” ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা চলছে? রাজ্য রাজনীতিতে আপাতত চর্চা চলছে এই নিয়েই।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *