আজ খবর ডেস্ক- Calcutta High Court ২০১২ পার্ক স্ট্রিট ধর্ষণ কাণ্ডের কথা মনে আছে নিশ্চয়ই? সেই তরুণী সুজেট আর বেঁচে নেই। কিন্তু হাই প্রোফাইল সেই ঘটনা এবং তার তদন্ত নিয়ে সেসময় রাজ্যে কম জলঘোলা হয় নি! Calcutta High Court
সেই ধর্ষণ কাণ্ডের তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন আইপিএস(IPS) তথা তৎকালীন জয়েন্ট সিপি ক্রাইম দময়ন্তী সেন (Damayanti Sen)।
শোনা গিয়েছিল, রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে মতবিরোধের জেরে শর্তে হয়েছিল দময়ন্তীকে।
বর্তমানে, দময়ন্তী সেন কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল কমিশনার।এ বার ৪টি ধর্ষণের ঘটনায় তাঁর উপরই দায়িত্ব দিল কলকাতা হাই কোর্ট।

সোমবার আদালতের তরফে জানানো হল, কলকাতা হাইকোর্টের নজরদারিতেই চলবে মাটিয়া, মালদহ, দেগঙ্গা ও বাঁশদ্রোণী ধর্ষণ কাণ্ডের তদন্ত। সিনিয়র আইপিএস অফিসার দময়ন্তী সেনের (Damayanti Sen) নজরদারিতেই হবে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া রাজ্যের ৪ ধর্ষণের তদন্ত।
দময়ন্তী সেনের নিজের যদি এই তদন্ত নজরদারির কাজ করতে কোনও অসুবিধা থাকে, সেক্ষেত্রে তিনি স্বয়ং তা জানাবেন আদালতকে। যদিও, আপাতত রাজ্য পুলিশের তদন্তেই আস্থা রাখছে কলকাতা হাই কোর্ট। রাজ্যকে তদন্তের অগ্রগতি সহ রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
আগামী ২০ এপ্রিলের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে হবে রাজ্যকে। এদিন নির্দেশ দিল প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চ।

শুনানির শুরু থেকেই এই ৪ ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ ছিলেন বিচারপতিরা। চূড়ান্ত নির্দেশ দেওয়ার আগে
প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব বলেন, ”আমরা প্রতিটি ঘটনার দিকে আলাদা করে নজর রাখছি। যদি কোনও ঘটনায় আলাদা করে কোনও আলাদা এজেন্সি বা কোনও বিচারপতির নেতৃত্বে তদন্তের প্রয়োজন হয়, সেটা আদালত করবে।”
রাজ্যের উদ্দেশ্যে প্রধান বিচারপতি বলেন, ”রাজ্যে একের পর এক একই ধরণের ঘটনা ঘটছে। রাজ্যের প্রশাসনিক পরিকাঠামো থাকার পরেও কেন বারংবার এই
ধরনের ঘটনা ঘটছে?”
প্রধান বিচারপতির আরও বলেন, ”এই ধরনের ঘটনায় আমি বাকরুদ্ধ। আগে দিল্লি বা দেশের অন্য জায়গা থেকে এই ধরনের অভিযোগ পাওয়া যেত।”
তবে, রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল আদালতে এদিন বলেন, “এই রাজ্য মহিলাদের জন্য অন্যতম সুরক্ষিত রাজ্য। আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেছি।”

এই প্রতিবেদনের একেবারে শেষে এসে একবার দেখে নেওয়া যেতে পারে, গত ৭ বছর কোথায় ছিলেন ১৯৯৬ ব্যাচের আইপিএস দময়ন্তী সেন?
পার্ক স্ট্রিট গণধর্ষণ কাণ্ডের দু’মাসের মাথায় আইপিএস দময়ন্তী সেনকে বদলি করা হয়েছিল। প্রথমে ব্যারাকপুরে পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে। ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল পদে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, দময়ন্তীর মতো সুদক্ষ অফিসারের জন্য এই পদ ছিল অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ। তবে জানা যায়, পেশাদার দময়ন্তী এই বদলিতে ভেঙে পড়েননি, বরং চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলেন। এরপর এই আইপিএসকে দার্জিলিঙে ডিআইজি রেঞ্জে বদলি করা হয়েছিল। সেখান থেকে দময়ন্তীকে পাঠানো হয় সিআইডি-তে। সিআইডি-তে তিনি ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (ডিআইজি) পদে কাজ করেন।
এর পাশাপাশি রাজ্য পুলিশের আইজি (প্রশাসন) পদেও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রাক্তনী। দময়ন্তী সেনই কলকাতা পুলিশের প্রথম মহিলা গোয়েন্দা প্রধান। কলকাতা পুলিশে যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) পদে দায়িত্ব সামলানোর আগে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব সামলেছিলেন দময়ন্তী। ডিসি (উত্তর), ডিসি (সেন্ট্রাল), ডিসি (ডিডি) পদে কাজ করেছেন এই আইপিএস।
রাজ্যের সাম্প্রতিক ধর্ষণকাণ্ড গুলোর তদন্তে, আদালতের নির্দেশে দময়ন্তীর ফিরে আসা কে কেন্দ্র করে যথেষ্ট চর্চা চলছে রাজ্য প্রশাসনের অন্দরে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *