আজ খবর ডেস্ক: তীব্র কয়লার ঘাটতির জেরে ভারতের কিছু অংশ জুড়ে ব্ল্যাকআউট (blackout), বা লাগাতার “কারেন্ট অফ” দেখা দিয়েছে, যা এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিকে ধ্বংস করতে পারে।

বিদ্যুতের (electricity) চাহিদা বৃদ্ধি মেটাতে না পারায়, উত্তরে পাঞ্জাব এবং উত্তরপ্রদেশ, এবং দক্ষিণে অন্ধ্রপ্রদেশ, বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। কিছু জায়গায় আট ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ থাকছে, যার ফলে মানুষ এই গরমের তাপ সহ্য করতে না পেরে, ব্যয়বহুল বিকল্পগুলি সন্ধান করতে বাধ্য হচ্ছে।

এবিষয়ে অল ইন্ডিয়া পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ার্স ফেডারেশনের চেয়ারম্যান, শৈলেন্দ্র দুবে বলেন, “যদিও ভারতে বিভ্রাট অস্বাভাবিক নয়, তবে এই বছরের পরিস্থিতি, বিশেষ করে বিদ্যুতের সংকটের দিকে ইঙ্গিত করে।” প্রসঙ্গত, ভারতের বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৭০% কয়লা থেকে তৈরি হয়।

ধাতু, মিশ্র ধাতু এবং সিমেন্টের উৎপাদক সহ ছোট এবং বড় ব্যবসাগুলিকে বিদ্যুতের জন্য আরও বেশি ব্যয় করতে হবে। নোমুরা হোল্ডিংস ইনকর্পোরেটেডের (Nomura Holdings) মতে, কয়লার ক্রমাগত ঘাটতি দেশের শিল্প উৎপাদনে প্রভাব ফেলতে পারে।

জাপানি ওই ব্যাঙ্কের কর্তা, সোনাল ভার্মার নেতৃত্বে অর্থনীতিবিদরা ১৯ এপ্রিল একটি গবেষণায় লিখেছিলেন, “ গ্রীষ্মের মৌসুমে, কয়লা পরিবহনের জন্য রেলওয়ে রেকের প্রাপ্যতা এবং কম কয়লা আমদানির কারণে সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে।”

দেশের অনেক জায়গায় তাপমাত্রা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে, আবহাওয়া বিভাগ তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছে। মার্চ মাসে দেশের জাতীয় গড় তাপমাত্রা প্রায় ৩৩.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে, ১৯০১ সাল থেকে এই প্রথম হল।

ভারতীয় পাওয়ার প্ল্যান্টে (power plant) কয়লার (coal) যোগান সম্প্রতি হ্রাস পেয়েছে প্রধানত তিনটি কারণে: নিম্ন অভ্যন্তরীণ উৎপাদন, সীমিত সংখ্যক রেলগাড়ির কারণে পরিবহনের সীমাবদ্ধতা এবং উচ্চ সামুদ্রিক কার্গো হারের ফলে আমদানি হ্রাস।

বিদ্যুৎ মন্ত্রক সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ১৮ই এপ্রিল পর্যন্ত, বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীরা যা কয়লা মজুত রেখেছিল, তাতে গড়ে মাত্র নয় দিন উৎপাদন সম্ভব ছিল। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোল ইন্ডিয়া লিমিটেড (Coal India Limited), এই মাসের প্রথমার্ধে কয়লা উৎপাদন ২৭% বৃদ্ধি করা সত্ত্বেও, “তীব্র চাহিদা” মেটাতে পারছে না।

অল ইন্ডিয়া পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ার্স ফেডারেশনের তরফে, শ্রী দুবে বুধবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে , “রাজ্যগুলিতে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সারা দেশে তাপ কেন্দ্রগুলিতে কয়লার ঘাটতি দেখা যাচ্ছে৷ “তাপ কেন্দ্রগুলিতে অপর্যাপ্ত কয়লা মজুদের কারণে তাদের মধ্যে অনেকেই চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ব্যবধান পূরণ করতে পারছে না।”

বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশজুড়ে গ্রীষ্মকালীন কয়লার সংকট দীর্ঘদিন ধরে একটি নিয়মিত ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে, মূলত দুর্বল পরিকাঠামোর কারণে কোল ইন্ডিয়ার উৎপাদন বাড়াতে অক্ষম।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *