আজ খবর ডেস্ক: মোবাইল ফোন প্রস্তুতকারক সংস্থা শাওমির (Xiaomi) ৫ হাজার ৫২১ কোটি ২৭ লক্ষ টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। প্রসঙ্গত, বিদেশি মুদ্রা লেনদেন আইন-১৯৯৯ (FEMA) অনুযায়ী এই চিনা সংস্থাটির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছে ইডি।


শেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সংস্থার সমস্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে শাওমির বিরুদ্ধে অবৈধ লেনদেনের অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছিল ইডি। তদন্ত শুরুর আড়াই মাসের মধ্যে এই বিপুল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হল।

২০১৪ সালে ভারতে ব্যবসা শুরু করেছিল শাওমি। গত ৮ বছরে ক্রেতাদের মধ্যে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জনের পাশাপাশি ভারতীয় মোবাইল ফোনের বাজারের একটা বড় অংশ এখন এই চিনা সংস্থাটির দখলে। কম দামে আকর্ষণীয় ফিচার পাওয়ার জন্যই মূলত ক্রেতারা এই ফোন কিনে থাকেন।
সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে, প্রথম ৩ বছরে শাওমি যে ভাবে ব্যবসা বাড়িয়েছিল ভারতের বাজারে, পরের ৩ বছরে তা প্রায় ২০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

ইডি জানিয়েছে যে নির্দেশাবলীর ভিত্তিতে রয়্যালটির নামে এত বিপুল পরিমাণ অর্থ প্রেরণ করা হয়েছিল।  অন্য দুটি মার্কিন ভিত্তিক গোষ্ঠীও অর্থ পেয়েছিল কিন্তু ইডি তদন্তে দেখা গেছে যে চূড়ান্ত সুবিধাভোগী ছিল Xiaomi গ্রুপের সংস্থাগুলি৷

সংস্থাটি জানিয়েছে , গ্রুপ সত্তার মধ্যে তৈরি বিভিন্ন অসংলগ্ন ডকুমেন্টারি ফ্যাকাডের আড়ালে, কোম্পানি রয়্যালটির ছদ্মবেশে এই অর্থ বিদেশে প্রেরণ করেছে যা FEMA এর ধারা 4 লঙ্ঘন করে,”।

ইডি সূত্রে খবর, ভারত থেকে ৩টি বিদেশি কোম্পানিতে টাকা পাঠিয়েছে শাওমি। সেই লেনদেনের মধ্যে বিস্তর অসঙ্গতি রয়েছে বলে দাবি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। এই তিনটি কোম্পানির মধ্যে আবার একটি শাওমি গ্রুপের অন্তর্গত। বাকি দুটি মার্কিন সংস্থা।


জানা যাচ্ছে, যে বিপুল পরিমাণ টাকা রয়্যালটির নামে এই তিন বিদেশি সংস্থার অ্যাকাউন্টে গিয়েছে তার অঙ্ক অবাস্তব।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে তদন্ত শুরু হওয়ার পর থেকে শাওমির কাছে যে সমস্ত তথ্য চাওয়া হয়েছিল তা দেওয়ার ক্ষেত্রেও অস্বচ্ছতা রয়েছে। অভিযোগ করছে ইডি। এমনকি, তদন্ত যাতে ভুল দশায় চলে, সেই চেষ্টাও নাকি করেছে এই চিনা সংস্থা। চলতি মাসের শুরুতে, সংস্থার বিশ্বব্যাপী ভাইস প্রেসিডেন্ট, মনু কুমার জৈনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল ইডি।

এদিকে, সামগ্রিকভাবে বিষয়টি নিয়ে সুর ছড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। শনিবার তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রঅভিযোগ করেন, কেন্দ্রের মোদি সরকার Xiaomi থেকে বিপুল পরিমাণে অনুদান গ্রহণ করেছে। অথচ এই সংস্থার বিরুদ্ধে এখন বিদেশী মুদ্রা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট তদন্ত করছে।

মহুয়া মৈত্র টুইট(Tweet) করেন, “ইডি ফরেক্স আইন লঙ্ঘনের জন্য চীনা স্মার্টফোন জায়ান্ট Xiaomi থেকে ৫,৫০০কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে। একই Xiaomi অস্বচ্ছ PM CARES তহবিলে ১০কোটি টাকা দান করেছে”।

শাওমি-র তরফে এই মর্মে একটি বিবৃতি সামনে এসেছে, যেখানে কোম্পানিটি ইডি-র অভিযোগ মানতে অস্বীকার করেছে, এবং বলেছে যে, তারা কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সর্বতোভাবে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *