আজ খবর ডেস্ক: একই দিনে ঈদ (Eid) আর অক্ষয় তৃতীয়া (Akshay Tritiya)। রাজনীতিবিদদের কাছে নিঃসন্দেহে জনসংযোগের জন্য দারুণ উপলক্ষ। স্বভাবতই, সুযোগের পুরোদস্তুর সদ্ব্যবহার করছেন তাঁরা।
যেমন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Manata Banerjee)। এদিন সকালে রেড রোড থেকে সরাসরি পার্কসার্কাসে যান মমতা। ঈদের সকাল কাটান রিজওয়ানুর রহমানের বাড়িতে।


অন্যদিকে হাওড়ার আমতায় আনিস খানের বাড়িতে সকালেই পৌঁছে গিয়েছেন সিপিআইএমের নতুন রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম (Md Salim)।

এই বঙ্গে৩৪ বছর পর রাজনৈতিক পালাবদলের অন্যতম কারণ হিসেবে ধরা হয় রিজওয়ানুর রহমানের মৃত্যু কে। গোটা রাজ্য জুড়ে হইচই ফেলে দেওয়া সেই ঘটনায় কার্যত কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়েছিল পুলিশ এবং প্রশাসনকে।
এদিন মমতার সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Bannerjee)। রিজওয়ানুরের বাড়ির সামনে গিয়ে তাঁর ছবিতে মালা দেন মমতা। বাড়িতে ঢুকে তাঁর মা কিশওয়ার জাহান, দাদা রুকবানুর-সহ পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন।


প্রসঙ্গত, প্রায় ৩ বছর পর রিজওয়ানুরের বাড়িতে গেলেন মমতা। জানিয়ে সকাল থেকেই পাল্টা আক্রমণ শানাছে বিরোধী দল বিজেপি (BJP)।

তবে অনেকেই মনে করেন, পার্কসার্কাসের এই কম্পিউটার শিক্ষক যুবকের মৃত্যু সেসময় নাড়িয়ে দিয়েছিল রাজ্য প্রশাসনের ভিত। এই মৃত্যু একদিকে যেমন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য প্রশাসনকে প্রশ্নের মুখে তুলেছিল, অন্যদিকে তৎকালীন পুলিশ কমিশনার প্রসূন মুখোপাধ্যায় এর ভূমিকা নিয়েও জনমানসে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একটা বড় অংশ সে সময়ে বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।

এদিকে গতকাল রাতেই সিপিআইএমের (CPIM) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, ঈদের দিনটা আনিস খানের (Anis Khan) পরিবারের সঙ্গে কাটাবেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম (Md Salim)।


মঙ্গলবার সকালেই আমতার সারদা গ্রামে পৌঁছে যান সেলিম। সঙ্গে ছিলেন তরুণ নেতা শতরূপ ঘোষ (Shatarup Ghosh)। সারা দিন সেখানেই কাটানোর পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের।
প্রসঙ্গত, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্রনেতা মাস কয়েক আগে মারা যান। জানিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে প্রভূত বিতর্ক তৈরি হয়েছে। আনিসের পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছিল, রাতে আচমকা আমতা থানার পুলিশ বাড়িতে ঢুকে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে আনিসকে গ্রেপ্তার করতে ছাদে উঠে যায়। প্রাণভয়ে ছাদ থেকে ঝাঁপ দিতে গিয়ে মৃত্যু হয় আনিসের। রাজ্যের তরফের সিআইডি (CID) তদন্ত চললেও আনিস খানের পরিবার থেকে বারবার সিবিআই (CBI) তদন্তের দাবি জানানো হয়েছিল। এমনকি রিজওয়ানুর এর মৃত্যুর মত আনিস খানের মৃত্যুর পরেও রাজ্য প্রশাসনও পুলিশের প্রতি একইরকম অনাস্থা তৈরি হয়েছে আনিসের পরিবারের।
এর আগেও সেলিম আনিসের বাড়িতে গিয়েছিলেন। আনিসকে যেখানে সমাধিস্থ করা হয়েছে সেখানেও উপস্থিত ছিলেন তিনি।

গোটা দেশ হোক অথবা রাজ্য রাজনীতি। ভোট ব্যাঙ্কের সমীকরণ কমবেশি মেনে চলে প্রায় প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলই।
তাই ঈদের দিন মহম্মদ সেলিমের আনিসের বাড়িতে যাওয়া অথবা তৃণমূল নেত্রীর রিজওয়ানুর রহমানের বাড়িতে যাওয়া, সমানভাবে আলোচিত।
যেমন গেরুয়া শিবির থেকে গোটা বিষয়টি সম্পর্কে সামগ্রিক প্রতিক্রিয়া, “বিজেপি সংখ্যালঘু তোষণের রাজনীতি করে না”।


পাল্টা সিপিএম ও তৃণমূল শিবির থেকে বলা হচ্ছে, “নিজেদের হিন্দুত্ব ভোটব্যাঙ্ককে রক্ষা করতেই গা বাঁচিয়ে চলছেন বিজেপি নেতারা”।
আর সবকিছু দেখেশুনে আমজনতা বলছে, “ভোট বড় বালাই”!

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *