আজ খবর ডেস্ক: পেটে গ্যাসের সমস্যা নেই এমন মানুষ খুবই কম। দিন দিন মানুষের মধ্যে বাড়ছে এই সমস্যা। একটু ভাজাভুজি খাবার খেলে শুরু হয়ে যায় অস্বস্তিকর গ্যাসের সমস্যা। সঙ্গে সবসময় গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ রাখতে হয়। তবে শুধু যে ভাজাভুজি খাবার খেলে গ্যাস হয় তা নয়, পুষ্টিকর কিছু খাবারেও গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে।
আর সেগুলি হল:
“সুগার ফ্রি’ চকলেট, ক্যান্ডি, চুইং গাম ইত্যাদি জিনিসে চিনির পরিবর্তে ব্যবহার করা হয় ‘সর্বিটল’, ‘ম্যানিটোল’, ‘আইসোমল্ট’, জাইলিটোল’। এই উপাদানগুলো পেটে গ্যাস সৃষ্টি করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এগুলোর পরিবর্তে স্টিভিয়া, ম্যাপল সিরাপ কিংবা আসল চিনি ব্যবহার করা জেতে পারে। এছাড়াও, ‘ফাইবার স্ন্যাক বার্স’, ‘ফাইবার সিরিয়াল’য়ে ‘সাপ্লিমেন্টাল ফাইবার’ হিসেবে যোগ করা হয় ‘ইনুলিন’ ও ‘চিকোরি রুট’। এগুলো পেটে ফোলাভাব ও গ্যাস সৃষ্টি করে। এড়াতে চাইলে প্যাকেটের গায়ে লেখা উপকরণের তালিকা দেখে নেওয়া উচিত।
অপর এক বিশেষজ্ঞ বলেন যে, ‘ল্যাকটোজ ইনটোলেরেন্স’ এ আক্রান্ত অনেক মানুষ নিজেই জানেন না তাদের পরিস্থিতির ব্যাপারে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের ‘ল্যাকটোজ’ হজমের ক্ষমতা কমতে থাকে। আর তার প্রতিক্রিয়া হিসেবে ডায়রিয়া, পেটে গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি দেখা দেয়।
তিনি আরও বলেন যে, ব্রকলি, ব্রাসেল স্প্রাউট, বাঁধাকপি ইত্যাদি হল ‘ক্রুসিফেরাস’ জাতের সবজি। পুষ্টিমানে অনন্য হলেও এগুলো পেটে গ্যাস তৈরি করে, সৃষ্টি করে পেটফোলা ভাব।
প্রক্রিয়াজাত খাবারে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে যা পেটে গ্যাসের মাত্রা বাড়ায়। প্রক্রিয়াজাত চিনি খাওয়ার মাত্রা কমানো উচিৎ।
নিউ ইয়র্কের এক বিশিষ্ট গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট বলেন যে, অনেক সময় যে অনুভূতিকে পেটে গ্যাস হওয়া মনে হয়, আসলে তা অনেক বেশি চর্বিযুক্ত খাবার খেয়ে ফেলার অনুভূতি। এই খাবারগুলো হজম হতে সময় লাগে বেশি, ফলে পাকস্থলী খালি হতেও সময় লাগে বেশি। এতে মস্তিষ্ক সংকেত পায় পেট ভরে যাওয়ার।
কার্বনেটেড পানীয়গুলিতে উচ্চ পরিমাণে কার্বন-ডাই-অক্সাইড থাকে, এটি একটি গ্যাস। এ সব পানীয় শুধু পেটই ফাঁপায় তা না, সেই সাথে ওজনও বাড়ায় অনেক তাড়াতাড়ি। তাই বিশেষজ্ঞরা এ সমস্ত পানীয় থেকে দূরে থাকতেই পরামর্শ দিয়েছেন।
কিছু কিছু ফল যেমন- আপেল, নাশপাতির মতো ফলগুলিতে প্রাকৃতিক সুগার, অ্যালকোহল, sorbitol থাকে যা হজম করতে সমস্যা হয়। অনেক ফলের মধ্যে দ্রবণীয় ফাইবারও থাকে৷ sorbitol এবং দ্রবণীয় ফাইবার উভয়কেই বৃহত অন্ত্রের মধ্য দিয়ে যেতে হয়, যেখানে হাইড্রোজেন, কার্বন-ডাই-অক্সাইড এবং মিথেন গ্যাস তৈরি করতে ব্যাকটিরিয়াগুলি sorbitol এবং দ্রবণীয় ফাইবারকে ভেঙে দেয়। তাই এসব ফল থেকে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে।
তাছাড়া পেঁয়াজ, রসুনে ফ্লুক্ট্যানস রয়েছে, যা পেট ফুলে যাওয়া কারণ হতে পারে। রসুনে পাওয়া অন্য যৌগগুলিতে যেমন ফুলে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট এবং গ্যাসের মতো লক্ষণ রয়েছে। তবে রান্না করা রসুনে এই প্রভাবগুলি হ্রাস পেতে পারে।