আজ খবর ডেস্ক: হাওয়া অফিস বলছে, আগাম বর্ষা আসবে রাজ্যে। তবে অসহ্য গড়ন আর চরম আর্দ্রতা অস্বস্তি বাড়িয়ে চলেছে।
দিল্লি (Delhi) সহ দক্ষিণের রাজ্যগুলোতে প্রত্যেকদিন তাপস প্রবাহের সর্তকতা জারি করতে হচ্ছে। শরীর জনশূন্য (Dehydrated) হয়ে যাওয়ায় মৃত্যু হচ্ছে বহু মানুষের।
কাজে বেরিয়ে বাড়ি ফেরা হচ্ছে না। স্যালাইন দেওয়ার জন্য ছুটতে হচ্ছে হাসপাতালে। এমন ঘটনা প্রতিনিয়ত চোখে পড়ছে নেট মাধ্যমের দৌলতে।

প্রচণ্ড গরমে আরেকটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়, কিছু খেতে ইচ্ছে না করা। আবার চিকিৎসকরা বলেন, খালি পেটে চড়া রোদের মধ্যে একেবারেই বেরোনো উচিত নয়। অবধারিত সানস্ট্রোক।
দিল্লি, চন্ডিগড় অথবা তামিলনাড়ু, হিট স্ট্রোকে মৃত্যুর ঘটনা অহরহ শোনা যাচ্ছে। পিছিয়ে নেই আমাদের রাজ্য ও। বাঁকুড়া , পুরুলিয়া সহ পশ্চিমের জেলাগুলোতে ইতিমধ্যে বহু মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন গরমে। মৃত্যু হয়েছে বেশ কয়েকজনের।


হিট স্ট্রোক (Heat Stroke) বা সান স্ট্রোক (Sun Stroke) সাধারণত ‘লু’ নামে পরিচিত। এটি ঘটে যখন আপনার শরীর তার তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে অক্ষম হয়। হিট স্ট্রোকে, শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং কমানো যায় না।
যখন কেউ হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হন, তখন শরীরে ঘামের পরিমাণ কমে যায়। অর্থাৎ শরীর জল শূন্য হওয়ার পাশাপাশি শরীরের উত্তাপ দ্রুত বাড়তে থাকে। হিট-স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে শরীরের তাপমাত্রা ১০৬° ফারেনহাইট বা তার বেশি হতে পারে। যদি সময়মত চিকিৎসা না করা হয় তবে মৃত্যুও ঘটতে পারে ।

হিট স্ট্রোকের লক্ষণ

হিট স্ট্রোকের লক্ষণগুলো শনাক্ত হলে সময়মত এর চিকিৎসায় সাহায্য করা যেতে পারে। তাই হিট-স্ট্রোকের সমস্ত লক্ষণ চিনতে হবে।

১)মাথাব্যথা
২) সাময়িক স্মৃতি শক্তি লোপ
৩) মাত্রাতিরিক্ত জ্বর
৪) অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
৫) বমি বমি ভাব এবং বমি হওয়া
৬) ত্বক লালচে হওয়া অথবা
শুষ্ক ত্বক

হিট স্ট্রোকের কারণ

বেশিক্ষণ গরম জায়গায় থাকলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। কেউ যদি হঠাৎ ঠান্ডা বা বানানুকুল (AC) পরিবেশ থেকে গরম জায়গায় যান তাহলে হিট স্ট্রোকের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
গরমে অতিরিক্ত ঘামের পর পর্যাপ্ত জল পান না করার কারণে ও এমন হতে পারে।


কেউ গরমের মধ্যে বেশি অ্যালকোহল (Alcohol) সেবন করলে শরীর তার তাপমাত্রা ঠিক করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। এটিও হিটস্ট্রোকের কারণ হতে পারে।
আবার, গরমে ঘাম ও বাতাস বের হচ্ছে না এমন পোশাক পরলে তা হিটস্ট্রোকের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিতে পারে।

হিট স্ট্রোক থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়

হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিকে রোদে রাখবেন না। দ্রুত ঠান্ডা জায়গায় রোগীকে সরিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
ঢিলেঢালা পোশাকের ব্যবস্থা করতে হবে এবং টাইট জিন্স বা অন্যকিছু পড়া থাকলে তা খুলে দ্রুত রোগীকে পাতলা সুতির পোশাক পরতে হবে।
শরীর ঠান্ডা করতে কুলার বা ফ্যানের তলায় রোগীকে বসাতে হবে।


চোখেমুখে অল্প অল্প করে জলের ছিটে দিতে হবে।
গরমে নিয়ম করে ঠান্ডা জলে স্নান করুন।
কেউ আচমকা হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে, ঠান্ডা জলের একটি কাপড় দিয়ে শরীর মুছিয়ে দিতে হবে।
মাথায় একটি বরফের প্যাক (Ice Pack) বা কাপড় রাখুন। মাথা, ঘাড়, বগল ও কোমর ঠান্ডা জলে ভিজিয়ে রাখা তোয়ালে দিয়ে মুছুন।
এই প্রাথমিক ব্যবস্থা গ্রহণের পরেও যদি শরীরের তাপমাত্রা না কমে, তবে অবিলম্বে একজন ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *