আজ খবর ডেস্ক: কোভিডের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াইয়ে ক্লান্ত পৃথিবী। যে লড়াই নেগেটিভ রিপোর্ট পাওয়ার পরেও জারি থাকে বহুদিন। সংক্রমণের নতুন রূপ বৃদ্ধির সাথে সাথে কোভিড-১৯ এর উপসর্গেও পরিবর্তন এসেছে।
প্রাথমিকভাবে, যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (NHS) জ্বর, কাশি, গন্ধ বা স্বাদ গ্রহণের ক্ষমতা হ্রাস বা পরিবর্তনকে করোনার প্রধান লক্ষণ হিসেবে বর্ণনা করেছিল।
এখন এনএইচএস-এর নতুন নির্দেশিকায় গলা ফোলা, নাক বন্ধ হওয়া বা সর্দি এবং মাথাব্যথা সহ অন্যান্য উপসর্গগুলির বিষয়েও তথ্য দিয়েছে।
ইদানিং কোভিডের কিছু ক্ষীণ এবং অস্পষ্ট উপসর্গ সামনে আসছে, যেমন
১) ত্বকের ক্ষত:
২০২১ সালে প্রকাশিত যুক্তরাজ্যের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রতি পাঁচজন করোনা রোগীর মধ্যে একজনের শুধুমাত্র একটি ফুসকুড়ি দেখা গেছে এবং অন্য কোন লক্ষণ নেই।
COVID বিভিন্ন উপায়ে ত্বককে প্রভাবিত করতে পারে। কিছু লোকের বিস্তৃত ম্যাকুলোপ্যাপুলার (maculopapular) ফুঁসকুড়ি হয়, যা হল বিবর্ণ ত্বকের সমতল বা উঁচু অংশ। কারুর ক্ষেত্রে ত্বকে চুলকানিযুক্ত উঁচু অংশ দেখা দেয়।
বেশিরভাগ কোভিড ত্বকের ক্ষত কয়েক দিন বা কিছু ক্ষেত্রে কয়েক সপ্তাহ পরে চলে যায়। তবে, ত্বক যদি খুব চুলকায় বা বেদনাদায়ক হয়, তাহলে নিশ্চয় চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের (dermatologist) পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
২) চুল পড়া:
চুল পড়া COVID-19-এর একটি নতুন লক্ষণ, যা সাধারণত তীব্র সংক্রমণের এক মাস বা তার বেশি পরে ঘটে। প্রায় ৬০০০ জন কোভিড আক্রান্তের ওপর একটি গবেষণা করা হয়। এক্ষেত্রে ৪৮% অংশগ্রহণকারীর চুল পড়া ছিল কোভিড-পরবর্তী সবচেয়ে সাধারণ উপসর্গ। তবে, সুখবর হল যে সময়ের সাথে সাথে চুল স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে।
৩) শ্রবণশক্তি হ্রাস:
অন্যান্য ভাইরাল সংক্রমণ, যেমন ফ্লু এবং হামের মতো, কোভিড-এও কানের অভ্যন্তরীণ কোষগুলি প্রভাবিত হয়। কখনও কখনও সংক্রমণের পরে শ্রবণশক্তিও হ্রাস পেতে পারে, বা কানের ভেতরে লাগাতার মৃদু ঘণ্টা বাজানোর আওয়াজ (tinnitus) শোনা যেতে পারে।
৫৬০ জন কোভিড রোগীকে নিয়ে করা এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৩.১% অংশ গ্রহণকারীর শ্রবণশক্তি হ্রাস পেয়েছে, এবং ৪.৫% রোগী কানে ঘণ্টা বাজানোর মৃদু আওয়াজ শুনতে পাচ্ছে।
গবেষকরা একটি সমীক্ষায় দেখেছেন যে, কোভিড কানের অভ্যন্তরীণ অংশের ক্ষতির সাথে যুক্ত।
৪) নখের ওপর প্রভাব:
SARS-CoV-2 সহ যে কোনও সংক্রমণের সময়, আমাদের শরীর স্বাভাবিকভাবেই সংক্রমণের মাত্রা বোঝার চেষ্টা করে। করোনার কারণে নখের বৃদ্ধিতে সাময়িক বাধা সৃষ্টি হতে পারে এবং নখে অনুভূমিক কিছু রেখা দেখা দেয়।
নখের নিচের ত্বকে প্রোটিনের অস্বাভাবিক উৎপাদন নখের উপর সাদা রেখা তৈরি করে। কোভিড রোগীদের ১-২% মধ্যে এই রেখা দেখা দিতে পারে। কোভিড সংক্রমণের কয়েক দিন বা সপ্তাহ পরে, নখ বড় হলে, এই রেখাগুলো দেখা যায়, এবং কয়েক সপ্তাহ পর নিজে থেকেই কমে যায়।