আজ খবর ডেস্ক: প্রথমে কী জানতে চান? দুর্নীতির এই নায়কের(খল) নাম, কী ভাবে তাঁর নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে নাকি এই ব্যক্তির বর্তমান সম্পত্তির পরিমাণ?
পিএসসি(PSC) অর্থাৎ পাবলিক সার্ভিস কমিশন।
চাকরির এই পরীক্ষার মাধ্যমে মূলত প্রশাসনিক স্তরে নিয়োগ হয়। এবার সরাসরিডব্লিউবিসিএস(WBCS) পরীক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগ। অভিযোগে বিদ্ধ উত্তরবঙ্গের কালচিনির বর্তমান বিডিও (BDO) প্রশান্ত বর্মন।
প্রশান্ত বর্মনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ এক নজরে দেখে নেওয়া যাক।
*ডব্লিউবিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় পাশ না করেও মেইন পরীক্ষায় বসেন
*মেইন পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর আসে তাঁর নামে
*১৩/৪/২০১৭ সালে প্রকাশিত প্রিলিম(Prelim)-এ নামই ছিল না প্রশান্ত বর্মণের
*২১/৪/২০১৭ তারিখে আরেকটি মেধা তালিকা প্রকাশিত হয়, যেখানে রাতারাতি
প্রশান্ত বর্মনের নাম দেখা যায়
- এই তালিকায় শীর্ষে ছিল প্রশান্ত বর্মনের নাম। অর্থাৎ তিনি “টপার”! তবে কাজে যোগ দেন ২০১৯ এ।
এবার আসা যাক, প্রশান্ত বর্মনের পরিচয় প্রসঙ্গে।
জানা গিয়েছে, কোচবিহারের বোকালির মঠ এলাকায় পৈত্রিক ভিটে প্রশান্ত বর্মনের। একসময় ভেন রিকশা চালাতেন তাঁর বাবা। ২০১১ মেখলিগঞ্জের একটি প্রাথমিক স্কুলে প্রথম চাকরি। ২০১৫ সালে বদলি হন ওই জেলারই অন্য আরেকটি স্কুলে।
দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে অনেকেই পরবর্তীকালে সাফল্যের শিখরে পৌঁছন। কিন্তু পরীক্ষায় না বসে মেধা তালিকায় শীর্ষে নাম ওঠা। এবং তারপরে পাহাড়প্রমাণ সম্পত্তির মালিক হওয়া, তাও আবার বছর কয়েকের মধ্যেই।
এবার এক নজরে দেখে নেওয়া যেতে পারে প্রশান্ত বর্মনের ব্যক্তিগত সম্পত্তির পরিমাণ। মনে রাখতে হবে, ২০১৯ সালে তিনি বিডিও পদে যোগ দেন। আর এখন ২০২২। অর্থাৎ সময়সীমা মাত্র তিন বছর।
*আলিপুরদুয়ারের বীরপাড়ায় নিজের নামে বাড়ি
*কোচবিহারের নাট্য সংঘ এলাকায় প্রশান্ত বর্মনের স্ত্রীর নামে বাড়ি
*আমবাড়ি এলাকায় বেশ কয়েক বিঘা জমি।
প্রশান্ত বর্মনের চাকরি সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে ২০২০ সালের ১৭ই জুলাই পশ্চিমবঙ্গ লোকসেবা আয়োগের তরফে জনৈক দেবাশিস মুখোপাধ্যায় একটি আরটিআই (RTI) রিপোর্ট প্রকাশ করেন।
সংশ্লিষ্ট মহল সূত্রে খবর,
২০১৭ সালের ১৩ই এপ্রিলে প্রকাশিত মেধাতালিকায় প্রশান্ত বর্মনের নাম না থাকলেও মাত্র ৮ দিনের মাথায় আরেকটি মেধা তালিকা প্রকাশিত হয়। সেখানে নাম ছিল প্রশান্ত বর্মনের।
পিএসসি দুর্নীতি মুক্ত মঞ্চের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার পিএসসি ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। প্রচুর চাকরিপ্রার্থী হাজির ছিলেন সেখানে। মঞ্চের পক্ষ থেকে ইন্দ্রজিৎ ঘোষ জানান, “কালীগঞ্জ থানায় এফআইআর দায়ের করা হল। তবে আমাদের মঞ্চের পক্ষ থেকে শীঘ্রই আদালতে মামলা করা হবে। প্রশান্ত বর্মন দুর্নীতি করে যে চাকরি পেয়েছেন তা তাঁকে ছাড়তে হবে। এতদিন ধরে যে বেতন পেয়েছেন, সেই পুরো টাকা ফেরত দিতে হবে। নিয়োগ দূর্নীতির সাথে যুক্ত সব চোরেদের শাস্তি না পাওয়া পর্যন্ত এই লড়াই চলবে।”
এদিকে উত্তরবঙ্গের একাধিক সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে প্রশান্ত বর্মন জানান, তিনি কোচবিহার জেলার প্রত্যন্ত এক গ্রামের বাসিন্দা। ছোটবেলা থেকে দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করে সফল হয়েছেন। একজন রাজবংশী হয়ে পিএসসি পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন। তাই তাঁর নামে মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে।