আজ খবর ডেস্ক- আমরা প্রত্যেকেই প্রায় ব্রেন টিউমার রোগটির নাম জানি। কিন্তু কি এই রোগ? কেমন ভাবে হয়? সে সম্পর্কে বোধহয় অনেকেই জানিনা। আসুন জেনে নেওয়া যাক সে বিষয়ে।
মস্তিষ্কে মাংসের অথবা কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধিজনিত কারণে ব্রেন টিউমার হয়। এই টিউমার বৃদ্ধি পেতে থাকলে মস্তিষ্কের ভেতরে চাপ বেড়ে যায়, তখনই মস্তিষ্ককের স্বাভাবিক কার্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সঠিক সময়ে ব্রেন টিউমারের চিকিৎসা না করা হলে, হতে পারে ভীষণ বিপদ। কিন্তু তার আগে জানা প্রয়োজন ঠিক কি কি কারণে ব্রেন টিউমার হয়? এর লক্ষণগুলি কী কী?
ব্রেন টিউমারের কারণ :
একাধিক কারণে ব্রেন টিউমার হতে পারে। ব্রেন টিউমার তখনই হয়, যখন মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কোষগুলির ডিএনএ-তে কোনোরকম ত্রুটি থাকে। ফলত শরীরের কোষগুলো ক্রমাগত বিভক্ত হয়ে মরে যেতে। যার পরিবর্তে নতুন কোষ সৃষ্টি হতে পারে না। অনেক সময় নতুন কোষ সৃষ্টি হয়ে যায়, তবে দেখা যায় পুরনো কোষগুলি সম্পূর্ণভাবে বিনষ্ট হয় না। আর সেই মৃত কোষগুলি জমাট বেঁধেই টিউমারের হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করে। আবার অনেক সময় বংশগত কারণেও ব্রেন টিউমার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অর্থাৎ বাবা, মা বা নিকটস্থ কোনো আত্মীয়ের ব্রেন টিউমার থাকলে, সেই থেকে আপনারও এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা তৈরি হয়।
ব্রেন টিউমার কী:
ব্রেন টিউমার হল মস্তিষ্কে কোষের জমাট। যখন মস্তিষ্কে এই কোষের বৃদ্ধি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায় তখনই টিউমারের সৃষ্টি হয়। ব্রেন টিউমার মূলত দুই ধরনের হয়। এক , ক্যান্সারযুক্ত অর্থাৎ ম্যালিগন্যান্ট; আরেকটি হল ক্যান্সারহীন অর্থাৎ বিনাইন। ম্যালিগন্যান্ট ব্রেন টিউমার বৃদ্ধি পেলে তা মস্তিষ্কের ভেতরে চাপ বাড়িয়ে তুলতে থাকে। এই ধরনের টিউমার প্রাণঘাতী হতে পারে।
তবে সঠিক সময় চিকিৎসা না করলে যে কোনো ধরনের ব্রেন টিউমারই মারাত্মক আকার নিতে পারে। তাই আগে জানা দরকার কি ভাবে বোঝা যাবে যে এই ধরনের রোগ দেহে ডানা বেধেছে।
মাথায় টিউমারের কয়েকটি লক্ষণ হল :
প্রায় সব সময়ই কম বেশি মাথা ব্যথা করা। যদিও সব ধরণের ব্যথা টিউমারের লক্ষণ নয়। ব্রেন টিউমার হলে তীব্র মাথা ব্যথা হয় এবং তা অনেক সময় সহ্য ক্ষমতার বাইরে চলে যায়। এই ধরণের মাথা ব্যথা টিউমারের খুবই একটি সাধারণ লক্ষণ। আর জেনে রাখা ভালো, ব্রেন টিউমারের মাথা ব্যথা সাধারণত সকালের দিকে হয় এবং পরের দিকে তা ক্রমাগত হতে থাকে।
কোনো কারণ ছাড়া হঠাৎ বমি হওয়া এবং তীব্র মাথা ব্যথার সঙ্গে বমি ভাব ব্রেন টিউমারের আরেকটি লক্ষণ।
অনেকসময় কথা বলতে বা শুনতেও সমস্যা হতে পারে। ব্রেন টিউমার হলে মাথা ঘোরার একটা লক্ষণও অনেকের মধ্যে চোখে পরে।
ব্যক্তির আচরণেরও পরিবর্তন ঘটতে দেখা যায়। যেমন স্মৃতি শক্তি খারাপ হতে থাকাকে ব্রেন টিউমারের একটি লক্ষণ হিসেবে ধরা হয়।
ঘন ঘন রেডিয়েশন অথবা এক্স-রে নেয়ার ফলে এই রোগের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
চিকিৎসা :
ব্রেন টিউমারের চিকিৎসা নির্ভর করে টিউমারের আকার, অবস্থান ও ধরনের ওপর।
ম্যালিগন্যান্ট ব্রেন টিউমারের ক্ষেত্রে সাধারণ চিকিৎসা হলো সার্জারি। এটি ব্রেনের সমস্ত অংশ অক্ষত রেখে ক্যান্সার অপসারণে সহায়তা করে।
তবে কিছু এমন টিউমার আছে যেগুলো অপসারণ করা সহজ আবার কিছু এমনও আছে, যেগুলো এমন জায়গায় অবস্থান করে যে, সেগুলো সরানো কঠিন হয়ে দাড়ায়।
এই ধরনের সার্জারি করাও বেশ খানিকটা ঝুঁকি প্রবন, কারণ এতে ইনফেকশন এবং রক্তক্ষরণের সম্ভাবনা থাকে। বিনাইন টিউমার অস্ত্রোপচার মাধ্যমে অপসারণ করা হয়।