আজ খবর ডেস্ক:
তিন দিনের সফরে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সোমবার বর্ধমানে প্রশাসনিক সভার পর মঙ্গলবার আসানসোলের কর্মীসভা।
পরপর দুদিন মুখ্যমন্ত্রীর সভায় এসে সরাসরি চাকরি চাইলেন চাকরি প্রার্থীরা।
সোমবার তাঁদের সঙ্গে কথা বললেও মঙ্গলবার কার্যত মেজাজ হারালেন মুখ্যমন্ত্রী।


সোমবার মমতা জানিয়েছিলেন, বিষয়টা কোর্টের হাতে রয়েছে। ফলে তিনি এখন কিছুই করতে পারবেন না।
কিন্তু আসানসোলের কর্মিসভায় ফের তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যান কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী। মমতার কাছে চাকরির দাবি করেন তাঁরা।
তখন নিজের বক্তব্য থামিয়ে মমতা বলেন, ১৭ হাজার শূন্যপদ থাকলেও নিয়োগ করতে পারছেন না তিনি। পাশাপাশি সিপিএম সাংসদ তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য (Bikash Ranjan Bhattacharyya) কে নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী।

আসানসোলের কর্মীসভায় যখন মমতা কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়োগ নীতি এবং “অগ্নিপথ’ প্রকল্প (Agnipath Scheme) নিয়ে বক্তব্য রাখছেন, তখনই সেই সভায় উপস্থিত হন কয়েকজন চাকরি প্রার্থী।
“দিদি আমরা চাকরি চাই, চাকরি চাই” বলে রীতিমত হইচই শুরু করেন তাঁরা। বাধ্য হয়ে নিজের বক্তব্য বন্ধ রেখে তাঁদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “এটা কোর্টের বিষয়। এটা আমার হাতে নেই এখন। কোর্ট থেকে যতক্ষণ না পর্যন্ত কিছু বলছে আমি কিছু করতে পারব না।”

ফাইল ছবি

সেই সঙ্গে মমতা এও বলেন, “আমি চাকরি দিতে চাই। সিপিএমের কিছু লোক মামলা করেছে। যান গিয়ে বিকাশবাবুদের গিয়ে বলুন, আপনার তো অনেক টাকা। আমাদের চাকরি থেকে কেন তাড়াচ্ছেন?”
এদিনের সভায় ক্ষোভের সঙ্গেই তৃণমূলনেত্রী বলেন, “কালকেও বর্ধমানে করেছে। এভাবে সভার মধ্যে ঢুকে পড়ে সামনে চলে এসে চিৎকার করা ঠিক নয়।” তিনি এও বলেন, “১৭ হাজার চাকরি রেডি রয়েছে। কোর্ট বললেই দিয়ে দেব। আমি তো আদালতের কথার বাইরে গিয়ে কিছু করতে পারব না।” বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে মমতা বলেন, “আপনাদের যা বলার তা আদালতে গিয়ে বলতে হবে। সেখান থেকে অর্ডার বের করে আনুন।”
পরে জানা যায়, আসানসোলের সভায় যাঁরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তাঁরা এসেছিলেন মুর্শিদাবাদ থেকে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় বিকাশ রঞ্জন বলেন, “১৭ হাজার পদে তিনি দুর্নীতিগ্রস্ত নিয়োগ করেছেন। যাঁরা যোগ্য নন, তাঁদের নিয়োগপত্র দিয়েছেন টাকা নিয়ে। মমতা একজন আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত নেত্রী।
ওঁকে জানতে হবে মামলাকারী মামলা করেন। আইনজীবীর কাজ সেটা আইনি ভাষায় আদালতের সামনে তুলে ধরা। আর ওঁর সরকার যোগ্যদের চাকরি না দিয়ে টাকার বিনিময়ে অযোগ্যদের চাকরি দিয়েছে। এখন তো শুধু সেই চাকরি যাচ্ছে, প্রকৃত তদন্ত হলে অনেক বড় মাথাকেও জেলে যেতে হবে। উনি চাকরিপ্রার্থীদের বলছেন বিকাশ বাবুর বাড়ি যাও। আমার কোনও আপত্তি নেই। আমি তাঁদের নিয়ে নবান্ন অভিযান করব।”

শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি এবং সেই তদন্তভার কেন্দ্রীয় এজেন্সির হাতে দেওয়া নিয়ে রাজ্যজুড়ে উত্তাপ ক্রমশ চড়ছে। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল অন্দরে আরেক প্রশ্ন উঠেছে।
মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভা হোক অথবা তৃণমূল নেত্রীর কর্মীসভা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত থাকা মানেই সেটা হাই সিকিউরিটি জোন। দলবেঁধে চাকরিপ্রার্থীরা সেখানে ঢুকে পড়ছেন কী করে?
মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়েও কার্যত তাই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *