আজ খবর ডেস্ক: বঙ্গে স্কুল বিতর্ক যেন আর শেষ হচ্ছে না! এমনিতেই করোনা (Corona) ও লকডাউনের (Lockdown) জন্য প্রায় দেড় বছর রাজ্যের সব স্কুল বন্ধ ছিল। পঠন পাঠন চলেছে অনলাইনে (Online Education)।
তবে, কিছু স্কুল অনলাইনে চললেও একাধিক সরকারি স্কুলে সেই সুযোগ ছিল না। বিশেষত, জেলায়।
বেশ কিছু সমীক্ষা বলছে, সেই সময় মূলত রাজ্যের একাধিক জেলার প্রত্যন্ত প্রান্তে বহু পড়ুয়াই পড়াশোনা ভুলে রোজগারের আশায় কাজে যোগ দিয়েছিল। এখন তারা কাজ ছেড়ে আর স্কুলে ফিরছে না।

ফলে করোনা পরবর্তী সময় যখন স্কুল খুলছিল তখন ধীরে ধীরে সরকারি স্কুলে পড়ুয়াদের (Govt School) সংখ্যা কমতে শুরু করে। বর্তমানে, অধিকাংশ স্কুলেই পড়ুয়ার সংখ্যা বেশ কম। আবার নতুন করে করোনার চোখ রাঙানির কারণে রাজ্য প্রশাসন ফের স্কুল বন্ধ রাখার কথা ভাবছে।
এই পরিস্থিতিতে হাওড়া (Howrah) শহর লাগোয়া এলাকায় ২৫টি প্রাথমিক স্কুল (Primary School) বন্ধ করে দিল জেলা প্রাথমিক স্কুল শিক্ষা সংসদ।

মূলত পড়ুয়াদের অভাবের জন্যই স্কুলগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলেই শিক্ষা সংসদ সূত্রে জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ওই ২৫টি প্রাথমিক স্কুলের অধিকাংশই চলত ভাড়া বাড়িতে। সূত্রের খবর, করোনার সময় স্কুল বন্ধ থাকলেও বাড়িভাড়া মেটাতে হত। পরে স্কুল ফের চালু হলেও ১জন পড়ুয়া ও আর স্কুলে আসছিল না।


যদিও একাধিক অভিভাবকের অভিযোগ, স্থানীয় সরকারি স্কুলে পড়াশোনা ভাল হতো না। তাই ছেলেকে মধ্য হাওড়ার ব্যাঁটরা এলাকার একটি সরকারি স্কুলে ভর্তি করতে হয়েছে। ওই এলাকায় দুটো পুরোনো স্কুল ছিল। দুটোই বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

আবার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের একটি সূত্রের দাবি, ক্লাস না নিয়ে শুধু স্কুলে যাতায়াত করেই বেতন তুলছিলেন ওই সব স্কুলের শিক্ষকরা।
এরপরই সংসদের তরফে ওই স্কুলভবনগুলিতে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। হাওড়া প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে জেলায় প্রাথমিক স্কুলের সংখ্যা ২ হাজার ৫৯টি। যার জন্য শিক্ষক রয়েছেন ৮ হাজার ৯৭০ জন। আর মোট পড়ুয়ার সংখ্যা ২ লাখ ৭২ হাজার ৫৬৫ জন। পাশাপাশি ওই সব স্কুলের শিক্ষকদেরও অন্যত্র বদলি করে দেওয়ার নির্দেশিকা জারি করে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রেন্ড প্রাইমারি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তথা বিজেপি (BJP) শিক্ষা সেলের সহ আহ্বায়ক পিন্টু পাড়ুই aajkhobor.com কে বলেন, ” সরকারি স্কুলের পরিকাঠামোর দিকে নজর দেওয়া হয় না। পানীয় জল, পরিষ্কার শৌচালয় টুকুও দেওয়া হয় না পড়ুয়াদের। ফলে সরকারি থেকে বেসরকারি স্কুলে চলে যাচ্ছে তারা। আমাদের সন্দেহ, স্কুল বন্ধ করে প্রোমোটিং ব্যবসায় মদত দিচ্ছে রাজ্য সরকার। আমাদের কাছে খবর আছে, কোনও সমীক্ষা না চালিয়েই এই স্কুলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকেই এর প্রতিবাদে পথে নামছি আমরা। শহর কলকাতার একাধিক স্কুল বন্ধ করে দিয়ে সেখানে ফ্ল্যাট তৈরি হচ্ছে। এসব চলতে দেওয়া যাবে না।”

শিক্ষা দপ্তর অবশ্য দাবি করছে, এই ২৫টি প্রাথমিক স্কুল বন্ধ হলেও জেলায় সামগ্রিকভাবে সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলিতে পড়ুয়ার সংখ্যা বেড়েছে। লকডাউন পর্বে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে সরকারি প্রাথমিক স্কুলে ১০ শতাংশ পড়ুয়া বেড়েছে। যে স্কুলগুলি বন্ধ করা হয়েছে, সেগুলি আবার চালু করা হতে পারে বলেও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ দাবি করেছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *