আজ খবর ডেস্ক:
তৃণমূলের তরফে মঙ্গলবার প্রায় বিজ্ঞপ্তির আকারে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সাংসদ মহুয়া মৈত্রের(Mahua Moitra) বক্তব্য আদৌ সমর্থন করছে না দল।
পাল্টা এবার টুইটারে(Twitter) দলকে “আনফলো”(Unfollow) করলেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ। আলাদাভাবে শুধু তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) টুইটার হ্যান্ডেল ফলো করছেন তিনি।


তবে এই বিষয় নিয়ে এখন ও পর্যন্ত ব্যক্তিগতভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া দেন নি মহুয়া। যদিও কখনও “দু পয়সার সাংবাদিক”, কখনও আবার হিন্দু দেবী কালী সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য! মহুয়া ইস্যুতে তৃণমূলের অন্দরে অশান্তি ক্রমশ বাড়ছে।

সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। বঙ্গের প্রতিটি রাজনৈতিক দল আপাতত “পাখির চোখ” করেছে এই ভোটকে। বিরোধী বিজেপি(BJP) একদিকে যেমন এখন থেকেই মাঠে নামানোর তোড়জোড় শুরু করেছে মিঠুন চক্রবর্তীকে(Mithun Chakraborty), অন্যদিকে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প মানুষের দরজায় পৌঁছে দিয়ে ভোটবাজারে আনুকূল্য পেতে চাইছে শাসক দল।
তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক শীর্ষ নেতার বক্তব্য, ঠিক এখানেই গোল বাঁধালেন মহুয়া।


পঞ্চায়েত ভোট মানে গ্রামাঞ্চলের ভোট। জেলার অত্যন্ত এলাকায় মানুষের কাছে গিয়ে ভোট চাইতে হবে। সেখানে একজন হিন্দু দেবীর নামে বিতর্কিত মন্তব্য করে কাজটা যথেষ্ট কঠিন করে দিলেন মহুয়া মৈত্র। পাশাপাশি সনাতনী হিন্দুত্বের সেন্টিমেন্ট তাস খেলে বিজেপি যে এর ফায়দা নেওয়ার পুরোদস্তুর চেষ্টা চালাবে সেই বিষয়ে ও কার্যত নিশ্চিত তৃণমূল নেতৃত্ব।
প্রসঙ্গত, ভারতীয় পরিচালক লীনা মানিমেকালাইয়ের তথ্যচিত্রের একটি পোস্টারে দেবী কালী রূপে এক মহিলাকে ধূমপান করতে দেখা গিয়েছে। যা নিয়ে সম্প্রতি বিতর্ক দানা বেঁধেছে। সোমবার কলকাতার এক অনুষ্ঠানে দেবী কালীকে নিয়ে ওই ছবির পোস্টার সংক্রান্তে প্রশ্নের প্রেক্ষিতেই একটি মন্তব্য করেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ। এরপরেই তাঁর সেই মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়েছিল।

কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদের ‘মা কালী’ নিয়ে মন্তব্য থেকে দূরত্ব রচনা করেছিল তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে একটি টুইট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, “কালী প্রসঙ্গে মহুয়া মৈত্র যে মন্তব্য করেছেন, তার দায় কোনও ভাবেই নিচ্ছে না তৃণমূল।”
দেখা গেল মৌখিক ভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া না দিলেও, তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সর্বভারতীয় তৃণমূলের ওই টুইটার হ্যান্ডেলটিকে অনুসরণ করা বন্ধ করলেন মহুয়া।
যদিও মা কালী সম্পর্কে তাঁর মন্তব্যকে তৃণমূলের টুইটার হ্যান্ডল থেকে নিন্দা করার পর মহুয়া সেই হ্যান্ডলকে ‘আনফলো’ করেছেন, কিন্তু তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এখনও টুইটারে ‘ফলো’ করছেন। যা ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলেই মনে করছেন দলের নেতাদের একাংশ।
তাঁদের মতে, মহুয়া বার্তা দিতে চেয়েছেন, তিনি দলে একমাত্র মমতাকেই মান্য করেন।
এদিকে, বিজেপি নেতারা মহুয়ার ওই বক্তব্যকে নেটমাধ্যমে ভাইরাল করে তাঁকে আক্রমণ করতে শুরু করে। জবাবে মহুয়া টুইটে লেখেন, “আমি কখনওই কোনও চলচ্চিত্রের কোনও পোস্টারের সমর্থন করে ধূমপান শব্দের উল্লেখ করিনি। তারাপীঠে গিয়ে দেখে আসুন সেখানে দেবীকে প্রসাদ হিসেবে কী ধরনের খাবার বা পানীয় দেওয়া হয়।”

এদিকে, বুধবার মহুয়া প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী(Suvendu Adhikari) বলেছেন, সারা বাংলা এবং সারা দেশ জুড়ে মহুয়াকে গ্রেপ্তারের দাবিতে এফআইআর(FIR) করা হচ্ছে। শুভেন্দুর কথায়, ‘’আমি কলকাতা পুলিশকে ১০ দিন সময় দিচ্ছি। মহুয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে হাই কোর্টে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে আবেদন করব।’’


আর দিন কয়েকের মধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসের মেগা ইভেন্ট ২১শে জুলাই। এই পরিস্থিতিতে দলের সঙ্গে মহুয়া মৈত্রের দূরত্ব কি বাড়বে? নাকি খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হস্তক্ষেপ করবেন বিষয়টিতে? সেদিকে তাকিয়ে রাজ্য রাজনীতি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *