আজ খবর ডেস্ক:
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আমাদের প্রায় প্রত্যেকেরই মনে হয়, চেহারা আরেকটু রোগা হলে ভালো হত। পেটের মেদ আরেকটু যদি কমানো যেত! আর এখন তো সামনেই পূজোর হাতছানি। এমনিতেই দেখা যায় পুজোর মাস খানেক আগে থেকে ওয়ার্ক আউট (Workout) অথবা জিম (Gym) করার প্রবণতা অনেকটাই বাড়ে।
টিন এজার থেকে মধ্য ৪০, পূজোর বাজারে নজর কাড়ার ইচ্ছে সকলেরই থাকে।
কিন্তু হঠাৎ ওয়ার্ক আউট অথবা জিম করতে গিয়ে অনেকেই বিপত্তি বাঁধিয়ে ফেলেন। ঘন্টার পর ঘন্টা ব্যায়াম করার পর অনেকেই মারাত্মক ক্লান্ত হয়ে পড়েন। কম ক্যালরি যুক্ত খাবারের বদলে খাবারের পরিমাণটাই কমিয়ে দেন অধিকাংশ। যার ফলে দুর্বলতা, আলসার, অথবা মাসল ক্রাম্প হতে পারে। শারীরিকভাবে ফিট হওয়ার বদলে হয়ে যেতে পারেন আনফিট।
বিশেষজ্ঞদের মত হল, জিমে যাওয়ার আগে কিছু খেয়ে নেওয়া উচিত। ব্যায়াম করুন কিন্তু কখনোই খালি পেটে নয়।এটি করলে আপনি ওয়ার্কআউটের সময় ক্লান্ত বোধ করবেন না। খালি পেটে জিমে ব্যায়াম করলে শরীরে শক্তির অভাব হয়।
জিমে যাওয়ার আগে ঠিক কী ধরনের খাবার খাওয়া উচিত এই নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন থাকে। কেউ কেউ আবার কিছু না জেনে বুঝেই দামি প্রোটিন শেখ কিনে ফেলেন। কিন্তু আমাদের ঘরেই এমন অনেক খাবার থাকে, যা উচ্চ প্রোটিনযুক্ত অথচ কম ক্যালোরি। তাই অকারনে প্রচুর পয়সা খরচ করে বিদেশি প্রোটিন শেক খাওয়ার থেকে ঘরের খাবার খান আর ব্যায়াম করুন নিয়মিত।
এর ফলে ওয়ার্কআউটের সময় এনার্জি লেভেল ভাল থাকবে। তবে এটাও মনে দরকার, জিমে যাওয়ার আগে খুব বেশি কিছু খাবেন না। এর ফলে পেট ব্যথা হতে পারে। অন্যান্য শারীরিক সমস্যাও হতে পারে। তাই সব সময় মাথায় রাখতে হবে ব্যায়ামের আগে হালকা প্রোটিনযুক্ত খাবার আপনাকে সুফল দেবে।
শরীরকে সঠিক ভাবে চালিয়ে নিয়ে যেতে এই সময় লাগে সঠিক এনার্জি। তাই জিমে যাওয়ার আগে সঠিক খাবার খান, যা আপনাকে দীর্ঘক্ষণ শরীরচর্চা করতে সাহায্য করবে। ক্লান্তি আসবে না। এবার দেখে নেওয়া যাক শরীর চর্চার আগে ঠিক কী কী খাবার খাওয়া উচিত।
১) বাদাম-
জিমে যাওয়ার আগে এক মুঠো বাদাম খেতে পারেন। এতে শরীরে শক্তি বজায় থাকবে। বাদাম খাওয়ার পর অনেকক্ষণ আর অন্য কিছু খেতে ইচ্ছে করে না। এর ফলে শরীর ভিটামিন ই, পটাশিয়াম, ফাইবার ও ক্যালসিয়াম পায়। বাদামে ক্যালোরিও কম থাকে।
২) কলা এবং আপেল-
জিমে যাওয়ার আগে যে কোনও ফল খেতে পারেন। আপনি চাইলে একটি কলা খেতে পারেন। কলাতে পটাশিয়াম থাকে, যা ব্যায়ামের সময় পেশীর চাপ প্রতিরোধ করে। কলা খেলে শরীরে অনেকক্ষণ শক্তি থাকে। আপনি একটি আপেলও খেতে পারেন।
৩) ব্রাউন ব্রেড-
জিমে যাওয়ার আগে যদি একটু বেশি খিদে পায়, তাহলে ব্রাউন ব্রেডের তৈরি ভেজিটেবল স্যান্ডউইচও খেতে পারেন। এর ফলে শরীর প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট পায়। ওয়ার্কআউটের সময় আপনি মোটেও ক্লান্ত হবেন না।
৪) ড্রাই ফ্রুটস। তবে অল্প পরিমাণে। এটি যেমন সহজে হজম হয়, তেমনই রয়েছে ‘গুড কার্বস’।
৫) ওটস (oats)- এতে থাকা কার্বোহাইড্রেট শরীরের কোষ গুলোকে এক্সারসাইজের জন্য প্রস্তুত করে। হজম হতেও সময় নেয়। তাই জিমে যাওয়ার আগে এর চেয়ে ভাল খাবার আর কিছু হতেই পারে না।
৬) শিয়া সিডস (chia seeds)- শরীর চর্চার আগে এনার্জি বাড়াতে শিয়া সিডসও খুব উপকারি। এতে থাকা প্রোটিন আর ম্যাগনেসিয়াম এনার্জির খুব ভালো উৎস হিসেবে কাজ করে।
৭) ডিমের সাদা অংশ- এগ হোয়াইট (egg white)- এতে আছে প্রচুর প্রোটিন যা ধীরে হজম হয়। শরীরচর্চার আগে এতে খেলে পেট ততক্ষণাৎ ভরা লাগে এবং মাসল আহত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পায়।
ওয়ার্কআউটের আগে ২-৩টি ডিম সেদ্ধ করে নিন চট করে। এবার ডিমের সাদা অংশটুকু খাওয়ার চেষ্টা করুন।
৮) দই এবং বেরি-
আপনি যদি দই পছন্দ করেন, তাহলে ওয়ার্কআউটের আগে এক বাটি ঘরে পাতা টক দই এবং এক মুঠো বেরি খেতে পারেন। এতে শরীর পুষ্ট হবে এবং মাংসপেশিতে কোনও টান থাকবে না।
তাই সব সময় মাথায় রাখবেন জুম্বা (Zumba), যোগা (Yoga), অথবা জিম যাই করুন না কেন খালি পেটে নৈব নৈব চ। স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে শরীর চর্চা করুন।