আজ খবর ডেস্ক:
প্রথমে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী নিয়ে শাসক-বিরোধী দড়ি টানাটানি! এবার উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী নিয়েও দোলাচল কিছু কম নয়।
রাজনৈতিক মহল বলছে, শনিবার উপরাষ্ট্রপতি পদে বাংলার রাজ্যপালের নাম ঘোষণা করে “মাস্টার স্ট্রোক” দিয়েছে গেরুয়া শিবির।
রবিবাসরীয় মধ্যাহ্নে তা যেন সত্যিই ফলে গেল। কারণ বিরোধী জোটের উপরাষ্ট্রপতি কে, সেই বৈঠকের থাকছে না তৃণমূল কংগ্রেস (AITC)।


রবিবার বিকেলে দিল্লিতে বিরোধী জোটের উপরাষ্ট্রপতি পদের প্রার্থী ঠিক করতে বৈঠকে বসছে বিজেপি (BJP) বিরোধী দলগুলি। বৈঠক হবে এনসিপি (NCP) নেতা শরদ পাওয়ারের বাড়িতে। তৃণমূল সূত্রে খবর, সেই বৈঠকে যোগ দেবে না তারা। কারণ হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে, আগামী ২১শে জুলাই দলের শহিদ দিবসের কর্মসূচি রয়েছে।

সেই সমাবেশের পর বিকেলে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) কালীঘাটের বাড়িতে দলের সাংসদদের নিয়ে বৈঠক। সেই বৈঠকে সোমবার থেকে শুরু হওয়া সংসদের বাদল অধিবেশনে বিরোধী দল হিসেবে তৃণমূলের কী ভূমিকা হবে, সেই রণকৌশল ঠিক করা হবে। একই সঙ্গে ঠিক করা হবে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বাংলার শাসক দলের অবস্থান।


ইতিমধ্যেই, তৃণমূল সংসদীয় দলের পক্ষ থেকে শরদ পাওয়ারের কাছে দলের বার্তা পাঠানোও হয়েছে।
এদিকে বাংলার রাজনৈতিক মহল বলছে প্রথমত, জগদীপ ধনখড়ের (Jagdeep Dhankhar) নাম ঘোষণা হওয়ার পর এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনও বিবৃতি দেয়নি তৃণমূল কংগ্রেস। দ্বিতীয়ত, উপরাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থীর নাম ঠিক করতে বিরোধী জোটের বৈঠকে উপস্থিত থাকতে না পারার কথাও ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল।
ফলে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে, উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বাংলার রাজ্যপালকে প্রার্থী করেছে বিজেপি, তাই কি বুঝেশুনে পা ফেলতে চাইছে তৃণমূল?

এদিকে পশ্চিমবঙ্গের পরবর্তী রাজ্যপাল কে? জল্পনা তুঙ্গে। শনিবার একটি মহল থেকে হাওয়ায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়, শিশির অধিকারীর নাম। যিনি খাতায় কলমে তৃণমূল সাংসদ হলেও বহুদিন ধরেই বিজেপি ঘনিষ্ঠ। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) বাবা।
তবে গেরুয়া শিবিরের অপর একটি মহল বলছে, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের পদের জন্য উত্তরপ্রদেশের শিয়া মুসলিম নেতা মুখতার আব্বাস নাকভির (Mukhtar Abbas Naqvi) পাল্লা বেশ ভারী। সম্প্রতি রাজ্যসভা এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রক থেকে পদত্যাগ করেছেন তিনি।


লোকসভা নির্বাচনের আগে ধনখড়কে সরিয়ে কেন্দ্র ইতিমধ্যেই তৃণমূল নেতৃত্ব কে ইতিবাচক বার্তা পাঠিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে, আগামী দিনে যে নতুন রাজ্যপাল আসবেন, তিনি কি সংঘাতের পথ ধরে রাখবেন না সমঝোতার পথে হাঁটবেন? নাকভি অটল বিহারী বাজপেয়ী মন্ত্রিসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহকর্মীও ছিলেন।
ফলে অনেকেই মনে করছেন, ধনখড় যেভাবে মুখ্যমন্ত্রী বা শাসক দলের সঙ্গে প্রকাশ্যে বিরোধিতা করতেন, সে পথে নাকভি হাঁটবেন না।
বিশ্লেষকদের মতে বঙ্গের রাজ্যপাল বদল আসলে ২০২৪ লোকসভা ভোটের অঙ্ক মেনেই হয়েছে। যে অঙ্কের একদিকে রয়েছে রাজস্থানের জাঠ সম্প্রদায়ের ২০ শতাংশ ভোট আর অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কম বেশি ২৭ শতাংশ ভোট।


জগদীপ ধনখড় জাঠ। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা ও রাজস্থানের মানুষ। সামনের বছর নভেম্বরে রাজস্থানের বিধানসভা নির্বাচন। ফলে অনেকেই মনে করছেন, মরু প্রদেশের ক্ষমতা দখলের জন্যই একদিকে যেমন ধনখড়কে উপরাষ্ট্রপতি করার সিদ্ধান্ত, অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গে একজন সংখ্যালঘু মুখকে রাজ্যপাল হিসেবে আনতে চাইছে বিজেপি।

আপডেট: উপ-রাষ্ট্রপতি পদে বিরোধীদের মনোনীত প্রার্থী হলেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেত্রী তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, মার্গারেট আলভা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *