আজ খবর ডেস্ক:
এক সপ্তাহের মধ্যে ফের রাজ্যে বিষ মদ খেয়ে মৃত্যুর ঘটনা। মঙ্গলবার রাতে হাওড়া (Howrah) মালি পাঁচঘড়া থানার অন্তর্গত গজানন বস্তি এলাকায় বিষ মদ খেয়ে এখনও পর্যন্ত ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আরও ৩ জন আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি হাওড়া জেলা হাসপাতালে।


মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে, আশঙ্কা স্থানীয়দের। ঘটনাস্থলে ব্যাপক উত্তেজনা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত ৪ দিনে অন্তত ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে বিষ মদ খেয়ে। প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও ফল হয়নি।


এদিন সকাল থেকে দফায় দফায় স্থানীয় মানুষ ও মৃতদের আত্মীয় পরিজনের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে হাওড়া পুলিশের।
বেআইনী মদের ঠেকে ও দুষ্কৃতীদের বস্তিতে ভাঙচুর করে আগুন ধরায় উত্তেজিত জনতা।
অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা করছে হাওড়ার পুলিশ।
উত্তেজনা যাতে অন্যত্র ছড়িয়ে পড়তে না পারে তার জন্য গজানন বস্তি ব্যারিকেট করে ঘিরে ফেলেছে পুলিশ। বন্ধ করা হয়েছে বেশ কিছু সংযোগকারী রাস্তা।

প্রসঙ্গত, চলতি মাসের ৮ তারিখে পূর্ব বর্ধমান জেলার খোদ বর্ধমান শহরের সর্বমণগলা পাড়ায় বিষ মদ খেয়ে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসাধীন ছিলেন আরও ১৮ জন। বর্ধমান শহরের লক্ষ্মীপুরমাঠ কলেজ মোড় এলাকার “তারা মা হোটেলে” মদ খাওয়ার পর থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়তে থাকেন অনেকে।
মৃতদের পরিবারের অভিযোগ, ওই হোটেলের মদে ভেজাল ছিল। তার ফলেই মৃত্যু ঘটেছে।
পুলিশ ওই হোটেল মালিকের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে। তার ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয় হোটেলের মালিক গণেশ পাসোয়ানকে। দেশি মদে ভেজাল মেশানোর কথা স্বীকার করেছিল গণেশ।

সমাজকর্মীদের একাংশের অভিযোগ, একের পর এক রাজ্যে বিষ মদ খেয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। সাময়িক কিছু ব্যবস্থা নিলেও দীর্ঘকালীন সমাধান হচ্ছে না। তাঁদের আরও অভিযোগ, বহু ক্ষেত্র দেখা যাচ্ছে এইসব ভেজাল মদের ঠেকের সঙ্গে যোগাযোগ থাকছে এক অংশের স্থানীয় পুলিশ কর্মীদের।


উদাহরণ হিসেবে তুলে আনা হচ্ছে কয়েকটি ঘটনা। যেমন, ১৯৯৮ সালে এই হাওড়া শহরেই বিষমদ কাণ্ডে প্রাণ গিয়েছিল ৮ জনের। অসুস্থ হয়ে সত্যবালা আইডি, হাওড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতাল, টিএল জয়সওয়াল হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন শতাধিক। লিলুয়া থানা এলাকার বিবেক নগরের ওই কাণ্ড রাজনৈতিক ভাবেও তোলপাড় ফেলে দিয়েছিল।
আবার ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে দক্ষিণ ২৪ পরগণার উস্তি-সহ আশেপাশের বিস্তীর্ণ এলাকায় বিষ মদ খেয়ে মৃত্যু হয় ১৭২ জনের। যা “সংগ্রামপুর বিষমদ কাণ্ড” হিসেবে পরিচিত। এই ঘটনায় মগরাহাট এবং উস্তি থানায় দু’টি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছিল। রাজ্য সরকার এই বিষমদ কাণ্ডের তদন্তের দায়িত্ব তুলে দেয় সিআইডির হাতে।

ফাইল ছবি

তদন্তে জানা যায়, যে চোলাই মদ খেয়ে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে সেই চোলাই মদ বানাত কুখ্যাত ডন নূর ইসলাম ওরফে ফকির ওরফে খোঁড়া বাদশা। সেই সময় নিহতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
সাধারণভাবে মনে করা হয় মদ তৈরি করার জন্য প্রথাগতভাবে যে ইথাইল অ্যালকোহল (Ethyl Alcohol) ব্যবহার করা উচিত তার বদলে কমদামী ও অপরিশোধিত স্পিরিট ব্যবহার করা হয়। ফলে মানুষের শরীরে বিষক্রিয়া হওয়ার প্রভূত সম্ভাবনা তৈরি হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *