আজ খবর ডেস্ক:
কালাজ্বর (kala azar) এখন বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গে আনুমানিক ১৬৫ মিলিয়ন মানুষকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।
গত কয়েক সপ্তাহে, বাংলার এগারোটি জেলায় কালাজ্বরের প্রায় ৬৫টি কেস রিপোর্ট করা হয়েছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের মতে, দার্জিলিং, মালদা, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর এবং কালিম্পং-এ কালাজ্বরের প্রকোপ বেশি। উপরন্তু, দক্ষিণবঙ্গেও কালাজ্বরের (black fever) ঘটনা রয়েছে।
কালাজ্বর রোগ ঠিক কী?
ভিসারাল লেশম্যানিয়াসিস (VL), যা কালাজ্বর বা ব্ল্যাক ফিভার নামেও পরিচিত, প্রোটোজোয়া পরজীবী দ্বারা সৃষ্ট একটি রোগ এবং এটি ৯টির বেশি স্যান্ডফ্লাই (sandfly) প্রজাতির দ্বারা সংক্রমিত হয়। এর প্রধান লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে অনিয়মিত জ্বর, ওজন হ্রাস, প্লীহা এবং যকৃতের বৃদ্ধি এবং রক্তশূন্যতা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে, কালাজ্বর মৃত্যুর সম্ভাবনা সহ শীর্ষ পরজীবী রোগগুলির মধ্যে একটি।
Visceral leishmaniasis, also known as kala-azar, is transmitted through the bites of infected female sandflies.
— World Health Organization (WHO) (@WHO) January 30, 2022
It causes irregular bouts of fever, substantial weight loss, swelling of the spleen and liver and anaemia. If untreated, fatality rate can be high. #BeatNCDs pic.twitter.com/HU9Xz53tg9
এর ঝুঁকির কারণগুলি কী কী?
লেশম্যানিয়া প্যারাসাইট, যা কালাজ্বর সৃষ্টি করে, আসলে সংক্রামিত স্ত্রী ফ্লেবোটোমিন স্যান্ডফ্লাইয়ের কামড়ের মাধ্যমে ছড়ায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, এর প্রধান ঝুঁকির কারণগুলির মধ্যে রয়েছে:
১) আর্থ-সামাজিক অবস্থা
দারিদ্র্য কালাজ্বরের ঝুঁকি বাড়াতে পারে কারণ খারাপ স্যানিটারি অবস্থা স্যান্ডফ্লাই প্রজনন বাড়িয়ে দিতে পারে। এই ধরনের বালিমাছি ভিড়ের জায়গায় আকৃষ্ট হয়।
২) অপুষ্টি
প্রোটিন, আয়রন, ভিটামিন এ এবং জিঙ্কের অভাবযুক্ত খাবার খাওয়া কালাজ্বরের ঝুঁকি বাড়ায়।
৩) জনসংখ্যার গতিশীলতা
এই রোগে আক্রান্ত অঞ্চলে যদি অ-প্রতিরোধী ব্যক্তিরা যায়, তাহলে রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
৪) জলবায়ু পরিবর্তন
লেশম্যানিয়াসিস জলবায়ু-সংবেদনশীল। এবং তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত এবং আর্দ্রতার পরিবর্তন এই রোগের বৃদ্ধিতে সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে এবং উন্নয়ন চক্রে সাহায্য করতে পারে।
প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ
WHO-এর মতে, “কালাজ্বর প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য হস্তক্ষেপের কৌশলগুলির সমন্বয় প্রয়োজন। এই সংক্রমণ একটি জটিল জৈবিক ব্যবস্থায় ঘটে যার মধ্যে মানব বা প্রাণীর হোস্ট, পরজীবী এবং স্যান্ডফ্লাই ভেক্টর জড়িত।”
কিভাবে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব:
১) দ্রুত রোগ নির্ণয় এবং কার্যকর প্রাথমিক চিকিৎসা
২) রোগের সংক্রমণ হ্রাস বা বাধা দিয়ে ভেক্টর নিয়ন্ত্রণকার্যকর
৩) রোগটির বিভিন্ন প্রাণী হোস্টের নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ
৪) সামাজিক সংহতি
এই মহামারী নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে, সবাইকে সঙ্গবদ্ধ হয়ে সতর্ক হতে হবে।