আজ খবর ডেস্ক:
মঙ্গলবার সকালেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে (Partha Chatterjee) কলকাতায় আনা হল।
তবে ভুবনেশ্বর থেকে ফেরার সময় আর মহার্ঘ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স নয়, সাধারণ বিমানে কাক ভোরেই শহরে ফিরলেন পার্থ।
মঙ্গলবার কাকভোরে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে কলকাতা ফিরিয়ে নিয়ে আসে ইডি। রীতিমত কড়া নিরাপত্তায় মোড়া ছিল বিমানবন্দর চত্বর। বাইরে বেরনোর গেটের সামনে ইডির ৪টি গাড়ি রাখা ছিল। বিশাল কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন ছিল।
আগামী ১০ দিন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রীর ঠিকানা ইডির (ED) পূর্বাঞ্চলীয় সদর দপ্তর সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সের ৬ তলা।
এদিকে এদিন বিমানবন্দর থেকে বেরোনোর সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তৃণমূল নেত্রীকেই কার্যত সমর্থন জানিয়েছেন পার্থ।

অন্যদিকে ইডি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা মুখার্জির নামে ১৪০ কোটির যৌথ সম্পত্তির (Joint Property) খোঁজ মিলেছে। দু’জনের সম্পর্ক অন্তত ১০বছরের, দাবি ইডির।
অর্পিতা মুখার্জির নামে থাকা বিভিন্ন ফ্ল্যাটে ও বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হল কালো ডায়েরি। কারা টাকা দিয়েছেন? কারা টাকা নিয়েছেন? এই ডায়েরিতেই রয়েছে কালো টাকার হদিশ।


সূত্রের খবর এই ডায়েরির সামনের পাতায় লেখা রয়েছে, ‘ডিপার্টমেন্ট অব স্কুল এডুকেশন অ্যান্ড হায়ার এডুকেশন, গভর্মেন্ট অব ওয়েস্ট বেঙ্গল”।
জানা যাচ্ছে এই ডায়েরিতেই উল্লেখ রয়েছে ৬টি ভুয়ো সংস্থার নাম। যার ডিরেক্টর ছিলেন খোদ অর্পিতা। এই ৬টি সংস্থাতেই বিনিয়োগ করেছেন অর্পিতা মুখার্জির আত্ময়ীরা।
মোট ৬ টি দপ্তরের ৩৭ টি ফাইল উদ্ধার করা হয়েছে অর্পিতার বাড়ি থেকে। বিভিন্ন দপ্তরের সরকারী মেমো ফাইল কী করে এক জন সাধারণ ব্যক্তির বাড়িতে এল, সেটা নিয়েও পৃথক মামলা করতে চলেছে ইডি।

সোমবার নজরুল মঞ্চে রাজ্য সরকারের একটি অনুষ্ঠান চলাকালীন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বলেন, “যদি দোষ প্রমাণ হয়, তাহলে যাবজ্জীবন হলেও আই ডোন্ট মাইন্ড”।
মঙ্গলবার বিমানবন্দরে সাংবাদিকরা পার্থকে এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে, তিনি সোজাসুজি বলেন, ‘‌ঠিক বলেছেন’‌। ‌
সোমবার নজরুল মঞ্চের অনুষ্ঠানে মমতা বলেন, ‘‌সত্যের বিচার হোক। যদি কেউ দোষী প্রমাণিত হয়, তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিলেও আই ডোন্ট মাইন্ড। যদি কেউ চোর হয়, ডাকাত হয়, তৃণমূল কংগ্রেস রেয়াত করে না। আমি নিজেদের ছেলেদের গ্রেফতার করিয়েছি। অন্যায় করলে আমি নিজের বিধায়ক, সাংসদ, মন্ত্রীদেরও রেয়াত করি না। যদি কেউ খারাপ কাজ করেন, বিচারে তাঁকে যতই চরম শাস্তি দিক না কেন, আমাদের কেউ এই বিষয়ে নাক গলাবে না। আমি জীবনে যা করিনি, তা আমি করব না।’”


তৃণমূল নেত্রীর এই মন্তব্যের উত্তর দিতে গিয়ে এদিন হুইল চেয়ারে বসে পার্থ’র মন্তব্য, ‘”ঠিক বলেছেন”। এরপর আর তাঁকে অপেক্ষারত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে দেননি ইডির আধিকারিকরা। তার পরেই পার্থকে নিয়ে সল্টলেক সিজিও কমপ্লেক্সে ঢুকে যায় ইডির গাড়ি।

রাজনৈতিক মহল মনে করছে, প্রথমে ইডি গ্রেপ্তার করার সময় বারবার চেষ্টা করেও তৃণমূল নেত্রীকে ফোনে না পাওয়া। দ্বিতীয়ত, দল তৈরি হওয়ার সময় থেকে দীর্ঘদিনের সহচর সম্পর্কে মমতার গতকালের বক্তব্য। তৃতীয়ত, কুনাল ঘোষের মত নেতা যেভাবে পার্থ চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে লাগাতার প্রতিক্রিয়া দিয়ে যাচ্ছেন। সব মিলিয়ে পার্থ বিলোক্ষণ বুঝতে পারছেন, দল সর্বতোভাবে পাশে থাকতে চাইছে না। ফলে এছাড়া অন্য কোনও উত্তর এই মুহূর্তে নেই পার্থ’র কাছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *