আজ খবর ডেস্ক:
এবার বেআইনি অর্থ লেনদেনের (PMLA Act) অভিযোগে রাজ্য বিধানসভার পিএসির (PAC) চেয়ারম্যান কৃষ্ণ কল্যাণীকে (Krishna Kalyani) নোটিস পাঠাল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)।
২০১৮ থেকে ২০২২ পর্যন্ত দু’টি টিভি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দেওয়া নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, ইডির তরফে গত ২৫শে জুলাই রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যানীর ব্যবসায়িক সংস্থা ‘কল্যাণী সলভেক্স প্রাইভেট লিমিটেডের’ রায়গঞ্জের ঠিকানায় পাঠানো হয়েছে ওই নোটিস। দু’টি টিভি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন সংক্রান্ত অর্থ লেনদেনের হিসাব চাওয়া হয়েছে ইডির তরফে।
চিঠিতে ইডির অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর পর্যায়ের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ২০০২ সালে বেআইনি অর্থ লেনদেন প্রতিরোধ আইনের ৫০ নম্বর ধারা অনুযায়ী এই নোটিস পাঠানো হয়েছে।
বিধায়ক ছাড়াও কৃষ্ণ কল্যাণীর আরেকটি পরিচয় রয়েছে আর তা হল তিনি একজন বড় ব্যবসায়ী। স্থানীয় স্তরে তাঁর টেলিভিশন চ্যানেল রয়েছে। তাছাড়া উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায় তাঁর নানাবিধ ব্যবসা রয়েছে।
যদিও বঙ্গ বিজেপির একাংশের অভিযোগ, মোটা অর্থের বিনিময়ে ২০২১ বিধানসভা ভোটে টিকিট পেয়েছিলেন তিনি। তাঁকে প্রার্থী করার পর আদি বিজেপির অনেকে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভও দেখিয়েছিলেন।
রায়গঞ্জ থেকে বিজেপির (BJP) টিকিটে জিতে যান কৃষ্ণ কল্যাণী। যদিও পরবর্তী সময়ে তৎকালীণ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।
গত মাসের ৩০ শে জুন তাঁকে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান করে তৃণমূল। সেই কৃষ্ণকে এবার নোটিস (Notice) পাঠাল ইডি।
প্রসঙ্গত, সে সময় তৃণমূল কংগ্রেসের “মহাসচিব” পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) হাত ধরে
দক্ষিণ কলকাতার এক বেসরকারি হোটেলে রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন।
অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে পিএসি থেকে মুকুল রায় (Mukul Roy) সরে যাওয়ায় চেয়ারম্যান মনোনীত করা হয় কল্যাণীকে।
ঘটনাচক্রে, তার পরেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ‘নোটিস পাঠানোর’ হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তাঁকে। ফলে কেন্দ্রীয় এজেন্সির তরফে নোটিস পাওয়ার পরে তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) অন্দরে নতুন গুঞ্জন, কৃষ্ণ কল্যাণীকে আইনি নোটিস পাঠানোর পেছনে “হাত” রয়েছে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari)।
এদিন ইডি নোটিস নিয়ে কৃষ্ণ কল্যাণী বলেন, “আরে সবাই আমায় ফোন করছে। ওরা আমার কাছে জানতে চেয়েছে আমি কত টাকার বিজ্ঞাপন দিয়েছি। আমি ওদের জানিয়েছি, আমার কোম্পানি কোনও বিজ্ঞাপন দেয়নি টেলিভিশন চ্যানেলে। টাকার লেনদেনও হয়নি।”
এর ফলে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে বিতর্ক দানা বাঁধতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)-সহ তৃণমূল নেতৃত্বের যুক্তি, “বিজেপিতে থাকলে ইডি, সিবিআইয়ের (CBI) ভয় থাকে না। কিন্তু অন্য দলে নেতা-নেত্রীদের বিরুদ্ধে সব সময়ই ‘সক্রিয়তা’ দেখায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি।” রায়গঞ্জের বিধায়ক ঈদের নোটিস পাওয়ার পরেই তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র কুনাল ঘোষ বলেন, শুভেন্দু অধিকারীর বাড়িতে তল্লাশি চালালেও প্রচুর হিসাব বহির্ভূত সম্পত্তি পাওয়া যাবে।