আজ খবর ডেস্ক:
স্কুলে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শূন্যপদের নিয়োগে কোনও বাধা নেই। কার্যত স্পষ্ট ভাষায় এ কথা জানিয়ে দিয়েছেন কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।


এর আগে স্কুলে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতরের প্রধান সচিবকে আদালত নির্দেশ দিয়েছিল। প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক এবং মাদ্রাসা স্কুলে কোথায় কত শূন্যপদ রয়েছে, তা হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে। যার শেষ দিন ছিল ২৯ শে জুলাই।
সেই মত শুক্রবার আদালতে ওই হলফনামা জমা দেওয়া হয়। দেখা যায়, মাধ্যমিকে ১৩,৮৪২টি শূন্যপদ রয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিকে রয়েছে ৫,৫২৭টি। মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে প্রধানশিক্ষকের জন্য ২,৩২৫টি শূন্যপদ রয়েছে। সব মিলিয়ে শূন্যপদের সংখ্যা ২১ হাজার ৬৯৪টি।
এই হিসেব দেখার পরেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া চালাতে কোনও বাধা নেই।

প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিককালে একাধিকবার দেখা দিয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলছেন, শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে আদালতে একাধিক মামলা চলার কারণে শূন্য পদে নিয়োগ করতে পারছে না রাজ্য সরকার।
এরপরেই স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে রাজ্যের কাছে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।


শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজ্য কোন পথে এগোচ্ছে, কবে হবে শূন্যপদ পূরণ, তা জানতে এবার স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করার কথাও বলেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
শুক্রবার সব তথ্য হাতে পাওয়ার পর তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এই শূন্যপদগুলিতে নিয়োগ শুরু করা যেতে পারে। সেই প্রক্রিয়ায় কোনও আইনি বাধা নেই।
শুধু তাই নয় এই প্রেক্ষিতে বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘সংবাদমাধ্যম এবং বিভিন্ন জায়গায় দেখা গিয়েছে, রাজ্যের কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তি বলছেন, আদালতের হস্তক্ষেপের কারণে কোনও নিয়োগ করা যাচ্ছে না। কেন আদালতকে নিয়োগে বাধা হিসাবে দেখানো হচ্ছে? রাজনীতিকে বিচারব্যবস্থার আঙিনায় টেনে আনবেন না। এই সব মন্তব্য আদালত সব সময় সহ্য না-ও করতে পারে। যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।’’

প্রাথমিক স্তরে কত শূন্যপদ রয়েছে? জানতে চেয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। রাজ্যের তরফে কমবেশি ৩,৯৩৬টি শূন্যপদ থাকার কথা জানানো হয় বলে খবর। সেই সঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয়, প্রাথমিকে শূন্যপদ তৈরির প্রক্রিয়া সেই অর্থে এখনও শুরু হয়নি।
এই তথ্য হাতে পাওয়ার পর স্কুল শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তাকে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় প্রশ্ন করেছিলেন, কেন ওই শূন্যপদে নিয়োগ করা হচ্ছে না? আগামী ১৭ই আগস্টের মধ্যে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে। ওই দিনই এই মামলার পরবর্তী শুনানি।

রাজ্য স্কুল শিক্ষা দপ্তরের আদালতে জমা দেওয়া নথি অনুযায়ী, একাদশ-দ্বাদশে শূন্যপদ-৫,৫২৭টি, নবম-দশমে শূন্যপদ- ১৩,৮৪২টি, উচ্চ প্রাথমিকে শূন্যপদ-১৪,৩৩৯ এবং প্রাথমিকে শূন্যপদ-৩,৯৩৬টি। এছাড়াও ২ হাজার ৩২৫ টি প্রধান শিক্ষকের পদ আছে।
এই তথ্য পাওয়ার পরেই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে আদালতের নির্দেশ, অবিলম্বে ৩ হাজার ৯৩৬ টি শূন্যপদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। নিয়োগের ক্ষেত্রে
১) বিজ্ঞাপন দিয়ে মেধাতালিকায় যারা আছেন তাদের র‍্যাঙ্ক এবং প্রাপ্য নম্বর প্রকাশ করে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
২) ভবিষ্যতে যদি কোনও শূন্যপদ সৃষ্টি হয় তাহলে নিয়োগের আগে তাঁদের প্রাপ্য নম্বর এবং মেধাতালিকায় তাঁদের রাঙ্কিং বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রকাশ করতে হবে।
৩) শিক্ষা দপ্তরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি হলফনামা দিয়ে জানাবেন কবে শূন্যপদে নিয়োগ করবেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *