আজ খবর ডেস্ক:
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) মস্তিষ্কপ্রসূত “হর ঘর তিরঙ্গা” (Har Ghar Tiranga) কর্মসূচি, উপকূলীয় অন্ধ্রপ্রদেশের পশ্চিম গোদাবরী জেলার একজন ক্ষুদ্র তাঁতি, আর সত্যনারায়ণকে (R. Satyanarayana) লাইমলাইটে নিয়ে এসেছে।

ওই ব্যক্তি, শুধুমাত্র লাল কেল্লার উপরে নিজের তৈরি পতাকা উত্তোলন দেখার একমাত্র ইচ্ছা নিয়ে ৬.৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বিশ্বের প্রথম সেলাইবিহীন জাতীয় পতাকা বুনেছেন। এর জন্য নিজের বাড়িও বিক্রি করতে হয়েছে তাঁকে।

সত্যনারায়ণ চার বছর ধরে কোনো সেলাই ছাড়াই এই বিরল ভারতের জাতীয় পতাকাটি বুনেছেন।

অন্ধ্রপ্রদেশের ভেমাভারম গ্রামের বাসিন্দা, সত্যনারায়ণ বলেছেন, “পতাকা বুনতে আমার খরচ হয়েছে ৬.৫ লক্ষ টাকা। আমি অনেকবার ব্যর্থ হয়েছি কারণ মাত্র একটি কাপড় দিয়ে পতাকা তৈরি করা খুব কঠিন, বিশেষ করে যখন অশোক চক্রের অংশটি। বেশ কয়েকবার আমি ব্যর্থ হয়েছি। এই কারণেই আমার চার বছর লেগেছে।”

সত্যনারায়ণ আরও বলেন, “প্রথমে আমি ভেবেছিলাম এটি একটি সহজ কাজ হবে এবং আমার বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হবে না। পরে, যখন আমি লাল কেল্লায় উত্তোলিত পতাকার প্রকৃত মাত্রা জানতে পেরেছিলাম, আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে এটি একটি সহজ কাজ হবে না।”

উল্লেখ্য, বর্তমানে নির্দিষ্ট রঙে রাঙিয়ে তিনটি কাপড় একত্রে সেলাই করে জাতীয় পতাকা তৈরির প্রচলন রয়েছে।

‘লিটল ইন্ডিয়ানস’ নামক একটি চলচ্চিত্র দেখে এই কৃতিত্ব অর্জনের অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন সত্যনারায়ণ। ২০১৬ সালে এই ছবিটি দেখেছিলেন তিনি এবং তারপর থেকে শুধুমাত্র একটি কাপড় দিয়েই পতাকা বোনার স্বপ্ন দেখেন এই তাঁতী।

পতাকা তৈরির আগে তিনি একটি শাড়ির দোকানে ডিজাইনার হিসেবে কাজ করতেন। একদিন তিনি ৮০টি শাড়ি নিয়ে বাইকে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনার সম্মুখীন হন। তার বাইক উল্টে রাস্তায় পড়ে যায়। শাড়িগুলো খোলা ড্রেনে পড়ে নষ্ট হয়ে যায়। প্রতিটি শাড়ির মূল্য ছিল ১৫,০০০ টাকা।

এই ঘটনার পর, সত্যনারায়ণের ২০ লাখ টাকা দেনা হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত, সে তার বাড়ি বিক্রি করে এবং কিছু বন্ধুর কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে নিজের স্বপ্নকে অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত নেয়।

সত্যনারায়ণের লাল কেল্লায় তেরঙ্গা উত্তোলন দেখার স্বপ্ন এখনও পূরণ হয়নি, তবে তিনি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *