আজ খবর ডেস্ক:

আপডেট: মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিলেন নীতিশ কুমার। ভেঙে দিলেন সরকার। সেই সঙ্গে রাজ্যপালকে জানিয়ে এলেন, নতুন সরকার গড়তে প্রস্তুত তিনি। অর্থাৎ, ফের বিহারে লালু-নীতীশ জোট সরকার। কথা হল কংগ্রেস ও বামেদের সঙ্গে। লালু প্রসাদ যাদবের বাড়ীতে গেলেন নীতীশ কুমার।
প্রায় পৌনে দুই দশক বিজেপির সঙ্গে ঘর করেও নীতিশকে বাগে আনতে ব্যর্থ বিজেপি।

বিহারে (Bihar) এনডিএ (NDA) সরকারের পতন কার্যত সময়ের অপেক্ষা মাত্র। ইস্তফা দিয়ে ফের নতুন মন্ত্রিসভা নিয়ে ফিরে আসবেন নীতিশ কুমার (Nitish Kumar)। এমনটাই চর্চা চলছে দেশ জুড়ে।


সম্ভবত আজই আরজেডি (RJD), কংগ্রেস (Congress), বামপন্থী (Left Front) বিধায়কদের সমর্থনে নীতিশের নেতৃত্বে নতুন সরকার গঠন। এমন জল্পনা ও রয়েছে, নতুন মন্ত্রিসভার উপ মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন লালু পুত্র তেজস্বী যাদব (Tejashwi Yadav)।

এহেন পরিস্থিতির মধ্যে জোটের ভাঙন যে অনিবার্য, তা বলাই বাহুল্য। সোমবারই নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর (Sonia Gandhi) সঙ্গে কথা বলেন নীতীশ। তার পরেই, মঙ্গলবার কংগ্রেস, সিপিআই এবং আরজেডি ও তাদের পরিষদীয় দলের বৈঠক ডেকে দিয়েছে।


বিহারের একাধিক সংবাদমাধ্যমের দাবি, বেশ কয়েক জন বিজেপি (BJP) বিধায়ক দল ছেড়ে নীতীশের শিবিরে ভিড়তে পারেন। এই দাবি সত্যি হলে, ইদানিং কালের মধ্যে রাজনৈতিকভাবে যথেষ্ট বিপাকে পড়বে কেন্দ্রের শাসক দল।

এদিকে যাবতীয় পুরনো তিক্ততা ভুলে আরেকবার জেডিইউ-র (JDU) হাত ধরতে রাজি আরজেডি ও কংগ্রেস। ২০২০ সালের বিধানসভা ভোটের ফলে দলের বিপুল সংখ্যক আসন হারিয়ে সংখ্যার বিচারে তিন নম্বরে নেমেছে নীতীশের দল।
বর্তমানে বিহার বিধানসভায় সবচেয়ে বড় দল লালু প্রসাদের আরজেডি। যার নেতা তেজস্বী যাদব। আসন সংখ্যার হিসেবে লালু-নীতীশ ও কংগ্রেস একজোট হলে অনায়াসেই গড়া যাবে সরকার।
২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের আগে হিন্দি বলয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই রাজ্যে ক্ষমতা থেকে সরতে হবে বিজেপিকে। যা গেরুয়া শিবিরের কাছে নিঃসন্দেহে বড় ধাক্কা।

২০২০ বিধানসভা নির্বাচনে বিহারে ২৪৩ আসনের মধ্যে একক দল হিসাবে সবচেয়ে বেশি আসনে জিতেছিল লালুপ্রসাদ যাদবের আরজেডি। ৭৫টি সিটে জয়ী হয় তারা। বিজেপি জেতে ৭৪টি আসনে। তিন নম্বর হিসাবে নীতীশ কুমারের জেডিইউ পায় ৪৩টি আসন। কংগ্রেসের দখলে রয়েছে ১৯টি আসন।
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার অর্থাৎ আজই লালু-পুত্র তেজস্বী যাদবকে সঙ্গে নিয়ে রাজভবনে যাবেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার।


বিজেপির সঙ্গে নীতীশ কুমারের জেডিইউয়ের সম্পর্কের ওঠানামা নতুন নয়। এর আগে ২০১৫ সালেও বিজেপির সঙ্গ ছেড়ে লালুপ্রসাদ যাদবের আরজেডির সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছিল জেডিইউ। সেবার লালুর দলের আসন বেশি থাকলেও ‘পুরনো বন্ধু’ নীতীশকে মুখ্যমন্ত্রিত্ব দিয়েছিলেন লালু। সঙ্গে মন্ত্রী হিসেবে রেখেছিলেন নিজের দুই ছেলে তেজস্বী ও তেজপ্রতাপকে। কিন্তু সেই সরকার বেশি দিন থাকে নি। আড়াই বছরের মাথায় ফের বিজেপির হাত ধরেন নীতীশ। মুখ্যমন্ত্রীও হন। তখনই নীতীশকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলেছিলেন আরজেডি নেতারা।

পাটনা সূত্র খবর, এদিন একদিকে যেমন নীতিশ কুমারের রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার কথা রয়েছে, অন্যদিকে বিজেপি ও বিশেষ বৈঠক ডেকেছে। বিকেলের মধ্যেই সাংবাদিক সম্মেলন করার কথা রয়েছে বিজেপির। পাল্টা নীতিশ জানাবেন তাঁর আগামী রণকৌশলের বিষয়।
প্রসঙ্গত, গত বেশ কয়েকদিন ধরেই বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক তিক্ত হচ্ছিল নীতিশের। সাম্প্রতিক নীতি আয়োগের বৈঠকেও যান নি তিনি। বরং প্রায় সেই সময়ে দিল্লিতে গিয়ে দেখা করেছিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *