আজ খবর ডেস্ক:
লাভদায়ক সংস্থার (Office of Profit) সঙ্গে যুক্ত থাকার মামলায় ঝাড়খণ্ডের (Jharkhand) মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের (Hemant Soren) বিধায়ক পদ খারিজ করে দিল নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। রাজ্যপাল রমেশ ব্যাসকে গতকালই নির্বাচন কমিশন সিল করা খামে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছিল। সূত্রের খবর, রাজ্যপাল কমিশনের এদিন সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়ে দিয়েছেন।


ঝাড়খণ্ডের রাজনৈতিক আলোড়নের মধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারকে কটাক্ষ করলেন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন।
শুক্রবার সকালে ইউপিএ (UPA) বিধায়কদের বৈঠকে যোগ দেওয়ার পরে হেমন্ত সোরেন বিকেলে নেতারহাটে পৌঁছন। যেখানে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ছাড়াও সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে কারও নাম না করে তিনি কেন্দ্রের বিজেপি (BJP) নেতৃত্বাধীন এনডিএ (NDA) সরকারকে আক্রমণ করেন।

ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ কী?
বিজেপি তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে, তিনি রাঁচির অঙ্গরা ব্লকে নিজের নামে একটি পাথর-খনি লিজ নিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর লিজ নেন তিনি। জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুসারে একজন জনপ্রতিনিধি এই ধরনের লাভদায়ক সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন না।

কল্পনা ও হেমন্ত সোরেন


এদিকে ইতিমধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে হেমন্ত সরে যাওয়ার পর নতুন মুখ্যমন্ত্রী কে? নির্বাচন কমিশন হেমন্ত সোরেনের বিধায়ক পদ খারিজের পাশাপাশি আপাতত নির্বাচনে লড়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। এই পরিস্থিতিতে হেমন্তর স্ত্রী কল্পনা মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসতে পারেন।
বিকল্প মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে সোরেন পরিবারের ঘনিষ্ঠ জেএমএম (JMM) নেতা জবা মাঝি ও চম্পাই সোরেনের নামও বিবেচনায় আছে।

এদিন রাতে হেমন্ত ফের বৈঠকে বসবেন জোট শরিক ও মন্ত্রীদের সঙ্গে। আজ অথবা কাল তাঁকে পদত্যাগ করতে হবে।
হেমন্ত সোরেন এদিন বলেন, “ইডি, সিবিআই, আইটি এবং অন্যান্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার মাধ্যমে পায়ে বেড়ি বাঁধার চেষ্টা করা হচ্ছে। নেতারহাট ফায়ারিং রেঞ্জে আসার কর্মসূচি আগেই ঘোষণা করা হলেও পৈশাচিক শক্তি বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু তাদের ভালো করে বোঝা উচিত আমি একজন আদিবাসীর সন্তান। ব্যবসায়ীর সন্তান নয়, যে ভয় পাব।”
প্রসঙ্গত কেন্দ্রের কাছে ঝাড়খন্ড সরকারের ১.৩৬ লক্ষ কোটি টাকা বকেয়া ছিল। হেমন্তর দলের অভিযোগ, কেন্দ্রের কাছে সেই বকেয়া চাওয়ার পরেই নানান মামলায় জড়িয়ে ফেলা হয়েছে, হেমন্ত সোরেনকে।
এদিন হেমন্ত আর ও বলেন, ঝাড়খণ্ড বেশিরভাগ সময় বিজেপি শাসিত ছিল। জেএমএম ক্ষমতায় আসার পর জানা যায় কেন্দ্রীয় সরকারী উদ্যোগের কাছে লক্ষ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। রাজ্যের উন্নয়ন করার জন্য যখন এই অর্থ চাওয়া হলে কেন্দ্রের তরফে মাত্র হাজার বারোশ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন এই রাজ্যের মানুষ খনিজ সম্পদ অনুসন্ধানের অধিকার দাবি করছে। তাই কেন্দ্রীয় সরকার তার সরকারি সংস্থাগুলিকে বিরোধীদের ভয় দেখানোর কাজে লাগাচ্ছে।

৮১ সদস্যের ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় জেএমএম-সহ শাসক জোটের বিধায়ত সংখ্যা ৫০। এরমধ্যে বড় শরিক জেএমএমের বিধায়ক ৩০ জন। ১৮ জন কংগ্রেসের। এছাড়া সিপিআই (এমএল) এবং এনসিপি-র ১জন করে বিধায়ক আছেন। ৩১ জন বিধায়ক রয়েছেন বিজেপি এবং তাদের সহযোগী দলের। সরকার গঠনের ম্যাজিক ফিগার ৪১।
বর্তমান সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে কোনও সমস্যা না থাকলেও ঝাড়খণ্ডের ৩ কংগ্রেস বিধায়ক দিন কয়েক আগেই বিপুল টাকা-সহ কলকাতায় গ্রেপ্তার হন। তখনই জানা যায়, বিজেপির থেকে মোটা টাকা নিয়েছেন ওই বিধায়করা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *