আজ খবর ডেস্ক:
যেন মধ্যযুগীয় মঙ্গলকাব্যের সফল সমাপন। তফাৎ শুধু একটাই। “বারোমাস্যা” নয়, আট বছর জেলবাসের পর অবশেষে জামিন পেলেন সিপিএম নেত্রী ফুল্লরা মন্ডল (Fullora Mondal)।


নেতাই (Netai) গণহত্যা মামলায় ধৃত এক মাত্র মহিলা অভিযুক্ত ফুল্লরা মণ্ডল শুক্রবার মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে ছাড়া পেলেন। জেলের বাইরে তাঁকে সংবর্ধনা দেয় সিপিআইএম (CPIM) পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা নেতৃত্ব।
এক সময় অবিভক্ত মেদিনীপুরের সিপিএমের জোনাল কমিটির সদস্য পরে জেলা পরিষদের সদস্য ছিলেন ফুল্লরা।

২০১১ সালের ৭ই জানুয়ারি লালগড়ের নেতাই গ্রামে দুষ্কৃতীদের ছোঁড়া গুলিতে মারা যান ৯জন গ্রামবাসী। জখম হন ২৮ জন। এঁরা প্রত্যেকেই পুলিশের বিরুদ্ধে মিছিলে নেমেছিলেন। অভিযোগ ওঠে, তৎকালীন স্থানীয় সিপিএম নেতা রথীন দণ্ডপাটের বাড়ি থেকে সিপিএম-আশ্রিত দুষ্কৃতীরা গুলি চালিয়েছিল।
প্রথমে এই মামলার তদন্ত করে সিআইডি (CID)। পরে হাই কোর্টের নির্দেশে ২০১৩ সালে নেতাই হত্যা মামলার তদন্তভার নেয় সিবিআই (CBI)। ২০১৪ সালে ২০ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেয় কেন্দ্রীয় এজেন্সি। যদিও সেই বিচারপর্ব এখনও শেষ হয়নি।

ওই ঘটনায় সিপিএমের তৎকালীন সিপিএম নেতা বিনপুর জোনাল সম্পাদক অনুজ পাণ্ডে-সহ ২০ জন সিপিএম নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হন। ফুল্লরা ছিলেন তাঁদের মধ্যে এক মাত্র মহিলা।
লালগড় থানার অন্তর্গত নেতাই গ্রামের বাসিন্দা ফুল্লরা থাকতেন মণ্ডলপাড়ায়। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০বি, ১৪৮, ১৪৯, ৩২৬, ৩০৭, ৩০২ এবং অস্ত্র আইনের ২৫/২৭ ধারায় মামলা রুজু হয়। তিনিই এক মাত্র মহিলা যাঁর নামে জোট বেঁধে অভিযোগ করেছিলেন নেতাইয়ের গ্রামবাসীরা।

চলতি বছরের ১৪ই মার্চ নেতাই মামলায় ফুল্লরার জামিনের বিরোধিতা করে কলকাতা হাই কোর্টে সওয়াল করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এর পর খারিজ হয় জামিন। পরে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং অভয় এস ওকার ডিভিশন বেঞ্চ ফুল্লরার জামিনের নির্দেশ দেয়।


এদিন সংশোধনাগার থেকে বেরিয়ে আসার পরেই ফুল্লরাকে নিয়ে এলাকায় মিছিল করেন সিপিএম কর্মী সমর্থকরা।
জেলের বাইরে দাঁড়িয়ে ফুল্লরা বলেন, ‘‘ছাড়া পেয়ে খুবই ভাল লাগছে। আদালতের নির্দেশ মেনে চলব। দল দায়িত্ব দিলে আবার দলের কাজে মনোযোগ দেব।’’


সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ বলেন, ‘‘মা মারা যাওয়ার সময় জামিন পাননি ফুল্লরা।
আজকে ফুল্লরা কথা বলার অবস্থায় নেই। আট বছরে একদিনও প্যারোল পাননি।”
প্রসঙ্গত রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর “কঙ্কাল কাণ্ডে” দীর্ঘদিন জেলে কাটাতে হয়েছিল সুশান্ত ঘোষকেও।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *