আজ খবর ডেস্ক:
বুধবার থেকে “ভারত জোড়ো যাত্রা” (Bharat Jodo Yatra) শুরু করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। মেগা যাত্রা শুরু করার আগে, তামিলনাড়ুর শ্রীপেরামবুদুরে (Sriperumbudur) প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর (Rajiv Gandhi) স্মৃতিসৌধে একটি প্রার্থনা সভায় অংশ নেন। সেখানেই বাবাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে নিজের কর্মসূচি শুরু করেন রাজীব পুত্র।


“ভারত জোড়ো যাত্রা”কে সাধারণ মানুষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যম হিসাবে ব্যাবহার করতে চান রাহুল। প্রায় দেড়শ দিন ব্যাপী এই কর্মসূচি ভারতীয় রাজনীতিতে একটি টার্নিং পয়েন্ট হবে, এমনটাই দাবি কংগ্রেসের (Congress)।
যাত্রা শুরু করেই রাহুল বলেছেন, “দেশ সব থেকে খারাপ আর্থিক সঙ্কটের মুখে। বেশ কয়েকজন বড় ব্যবসায়ী পুরো দেশকে নিয়ন্ত্রণ করছে।”


কেন্দ্রের বিজেপি (BJP) সরকারকে কটাক্ষ করে রাহুল বলেন, “আগে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি পুরো ভারতকে নিয়ন্ত্রণ করেছে। আর এই মুহূর্তে ৩-৪ টি কোম্পানি পুরো দেশকে নিয়ন্ত্রণ করছে। বিজেপি সরকার পরিকল্পিতভাবে আক্রমণ করছে কৃষক, শ্রমিক, ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ী শ্রেণীকে।”

রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে এই মুহূর্তে যথেষ্ট কোণঠাসা অবস্থায় রয়েছে সোনিয়া-রাহুলের দল।
ইতিমধ্যেই দলের সভাপতি নির্বাচন নিয়ে কার্যত একপ্রস্থ নাটক হয়ে গিয়েছে। দল ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন দীর্ঘদিনের সাংসদ গুলাম নবী আজাদ। কংগ্রেসের সেই রাহুল ব্রিগেড (Rahul Brigade) ও এখন আর সেভাবে সক্রিয় নয়। আগেই দল ছেড়েছেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। রাজস্থানে নিয়মিত টানাপোড়েন চলছে অশোক গেহালট এবং শচীন পাইলটের মধ্যে।


এই পরিস্থিতিতে ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেসকে প্রয়োজনীয় শক্তি জোগাবে এই পদযাত্রা, এমনটাই আশা কংগ্রেস নেতাদের।
কারণ, একের পর এক নির্বাচনী ব্যর্থতা, ইস্তফার ধাক্কা। ১৩৫ বছরের ডুবন্ত জাহাজকে পুনরুদ্ধারের চেষ্টাতেই মরীয়া কংগ্রেস।

৩৫৭০ কিলোমিটারের এই যাত্রার নেতৃত্ব দেবেন রাহুল গান্ধী। ১৫০ দিন ধরে এই পদযাত্রা কন্যাকুমারী থেকে শুরু হয়ে কাশ্মীর অবধি যাবে এই পদযাত্রা।


তামিলনাড়ুতে কংগ্রেসের জোটসঙ্গী ডিএমকে-র (DMK) প্রধান তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিনও ওই রাজ্যের কিছু অংশে এই পদযাত্রায় সামিল হবেন।


কোন কোন পথে এই যাত্রা?
তিরুবনন্তপুরম
কোচি
নীলাম্বুর
মাইসুরু
বেল্লারি
রায়চূড়
ভিকারাবাদ
নানদেদ
জলগাওঁ
ইন্দোর
কোটা
আলওয়ার
বুলন্দশহর
দিল্লি
আম্বালা
পাঠানকোট
জম্মু হয়ে শ্রীনগর
কংগ্রেসের ‘ভারত জোড়ো’ যাত্রা সারা দেশজুড়ে ঘুরবে। ওই যাত্রা ৩৭৫০ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরবে। ১২টা রাজ্য জুড়ে ঘুরবে কংগ্রেসের এই যাত্রা।
প্রসঙ্গত কানাইয়া কুমার (Kanhaiya Kumar) গোটা সফরে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে থাকছেন।

তবে এই দেড়শ দিন পথ হাটলেও রাতে রাহুল ঘুমোবেন বাতানুকুল কন্টেনারে (AC Container)। যা ইতিমধ্যেই নজর কেড়েছে আমজনতার। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন জনপদ ছুঁয়ে যাবে কংগ্রেসের এই যাত্রা। আর রাতে থাকার বন্দোবস্ত কন্টেনারে।


৬০টি কন্টেনার ভাড়া করা হয়েছে। রয়েছে শোয়ার জন্য বিছানা এবং শৌচাগার। প্রতিরাতে এই ৬০টি কন্টেনার একজায়গায় থাকবে। পাশাপাশি কন্টেনারে রাত্রিযাপন করবেন রাহুল-সহ অন্যান্য নেতারা।
বৃহস্পতিবার তামিলনাড়ুর অন্যপ্রান্তে কংগ্রেসের যাত্রায় যোগ দিয়েছেন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢড়া (Priyanka Gandhi Vadra)। বুধবার কর্মসূচি শুরুর পর কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi) তাঁর বিবৃতিতে বলেছেন, “ভারতের রাজনীতিতে ইতিহাস তৈরি করবে এই যাত্রা।”


কংগ্রেসের অন্দরেই বারবার পরিবার তন্ত্রের অভিযোগ উঠেছে। নেহেরু গান্ধী পরিবারের প্রতি আনুগত্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বহু সিনিয়র কংগ্রেস নেতা। আবারও কি সেই পরিবারের এই সদস্য রাহুলের হাত ধরে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে কংগ্রেস? নজর সেদিকে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *